চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

স্লুইস গেটের সুফল নিয়ে শঙ্কা

১৩ জুন, ২০২২ | ১১:১১ পূর্বাহ্ণ

ইমরান বিন ছবুর

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে নির্মাণাধীন রয়েছে পাঁচটি স্লুইস গেট। এসব স্লুইস গেটের ভৌত কাজ শেষ। আগামী সপ্তাহের মধ্যে গেট লাগানোর কাজ শেষ হবে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে এসব স্লুইস গেট পরিচালনার জন্য এখনো পর্যন্ত জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে স্লুইস গেট নির্মাণের পর জনবলের অভাবে এর সুফল নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত ৩১ জানুয়ারি পাঁচটি স্লুইস গেটে মোট ২২ জন জনবল নিয়োগে সিডিএ বরাবর চিঠি দেন প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণাধীন রয়েছে পাঁচটি স্লুইস গেট। নগরীর মহেশ খাল, কলাবাগিচা, মরিয়ম বিবি, ফিরিঙ্গীবাজার ও টেকপাড়া খালে এসব স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। তবে স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে হলেও এখনো জনবল নিয়োগ না হওয়ায় এসব স্লুইস গেট কীভাবে পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে স্লুইস গেট নির্মাণের পরও শুধুমাত্র জনবলের অভাবে এর সুফল থেকে নগরবাসী বঞ্চিত হবার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অধীনে নির্মিত মহেশ খাল, কলাবাগিচা, মরিয়ম বিবি, ফিরিঙ্গীবাজার ও টেকপাড়া খালে স্লুইস গেটের কাজ নির্মাণাধীন রয়েছে। এসব স্লুইস গেটে জনবল নিয়োগের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বরাবর চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক। গত ৩১ জানুয়ারি জনবল নিয়োগের জন্য প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী এই চিঠি দেন। তবে এ চিঠি প্রতিউত্তরে এখনো কোন উত্তর পাননি প্রকল্প পরিচালক। অন্যদিকে, স্লুইস গেট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে জনবল নিয়োগের ৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে চিঠি দেয় সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, স্লুইস গেট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদে ২২ জন জনবল নিয়োগের জন্য সিডিএকে গত ৩১ জানুয়ারিতে চিঠি দিয়েছি। তবে এখনো পর্যন্ত আমরা সে চিঠির কোন উত্তর পায়নি। স্লুইস গেটের নির্মাণের ভৌত কাজ শেষ। বর্তমানে গেট লাগানোর কাজ চলছে। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। তবে স্লুইস গেট পরিচালনা বা সংরক্ষণের জন্য আমরা কোন জনবল পায়নি। স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যদি তা পরিচালনার জন্য কোন লোকবল না থাকে তাহলে তো এর সুফল মিলবে না।

জানতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল আলম বলেন, স্লুইস গেটে জনবল নিয়োগের জন্য সিডিএ থেকে আমাদের চিঠি দিয়েছে। তবে বর্তমান সিটি কর্পোরেশনের জনবল কাঠামো অনুযায়ী নতুন করে জনবল নিয়োগ দেয়ার সুযোগ নেই। তবে আমাদের বর্তমান যে জনবল রয়েছে, সে জনবল থেকে স্লুইস গেটে জনবল নিয়োগ করা হবে।

স্লুইস গেটে যে সব পদে জনবল নিয়োগ দেয়া হবে : ৩৪ ব্রিগেডের অধীনে নির্মিত নেভিগেশন লক, পাম্প হাউজ ও রেগুলেটরের জন্য ইনচার্জ বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেকানিক্যাল পদে একজন নিয়োগ দেয়া হবে। মহেশ রেগুলেটর কাম পাম্প হাউজ কাম নেভিগেশন লক এবং কুমার খাল রেগুলেটরের জন্য সিস্টেম অপারেটর পদে তিনজন। টেকনিশিয়ান পদে একজন, সিকিউরিটে গার্ড পদে তিনজন, ক্লিনার বা গ্রিসার পদে একজন নিয়োগ দেয়া হবে। ফিরিঙ্গী বাজার রেগুলেটর বা টেক পাড়া রেগুলেটর, কলা বাগিচা রেগুলেটর, মরিয়ম বিবি রেগুলেটরের জন্য অপারেটর কাম মেকানিক পদে একজন নিয়োগ দেয়া হবে। ফিরিঙ্গী বাজার রেগুলেটরের জন্য গার্ড কাম অপারেটর হেলপার পদে তিনজন, টেকপাড়া রেগুলেটর জন্য গার্ড কাম অপারেটর হেলপার পদে তিনজন, কলা বাগিচা খাল রেগুলেটরের জন্য গার্ড কাম অপারেটর হেলপার পদে তিনজন, মরিয়ম বিবি খাল রেগুলেটরের জন্য গার্ড কাম অপারেটর হেলপার পদে তিনজন।

এছাড়া, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশনের কনফারেন্স রুমে জলাবদ্ধতা নিরসন সংক্রান্ত অগ্রগতি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় রেগুলেটরসমূহের যথাযথ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলের তালিকা করার জন্য অনুরোধ করে সিটি কর্পোরেশন। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক একটি জনবলের তালিকা সিডিএ বরাবর প্রেরণ করে। এসব স্লুইস গেট রেগুলেটরসমূহের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিটি কর্পোরেশন নিয়োগকৃত জনবলকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। মোট ২২ জন জনবল নিয়োগের জন্য সিডিএকে চিঠি দিয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী।

পূর্বকোণ/এএস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট