চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

তপ্ত রোদে মেলেনি কাঙ্ক্ষিত ডিম

১৭ মে, ২০২২ | ৪:৫০ অপরাহ্ণ

মোহাম্মদ আলী 

এর আগে ২০১১ ও ২০১২ সালেও পরপর দুই বছর হালদা নদীতে তপ্ত রোদে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে। ৯ বছরের ব্যবধানে একই পরিবেশে গতকাল সোমবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টিসহ নদীতে উপযুক্ত পরিবেশ না থাকা সত্ত্বেও পূর্ণিমার প্রবল জোয়ারের কারণে হালদায় রোদের মধ্যে মা মাছ ডিম ছেড়ে দেয়। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত ডিম মেলেনি। তাতে হতাশ ডিম সংগ্রহকারীরা।

এ প্রসঙ্গে নদী বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া পূর্বকোণকে বলেন, ‘সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমায় প্রবল বর্ষণ আর মেঘের গর্জনের কোন এক মুহূর্তে হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) স্মরণাতীতকাল থেকে ডিম ছেড়ে আসছে। এ সময় নদীতে পাহাড়ি ঢল নামে। কিন্তু এবার তার ব্যত্যয় ঘটে। কোন ধরনের বৃষ্টিপাত ছাড়াই পূর্ণিমার অতিরিক্ত জোয়ারের কারণে সোমবার ভোর থেকে নদীতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। এর আগে ২০১১ ও ২০১২ সালেও তপ্ত রোদে নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে।’

ড. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, ‘এবার ৩১৫টি নৌকায় অন্তত ৬৫০ জন ডিমসংগ্রহকারী প্রায় তিন হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করে। তবে তপ্ত রোদের কারণে এবার আশানুরূপ ডিম মেলেনি। আশা করছি এ বছর আরো একবার ডিম দিতে পারে মা মাছ।’

ডিম আহরণকারীরা জানান, ভোরে ভাটার সময়ে মদুনাঘাট, রামদাশ মুন্সিহাট ও আমতোয়া এলাকায় ডিম পাওয়া গেছে। দুপুরে জোয়ারের সময়ে আজিমেরঘাট থেকে গড়দুয়ারা পর্যন্ত এলাকা থেকে ডিম আহরণ করা হয়।

ডিম আহরণের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে হাটহাজারীর গড়দুয়ারা নতুনহাট এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন সওদাগর পূর্বকোণকে বলেন, ‘ডিম দেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ ছিল না। রোদের মধ্যে মা মাছ ডিম দিয়েছে। তাই আশানুরূপ ডিম পাইনি। এবার আমার ৮ নৌকায় মাত্র ৮ বালতি ডিম পেয়েছি। এসব ডিম রেণু ফোটাতে আইডিএফ হ্যাচারিতে দিয়েছি। আশাকরছি আগামী অমাবস্যায় হালদাতে আবারো ডিম দিতে পারে মা মাছ।’

ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ) জোনাল ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘হালদা নদীতে আমরা পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে আইডিএফ। নদীর পাড়ে প্রতিষ্ঠিত আমাদের হ্যাচারিতে এবার ৭ আহরণকারী রেণু ফোটাতে প্রায় ৩৫০ কেজি ডিম নিয়ে এসেছে।’

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসার ফারহানা লাভলী পূর্বকোণকে বলেন, ‘হালদা থেকে সংগৃহীত ডিম নদীর পাড়ে প্রতিষ্ঠিত রাউজান ও হাটহাজারীর ৪টি সরকারি হ্যাচারিতে রেণু ফোটানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এবার পরিবেশ অনুকূল না থাকায় কাঙ্ক্ষিত ডিম মেলেনি। আশা করছি আগামী অমাবস্যায় পুনরায় ডিম দিবে মা মাছ।’

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট