জুয়ায় আসক্ত স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে প্রথমে বেঁধে ফেলেন গৃহবধূ সকুন তাজের হাত-পা। তারপর শুরু করেন বেধড়ক মারধর। ঘরের দরজা আটকে এ মারধর চলে অন্তত একঘণ্টা। মারধরের আঘাতে চিৎকার চেচামেচি করলে গৃহবধূ সকুন তাজের গলা টিপে ধরেন পাষণ্ড স্বামী সাইফুল। লোহার রড, গাছ দিয়ে মারধর চালিয়ে যায় শ্বশুর সলিমুল্লাহ ও শাশুড়ি সাবেকুন নাহার। মারধরের একপর্যায়ে জ্ঞান হারান সকুন।

শুক্রবার (২০ মে) বিকেলে নিজের ওপর চলা পাশবিক নির্যাতনের এ বর্ণনা দেন গৃহবধূ সকুন তাজ (২৩)। পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে শুয়ে কাতর গলায় দেখান শরীরের দগদগে আঘাত।

সকুন তাজ বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা আমাকে মেরে একটি কক্ষে আটকে রাখে। রাতে আমি কৌশলে শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে ডাক্তারের কাছে আসি। আমার বাপের বাড়িতে খবর পাঠাই। আমার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। ভাগ্য ভালো আমি বেঁচে ফিরেছি।
সকুন তাজ পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কাদের বলির পাড়া গ্রামের মুবিনুল হকের মেয়ে।

সকুন তাজের ভাই আব্দু রশিদ বলেন, রাজাখালী ইউনিয়নের বকশিয়া ঘোনা এলাকায় সলিমুল্লাহ ছেলে সাইফুল ইসলামের সাথে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আমার বোন সকুনের। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বোনের সুখের আশায় বিয়ের সময় গৃহস্থালি জিনিসের সাথে তার স্বামীর হাতে নগদ সত্তর হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছিলাম। তাদের সংসার কিছুদিন সুখের থাকলেও তা বেশিদিন টেকেনি। যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় আমার বোনের ওপর নির্যাতন চালাতো তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। তাছাড়া তার স্বামী সাইফুল ইসলাম জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। জুয়ার টাকার জন্য সে আমার বোনের ওপর যৌতুকের চাপ বাড়িয়ে দেয়।

এর জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমার বোনকে ঘরে আটকে রেখে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে স্বামী সাইফুল, শ্বশুর সলিমুল্লাহ ও শাশুড়ি সাবেকুন নাহার। পরে আমরা খবর পেয়ে তাকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেই। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্বকোণ/জাহেদ/মামুন/পারভেজ