চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ঠিকাদারকে বলির পাঁঠা বানিয়ে হিসাবরক্ষককে দায়মুক্তির চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ জুন, ২০২২ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

ভুয়া স্মারক নম্বরে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নামে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছাড়ের চেষ্টার ঘটনার দুই দিন পার হলেও কোন আইনি ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বরং ঘটনায় ‘অভিযুক্ত’ হিসাবরক্ষক ফোরকানকে দায়মুক্তি দিতে উল্টো ঠিকাদারকে ‘বলির পাঠা’ বানানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। যদিও অভিযোগের বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, ‘যেই দায়ী থাকবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে আলোচ্য বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর। কার্যালয়টির উপ-পরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্ল্যাহকে সভাপতি এবং সহকারী পরিচালক ডা. সুমন বড়–য়াকে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির সদস্য করা হয় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক ভবনে ভুয়া স্মারক নম্বর বসিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নামে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার একটি বিল ছাড়াতে গিয়ে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক শাখায় ধরা পড়ে হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ফোরকান। ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে হিসাব বিভাগ ফোরকানকে পাঁচলাইশ থানার পুলিশের হেফাজতে তুলে দিলেও পরবর্তীতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এসে নিজ হেফাজতে নেন। আর জালিয়াতির এ ঘটনায় একই দিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বাজেট-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব সুশীল কুমার পালের এক চিঠিতে জানা যায়, ভুয়া বিলটির সঙ্গে দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু কোন ধরণের আইনি ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি।
অন্যদিকে, ঘটনার বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের প্রধান ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তবে গুঞ্জন রয়েছে- শুধুমাত্র ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেই অভিযোগটি দাখিল করা হবে। তাতে অভিযোগ থাকা ফোরকানকে দায়মুক্তি দেয়া হবে। যদিও এ বিষয়ে কোন মন্তব্যই করতে রাজি হননি ফজলে রাব্বি।
ঘটনার দুই দিন পার হলেও কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতেই আমরা কোতোয়ালী থানায় গিয়েছি। থানা পুলিশ বিষয়টি দুদকের শিডিউলভুক্ত বলে দুদকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আমরা দুদকে যাবো।’
হিসাবরক্ষককে দায়মুক্ত করার চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘বিষয়টি আজ জানতে পারবেন। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না।’

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট