চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

৯ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ১৫%

মরিয়ম জাহান মুন্নী

১২ আগস্ট, ২০২২ | ২:৩৫ অপরাহ্ণ

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নয় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে গড়ে ১৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গত আড়াই বছরে করোনা মহামারীর মধ্যে মানুষের সংসার খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। এরমধ্যে রাশিয়া আর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাজারের পণ্যমূল্যে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছিল। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির মধ্যে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া হয়ে যায়।

 

নগরীর বিভিন্ন বাজারে সরেজমিন ঘুরে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে তাৎক্ষণিকভাবে নয়টি বিভিন্ন পণ্যের দাম আরও এক দফা বেড়ে যায়। এই নয়টি পণ্যের মধ্যে রয়েছে, চাল, চিনি, আটা, ময়দা, মুরগি, ডিম, কাঁচামরিচ, টমেটো ও রসুন। পাশাপাশি বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ ও সবজি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে নতুন করে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। একই কারণে চলতি সপ্তাহে আরো কিছু পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দুই নম্বর গেট কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের চাল ব্যবসায়ী নাছির বলেন, তিন-চার দিনের মধ্যে ৫০ কেজি চালের বস্তা প্রতি ১০০-১৫০ টাকা দাম বেড়েছে। ৫০ কেজির জিরাশাইল বস্তা প্রতি ৩ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫৫০ টাকায়। দেশি বেতি ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনদিনের ব্যবধানে বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ১০০-১২০ টাকা। এছাড়া খুচরায় প্রতি কেজি জিরাশাইল ৬৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৭ টাকায়। দেশি বেতি ৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকায়, মিনিকেট ৬০ টাকা থেকে ৬৪ টাকায় ও মোটা জাতের নুরজাহার ব্র্যান্ডের ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৩ টাকায়।

চকবাজারের ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, গত কয়েক মাস ধরে চিনি ৭৪ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৩-৮৪ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে চিনিতে দাম বেড়েছে ৯-১০ টাকা। প্রতিকেজি আটা কোম্পানি ভেদে ৫৩ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ টাকায়, ময়দা ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে ৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটা কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা এবং ময়দা কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা।

চকবাজারের মা পোল্ট্রির মালিক জাহিদ বলেন, ব্রয়লার মুরগি কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০ টাকা দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। অন্যজাতের মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিম ডজন ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। ডিমের ডজন প্রতি দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা।
এছাড়া, রসুন ১১০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা ও টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। কাঁচামরিচ পাঁচদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ৬০ টাকা ও টমেটোতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারের ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, করোনার আগে আমাদের তিন জনের সংসারে ঘরভাড়া ছাড়া মাসিক খাবার, যাতায়াতসহ অন্যান্য খরচ নয়-দশ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে যেত। গত দু’বছরে যখন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ে তখন খরচ বেড়ে ১৬ হাজার ৪৪০ টাকা হয়। ঘরভাড়াসহ তিন সদস্যের পরিবারে আমাদের মাসিক খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ৪৪০ টাকা। কিন্তু গত সাতদিনে ঘরভাড়া ছাড়াই যাতায়াতসহ সংসার খরচ বেড়ে গেছে। এ মাসের হিসেবে আমাদের সংসার খরচ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার বেশি হবে ঘরভাড়া ছাড়াই।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট