চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রকাশ্যে ভরাট চলছে সরকারবাড়ি পুকুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ আগস্ট, ২০২২ | ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে সমবায় সিঙ্গাপুর মার্কেটের পেছনে ভরাট করা হচ্ছে অর্ধশতাধিক বছরের পুরনো পুকুর। ‘সরকার বাড়ি পুকুর’ নামের ওই পুকুরটি ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি ভরাট করা হয়েছে। পুকুরের পাশেই রয়েছে আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের সমবায় সিঙ্গাপুর মার্কেট। চারপাশে রয়েছে বসতবাড়ি। পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, পুকুর ভরাটের বিষয়টি ইতিমধ্যেই তারা জেনেছেন।

আজ মঙ্গলবার তারা সরেজমিন দেখতে যাবেন। যারা পুকুর ভরাটে জড়িত, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে বলা হয়েছে, জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা আধা সরকারি এমনকি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর ভরাট করা যাবে না। প্রাকৃতিক জলাশয় আইন ২০০০ অনুযায়ী পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ভরাট করা বেআইনি। একই আইনে পুকুরের মতো কোনো প্রাকৃতিক জলাধারের শ্রেণী পরিবর্তন করা দ-নীয় অপরাধ। আইন অমান্য করলে কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান রয়েছে।

গতকাল সোমবার বিকেলে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, সমবায় সিঙ্গাপুর মার্কেটের পেছনে অবস্থিত ‘সরকারবাড়ি’ পুকুরটিতে মাটি ও বালি ফেলা হচ্ছে। পুকুরের অর্ধেক অংশ জুড়ে পলিথিন দিয়ে বাঁশের ঘেরা দেওয়া হয়েছে। পুকুরের সাথেই সংযোগ রয়েছে মহেষখালের। যার কারণে জোয়ারের সময় বেড়ে যায় পুকুরের পানি। গতকাল বিকেলেও জোয়ারের পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল ‘সরকারবাড়ি পুকুর’।
স্থানীয় লোকজন জানান, পুকুরের চারপাশে নিম্ন-আয়ের কয়েক শ লোক বাস করে। পুকুরটির এক অংশের মালিক আবদুর রহিম জিসানের পরিবার। মূলত তিনিই পুকুর ভরাট করছেন। জিসান হালিশহর থানা আওয়ামী লীগের আহবায়ক।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জিসান প্রথমে বলেন, আসলে আমি জানি না। এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। পরক্ষণে বলেন, আমরা পুকুর ভরাট করছি না। সামনে দোকান আছে। দেয়াল দেয়ার জন্য ওখানে কিছু মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এটা আগে থেকেই ভরাট করা আছে। এর বেশি কিছু বলতে অপরাগতা জানান তিনি।

পুকুরের একটি অংশের মালিক সাইফুল আলম বলেন, প্রায় ৪০ শতক জায়গার পুকুরটির অর্ধেক অংশ ভরাট করা হচ্ছে বালি দিয়ে। পুকুরের পাশেই সমবায় সিঙ্গাপুর মার্কেট। চারপাশে রয়েছে বসতবাড়ি। পাঁচ বছর আগে ওই এলাকায় একবার আগুন ধরেছিল। তখন ওই পুকুরের পানি দিয়ে আগুন নেভানো হয়েছিল। প্রকাশ্যে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে- এ বিষয়টি আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানিয়েছি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে আমরা গত শনিবার পুকুরটি দেখতে গিয়েছিলাম। তখন জোয়ার থাকায় ভালভাবে দেখতে পারিনি। গতকাল সোমবার জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান থাকায় আমরা যেতে পারিনি। আজ (মঙ্গলবার) আমরা ঘটনাস্থলে যাবো। পুকুর ভরাট করার প্রমাণ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মনির হোসেন।

পূর্বকোণ/মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট