চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আর্ট উইক চিটাগাং উদ্বোধনে সুফী মিজানুর রহমান

সবার মাঝে লুকিয়ে আছে প্রতিভা, তাকে খুঁজতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ আগস্ট, ২০১৯ | ২:১০ পূর্বাহ্ণ

আর্ট একটি পাওয়ার। যা সবার মধ্যে থাকে না। মানুষের মত এত মহীয়ান, শক্তিমান আর কোন সৃষ্টি এ বিশ্ব ভ্রমা-ে নেই। মানব সন্তানদের মধ্যে যে শক্তি লুকানো আছে তাকে জাগ্রত করে, জীবনের সব বাধাকে মোকাবিলা করে অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছার সুযোগই সত্যিকারের বিজয়। বাংলাদেশ আর্ট উইক চিটাগাং-১৯ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ সুফি মোহম্মদ মিজানুর রহমান এ কথা বলেন।
গতকাল বিকেল পাঁচটায় চারুকলা ইন্সটিটিউটে শিল্পী রশীদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারিতে দু’দিনের এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়েছে। পিএইচপি ফ্যামিলির পৃষ্টপোষকতায় ও বাংলাদেশ আর্ট উইক এর ফাউন্ডার নীহারিকা মমতাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পপতি ও পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ সুফি মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের চেয়ারম্যান এবং দৈনিক পূর্বকোণের প্রকাশক ও পরিচালনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের পরিচালক সায়লা শারমিন সাথী। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের বিখ্যাত নয়জন গুণী শিল্পী। অনুষ্ঠানে তাদের চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। এ নয়জন গুণী শিল্পীতে বাংলাদেশ আর্ট উইক নামকরণ করে ‘দ্যা পাওয়ার অফ নাইন’। তারা হলেন- র’নবী খ্যাত রফিকুন নবী, এ এম বি সালাউদ্দিন (রনি), মনিরুল ইসলাম, ফরিদা জামান, জামাল আহমেদ, কনক চাঁপা চাকমা, মোস্তফা খালিদ পলাশ, মোহাম্মদ ইকবাল ও তেজশ হালদার জোশ । র’নবী-রফিকুন নবী। এ নামের সাথে কমবেশী সকলের পরিচয়। মনিরুল ইসলাম দেশের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী। ২০১৯-এ

একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী জামাল আহমেদ। এবিএম সালাউদ্দিন রনি জন্মগতভাবে মুক ও বধির কিন্তু অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী। মুক ও বধিরত্ব তার বিকাশমান প্রতিভাকে রোধ করতে পারেনি। সাড়া জাগানো এমনি দেশের শীর্ষস্থানীয় ও সেরা শিল্পীদের উপস্থিতি এবং তাদের প্রদর্শিত শিল্পকর্ম অবাক করেছে চট্টগ্রামের দর্শকদের। এক কথায় বলা যায় এটি একটি ব্যাতিক্রমী সর্বব্যাপী আয়োজন। যেখানে দেশের প্রখ্যাত শিল্পীরা একসাথে তাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করছেন। বরেন্য এ শিল্পীরা দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন বহুবার।
প্রধান অতিথি বলেন, বিধাতা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে বিশেষ প্রতিভা লুকানো আছে। আজ যারা এখানে চিত্রশিল্পী হিসেবে তাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করছেন তারা তাদের লুকানো প্রতিভার সন্ধান পেয়েছেন। আর যারা পারছেন না তারা আসলে চেষ্টা করেনি। তাই তারা তাদের প্রতিভার খোঁজ পায়নি।
জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আর্ট একটি পাওয়ার। যা সবার মধ্যে থাকে না। এটি সাধনার ধন, তাই সাধনা করে রপ্ত করতে হয়। আর রং এমন একটি জিনিস যা মানুষের জীবনকে বদলে দেয়। রং ছাড়া জীবন কখনোই সুন্দর হয় না, সেটি জীবনও হতে পারে না। তাই প্রতিটি মানুষের জীবনে রঙের গুরুত্ব অনেক। বিশেষ করে এই চিত্র শিল্পীরাই আমাদের জীবনের রং তাদের তুলির আচলে ফুটিয়ে তেলেন। এছাড়াও চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন পর ভাল একটি আয়োজন হচ্ছে। এত বরেণ্য শিল্পীর সমন্নয় করা একটি কঠিন কাজ। এ প্রদর্শনির মাধ্যমে আমাদের শিল্পচর্চার বিকাশ হবে। তিনি এ আয়োজনের জন্য উদ্যেক্তাদের অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশ আর্ট উইক এর ফাউন্ডার নীহারিকা মমতাজ বলেন, আমরা তীব্রভাবে অনুভব করেছি এখানকার শিল্পসুলভ মানুষ শিল্পচর্চা ভুলতে বসেছে। এ জন্য বিখ্যাত শিল্পীদের দিয়ে ’বাংলাদেশ আট উইক’ এই প্রর্দশনীর আয়োজন করেছে। দেশের সেরা শিল্পীদের সান্যিধ্যে এসে আমাদের প্রজন্ম তাদের পরবতী চর্চা অব্যহত রাখবে। কো-ফাউন্ডার ও পিএইচপি পরিবারের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহসিন প্রতি বছর এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে জানিয়ে বলেন, এখান থেকে অর্জিত অর্থ অটিজম শিশুদের জন্য ব্যবহার করা হবে। পরবর্তী প্রদর্শনী হবে দুবাই ও দক্ষিণ কোরিয়াতে। সেখানে কেবল বাংলাদেশি শিল্পীরা তাদের চিত্রকর্মই প্রদর্শন করবেন। এতে একদিকে বাংলাদেশের শিল্পচর্চা বহির্বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে। অন্যদিকে আমাদের দেশের শিল্পীরা তাদের অবস্থান পর্যালোচনা করার সুযোগ পাবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট