হাটহাজারী সদরের চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী তুহিনকে (১৩) ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গ্রহণের উপর গতকাল রবিবার শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত মামলায় প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ ওরফে মুন্নার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানার জামিন বাতিল করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২। মামলার ধার্য তারিখে রবিবার হাজিরা দিতে এলে বাদি পক্ষের আপত্তি আমলে নিয়ে বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন মামলার আসামিদের জামিন বাতিল করেন। তিনি চার্জশিট গ্রহণ করে মামলাটি বিচারিক আদালতে প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে বাদিপক্ষের আইনজীবী মো. রিয়াদ উদ্দিন বলেন, ‘মামলার নিয়মিত ধার্য তারিখে চার্জশিটের উপর শুনানি হয়েছে। প্রধান আসামি মুন্না জেল হাজতে রয়েছে। আমরা অপর দুই আসামি মুন্নার বাবা-মার উচ্চ আদালত থেকে প্রাপ্ত জামিনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে বিজ্ঞ বিচারক জামিন বাতিল করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে মামলা বিচারিক আদালতে প্রেরণ করেন’।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাছনিম সুলতানা তুহিনকে পৌর এলাকার ফটিকা শাহজালাল পাড়া সালাম ম্যানশনের চতুর্থ তলার ভাড়া বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। আত্মরক্ষার্থে তুহিন চিৎকার দিলে মুন্না তার মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনার দুই দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মুন্না পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তুহিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মুন্না আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। এ ঘটনায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনসাধারণ মুন্না ও তার বাবা-মার সর্ব্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে হাটহাজারী সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার দীর্ঘ ৯ মাস ২৬ দিনের মাথায় গত ১০ জুলাই আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চার্জশিটে মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ ওরফে মুন্না এবং অপর দুই আসামি মুন্নার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে পুলিশ।