চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অর্ধবছরে নিলাম থেকে আয় ৬০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ আগস্ট, ২০২২ | ৪:৪৮ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে অখালাসকৃত পণ্য নিলামে বিক্রি করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে আয় করেছে ৫৯ কোটি ৫৯ লাখ ৭৮ হাজার ৯৫১ টাকা। এই ৬ মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে ২৪টি। যা গত ২০২১ সালের পুরো বছরে অনুষ্ঠিত নিলামের সমান।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সাড়ে চার বছরে বন্দরে বাজেয়াপ্ত পণ্যের নিলাম হয়েছে ৯২টি। যার লট সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৫২৮ টি। ওই পণ্য নিলামে বিক্রি করে ৩৭৮ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার ৫১৯ টাকা আয় করে দেশের সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালে মোট ২০টি নিলামে ছিল ২ হাজার ২৪৫ লট পণ্য। ওই বছর নিলামের পণ্য বিক্রি করে আয় হয় ৬৭

কোটি ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ৭৯ টাকা। এরপর ২০১৯ সালে নিলাম সংখ্যা কম হলেও আয় হয় আগের তুলনায় বেশি। সেই বছর ১১ টি নিলামে ১ হাজার ৯৮৫ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়। যার মাধ্যমে আয় হয় ৭০ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬ টাকা। এরপর ২০২০ সালে করোনার মধ্যেও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে নিলাম হয় ১৩টি। যার ১ হাজার ৬৬২ লট পণ্য নিলামে তুলে আয় হয় ৬৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

পরের বছরেও করোনার মধ্যে ২০২১ সালে নিলাম হয়েছে ২৪টি। যেখানে পণ্যের লট সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮১৪ এবং ওই পণ্য নিলামে তুলে সে বছর আয় হয় ১১৫ কোটি ৬৪ লাখ ৬০ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে নিলামে পণ্য বিক্রি করে চট্টগ্রাম কাস্টমস আয় করে ৫৯ কোটি ৫৯ লাখ ৭৮ হাজার ৯৫১ টাকা। এই ৬ মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে ২৪টি। যা গত ২০২১ সালের পুরো বছরে অনুষ্ঠিত নিলামের সমান।

নিলামে রাজস্ব আয় প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, ‘২০১৯ সালের মাধ্যভাগে আমি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে জয়েন করার পর দেখি বন্দরের অকশন গোলায় অনেক পণ্য অগোছালো এবং ইনভেন্ট্রি ছাড়া পড়ে আছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে এবং আইসিডিগুলোতে অনেক পণ্যবাহী কনটেইনার নিলামহীন পড়ে রয়েছে। তখন থেকেই আমার একটি চ্যালেঞ্জ ছিল বন্দরের ভেতরের জায়গা খালি করতে দ্রুত নিলাম করে পণ্য বিক্রি করা। তখন থেকে সপ্তাহের অন্যান্য দিনের ন্যায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারেও কাস্টমসে বিভিন্ন শাখার ৩০/৩৫ জন কর্মকর্তাকে নিয়ে ৬ থেকে ৮টি গ্রুপে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিলামযোগ্য পণ্যের ইনভেন্ট্রি তৈরি করা হয়। যার ফলে প্রতিনিয়ত নিলামে লটের সংখ্যা বেড়েছে। নিলামে পণ্য বিক্রির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে রাজস্ব আয় বেশি হয়েছে। এতে বন্দরের অভ্যন্তরে পড়ে থাকা কনটেইনারের জায়গা মুক্ত হয়েছে। এর বাইরে বহু বছর পড়ে থাকা অকশন গোলাটিও খালি হচ্ছে’।

তিনি আরো বলেন, ‘বন্দরে বহু বিলাসবহুল গাড়ি পড়ে ছিল। যেগুলো বার বার নিলামে তুলেও আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। তবে কাস্টমসের প্রচেষ্টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনেক গাড়ির সিপি আনা হয়েছে। ফলে শেষ কার্নেট গাড়ির নিলামে ৩৪টি গাড়ি বিক্রি করা গেছে। এতো পরিমাণে কাজ কাস্টমসের ইতিহাসে হয়নি’।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কাজে সহায়তা করে সরকারি নিলামকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কে এম কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সাল থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কাজের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে আসছে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের জনবল সংকট রয়েছে। কিন্ত বন্দরের নিলাম কাজের পরিধি ব্যাপক। সে কাজে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কে এম কর্পোরেশন দীর্ঘদিন নিলাম কাজের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে আসছে। তাই কাস্টমসে নিলামে পণ্য বিক্রি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে তাদেরও সহযোগিতা রয়েছে।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট