চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চালের দামে বাড়তি চাপ

২৬ মে, ২০২২ | ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

বোরো ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর পর গোলায় উঠতে শুরু করেছে নতুন ধান। আসছে বাজারেও। এখনো ধান কাটা পুরোপুরি শেষ হয়নি। বোরোর এ ভরা মৌসুমে বেড়েছে চালের দাম।

ব্যবসায়ীরা জানান, বড় মিলার ও শিল্প গ্রুপগুলো অস্বাভাবিকভাবে চাল মজুত করায় এক সপ্তাহে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৩-৪শ টাকা বেড়েছে।

চালের পাইকারি মোকাম পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘বড় শিল্প গ্রুপগুলোর কোনো চাল মিল নেই। অথচ প্যাকেটজাত করে বেশি দামে চাল বিক্রি করে। এসব কোম্পানিগুলো সারা বছরের চাল মজুত করে ফেলে। এতে বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়। চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়’।

এদিকে, কয়েক মাস ধরে দেশে ভোগ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, এই চাপে মানুষের জীবনযাত্রায় নাভিশ্বাস ওঠেছে। এখন নতুন করে চাপ বেড়েছে চালের দাম। টান পড়েছে ভোক্তার পকেটে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের কষ্ট আরেক দফা বেড়েছে।

 

নগরীর বড় চালের পাইকারি মোকাম পাহাড়তলী বণিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. জাফর আলম পূর্বকোণকে বলেন, ‘সয়াবিন তেলের মতো চাল মজুত করে সংকট সৃষ্টি করা হয়। এখন মোকামে চাল নেই বলেই জবাব দেয়। বাড়তি দামেও চাল দিতে চায় না। চাল আমদানি উন্মুক্ত করা হলে মজুতদারিদের লাগাম টেনে ধরা যাবে’।

তিনি বলেন, ‘বড় মোকাম ও কোম্পানির গুদামে অভিযান পরিচালনা করলেই সয়াবিন তেলের মতো লুকিয়ে রাখা চাল বেরিয়ে আসবে।’

মিলার ও আড়তদাররা জানান, সরকার ধান-চাল সংকট কর্মসূচি শুরু করার পর চালের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের কাছে ধান-চাল বিক্রি করতে হচ্ছে মিলারদের। সরকার ধান-চালের দর ঘোষণার পর পরই বেড়ে গেছে চালের দাম।

চালের পাইকারি মোকাম ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে জিরাশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৩শ টাকা দরে। ঈদের পরবর্তী সপ্তাহে তা বিক্রি হয়েছিল ২৭-২৮শ টাকা দরে। নূরজাহান সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২২-২২৫০ টাকা দরে। তা বিক্রি হয়েছিল ২০০০ থেকে ২০৫০ টাকা দরে। মিনিকেট আতপ বিক্রি হচ্ছে ২৬শ টাকা দরে। তা বিক্রি হয়েছিল ২২শ টাকা দরে। মিনিকেট সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ টাকা দরে। তা বিক্রি হয়েছিল ২১৫০ টাকা দরে। মোটা আতপ বিক্রি হচ্ছে ১৯৫০-২০০০ টাকা দরে। আগে বিক্রি হয়েছে ১৮শ টাকা দরে। গুঁটিসিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ১৯৫০-২০০০ টাকায়। তা বিক্রি হয়েছিল ১৮শ টাকা দরে। মোটা সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ১৮শ টাকায়। তা বিক্রি হয়েছিল ১৬শ টাকা দরে।

আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের দাবি, বড় মিলার ও শিল্প গ্রুপ ধান-চাল মজুতের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। প্রতি মৌসুমে বাজার অস্থির করে তুলে এসব মিলার-শিল্প গ্রুপ। পরবর্তীতে বাজার অস্থির করে ইচ্ছেমতো চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। কৃষকের লাভ লুটেপুটে খাচ্ছেন এসব শিল্প মালিকেরা। সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বাজার দখল করে নিয়েছেন শিল্পপতিরা। আর পকেট কাটা পড়ছে ভোক্তাদের।

নগরীর চালের বড় পাইকারি মোকাম পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘বড় বড় শিল্প গ্রুপ ও মিলাররা প্রচুর পরিমাণে চাল মজুত করে চালের দাম বাড়িয়েছে। অথচ এখন চালের ভরা মৌসুম। দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট