চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চবির ডিন ও সাবেক প্রক্টরসহ ৪৭ জনকে দুদকে তলব

নিজস্ব সংবাদদাতা , চবি

২৯ জুলাই, ২০১৯ | ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৪৭ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২২ জুলাই দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায়।
দুদকের দেয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিধি বহির্ভূতভাবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে ১৪২ জনকে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সংযুক্ত তালিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য গ্রহণ এবং শ্রবণের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ রইল।”
দুদক কর্তৃক পাঠানো তালিকায় দেখা যায়, প্রথমেই নাম রয়েছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদের। এছাড়া তালিকায় আরো নাম রয়েছে তৎকালীন নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সাবেক প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী এবং সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদের। এতে আরো নাম রয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিউল ইসলাম, পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. রাশেদ উন নবী চৌধুরী, শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গোলাম কবির এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত হিসাব নিয়ামক ফরিদুল আলম। এছাড়াও তালিকায় নাম রয়েছে আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষকের। শুধু তাই নয় তৎকালীন সময়ে আবেদন না করে নিয়োগ পাওয়া এবং পদের বিজ্ঞাপন না দিয়ে ওই পদে নিয়োগ পাওয়া এমন আরো ৩৫ জনের নাম রয়েছে তালিকায়। এদের মধ্যে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পাওয়া কায়সার হামিদকেও তলব করেছে দুদক। এছাড়া একই বিভাগের উচ্চমান সহকারী পদে বাছাই তালিকায় নাম না সত্ত্বেও নিয়োগ দেয়া তিন্নী সুত্রধরকেও ডাকা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
তথ্য অনুসন্ধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তলবের বিষয়টি স্বীকার করে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন,“এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিষয়ে তদন্ত কাজ চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যা অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে গণমাধ্যমে আপাতত কোন মন্তব্য করা যাবে না বলেও জানান তিনি।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততার অজুহাতে তিনি ফোন কেটে দেন। এর আগে গত ২১ এপ্রিল “নিষেধাজ্ঞার মাঝে চলছে নিয়োগ” শিরোনামে দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি মিথ্যা প্রমাণ করতে প্রতিবেদককে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেয় তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর প্রশাসন। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়োগ ইস্যুতে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দুদক বিশ^বিদ্যালয়ে বেশ কয়েক দফা চিঠি দেয়। সর্বশেষ গত ২০ মে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে টেন্ডার ফরম বিক্রি, পছন্দের প্রার্থীকে কার্যাদেশ প্রদান, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তদন্ত করতে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ২৩ মে’র মধ্যে তথ্য প্রদান করতে বলা হলেও সময়মত তথ্য দিতে ব্যর্থ হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে দুদকের চিঠি পাওয়ার ১০ দিন পর দুদককে তথ্য দিতে ৩০ মে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট