চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ধান-চালের দাম বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৫ আগস্ট, ২০২২ | ১:০১ অপরাহ্ণ

গত তিন বছর ধরে আমন ও বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি সরকার। বাজারে ধান-চালের দাম বাড়তি থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। চলতি বোরো মৌসুমেও ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চালের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে।

 

চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমদ পূর্বকোণকে বলেন, ‘ধান-চালের দর বাড়তি থাকায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা রয়েছে। তারপরও খাদ্য গুদামে চাল দিয়ে সরকারকে সহায়তা করবে মিল মালিকেরা।’ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গত ২৩ জুলাই চট্টগ্রামে আসেন।

 

হালিশহরে সেন্ট্রাল স্টোরেজ ডিপোর (সিএসডি) কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। এতে খাদ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সরকারি খাদ্য গুদামে চুক্তি করেও যারা চাল সরবরাহ করেনি তাদের কমপক্ষে এক বছর শাস্তি পেতে হবে। প্রয়োজনে সরকার আবারো চুক্তি করবে। এরপরও যদি সরকারি গুদামে চাল না দেয় তাহলে ধান চালের ব্যবসা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।’ সরকারকে চাল দিয়ে সহযোগিতা করা মিল মালিকদের মূল্যায়ন করার আশ্বাস দেন খাদ্যমন্ত্রী। বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা বাজারে আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) ১৯শ টাকা দরে। আর সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকা দরে। কেজি হিসেবে আতপ চাল ৩৯ টাকা ও সিদ্ধ চাল ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকারও চাল কিনছে একই দরে।

 

চলতি বোরো মৌসুমে সরকার ধান-চালের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে। সিদ্ধ চাল কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, আতপ চাল ৩৯ টাকা। মিলারদের কাছ থেকে চাল কিনছে সরকার। বাজার দর ও খাদ্য গুদাম একই দরে চাল কেনায় সরকারি গুদামে চাল দিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে মিল মালিকেরা।

 

একাধিক মিল মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্বকোণকে বলেন, ‘আর্দ্রতা ও গুণগতমান মান বজায় রেখেই খাদ্য গুদামে চাল দিতে হয়। সরকারের গুদামে দেওয়া চালের দর বাজারে ৪০-৪২ টাকার কাছাকাছি দরে বিক্রি হচ্ছে। এরসঙ্গে রয়েছে গাড়িভাড়া, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ। লাভের চেয়ে লোকসান বেশি গুণতে হচ্ছে বিধায় মিলাররা সরকারকে চাল দিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। তারপরও লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে বেশির ভাগ মিলার সরকারকে চাল দিয়েছে।

 

খাদ্য বিভাগ বলছে, চাল সংগ্রহে সরকারের সঙ্গে মিলারদের চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে, বাজার থেকে ধান কিনে শুকিয়ে ও ছাঁটাই (মিলিং করে চালে পরিণত) করে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী চাল দিতে হবে।

 

খাদ্য বিভাগ জানায়, চলতি মাস (৩১ আগস্ট) পর্যন্ত ধান-চালের সংগ্রহ কর্মসূচি শেষ হচ্ছে। চট্টগ্রামে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮ হাজার ১১৪ টন। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত সংগ্রহ হয় দুই হাজার ৯৪৪ টন। আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে চার হাজার ৩৩৬ টন। সংগ্রহ হয় দুই হাজার ৯০২ টন। সিদ্ধ চালের ৬৭৬ টনের বিপরীতে সংগ্রহ হয় ৩৩৭ টন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আবদুল কাদের বলেন, ‘সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এখনো আশানুরূপ হয়নি।’

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট