চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

বিদেশফেরত মুনিরের ভাগ্যবদল মাছচাষে

মোহাম্মদ আলী

২৩ আগস্ট, ২০২২ | ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

ভাগ্য অন্বেষণে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। ফিরে আসেন দেশে। শুরু করেন নিজগ্রাম হাটহাজারীতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মৎস্য চাষ। এতেই সফল ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলির ঠাণ্ডাছড়ি এলাকার মো. সরওয়ার আলম মনির।প্রতি বছরই মাছ বিক্রি করে আয় করেন সোয়া কোটি টাকা।

ছোটকাল থেকেই সরওয়ার আলম মনিরের আয়-রোজগারের প্রবল আগ্রহ ছিল। তাই টাকা আয়ের আশায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় করেন বরবটি চাষ। কঠোর পরিশ্রমের ফলে তাতে কিছুটা সফলও হন। জীবনের প্রথম সবজি চাষে কিছুটা লাভও হয়। এরপর ধীরে ধীরে তিনি সবজি চাষ বৃদ্ধি ও পোল্ট্রি ব্যবসায় নেমে পড়েন। পাশাপাশি লেখাপড়াটাও চালিয়ে যেতে থাকেন। ২০০৭ সালে এইচএসসি পাসের পর নেমে পড়েন মৎস্য চাষে। কিন্তু শুরুতে ততটা লাভজনক ছিল না তার মৎস্য চাষ। এক পর্যায়ে বেশি আয়ের আশায় ২০১০ সালে পাড়ি জমান মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। কিন্তু সেখানেও তিনি তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। ৭/৮ মাস থাকার পর পুনরায় চলে আসেন দেশে।

এরপর নিজগ্রাম হাটহাজারী উপজেলার চৌধুরী হাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পশ্চিমে পাহাড়ি পাদদেশে ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলির ঠাণ্ডাছড়ি এলাকায় পারিবারিক জায়গায় নেমে পড়েন মৎস্য চাষে। সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে তোলেন বিশাল হ্যাচারি। এটির নাম দেন- ‘দুবাই পোল্ট্রি এন্ড ফিশ’।

প্রায় ২৫ একর জায়গায় বিশাল মৎস্য চাষের কর্মযজ্ঞে পুকুরের সংখ্যা ছোট-বড় ১৫টি। এসব পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, পাঙ্গাস, নাইলোটিকা, বাটা, কই, শিং ইত্যাদি মাছের চাষ করেন। নিজে ছাড়াও পুকুর পরিচর্য্যা ও খাদ্য দেওয়ার জন্য নিয়োগ করেন আরো ২০ জন শ্রমিক। তাতে ৬ মাস অন্তর পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় মাছ।

মৎস্য চাষ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মো. সরওয়ার আলম মনির দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আজকের এ জায়গায় আসতে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ভাগ্য অন্বেষনের জন্য বিদেশে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে ভাগ্যের চাকা ঘুড়াতে পারিনি। ৭/৮ মাস পর ফিরে আসি দেশে। নেমে পড়ি পারিবারিক ও লিজকৃত কিছু জায়গায় মৎস্য চাষে। শুরুতে ব্যবসার পূঁজি ছিল মাত্র পাঁচ লাখ টাকা। এরপর ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকি পুকুরের সংখ্যা। মাছে খাদ্য প্রদান ও নিয়মিত পরিচর্যা করে বাড়াতে থাকি মাছের উৎপাদন। তাতে প্রতি বছর বিক্রি করি প্রায় সোয়া কোটি টাকার মাছ’।

শুধু মৎস্য নয়, এ হ্যাচারিতে লেয়ার মুরগি, গরু মোটাতাজাকরণ, মাছের খাদ্য উৎপাদন, হরেক রকমের সবজি চাষ করা হয়, বলেন মো. সরওয়ার আলম মনির। তিনি বলেন, ‘মিঠা পানির কই ও শিং মাছেরও চাষ করা হয় এ হ্যাচারিতে। পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে মিঠা পানির অন্যান্য মাছের চাষও।’

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট