চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দু’দিনের মধ্যেই চালু হচ্ছে সরকারিভাবে পরীক্ষা

ডেঙ্গু পরীক্ষায় ইচ্ছেমত ফি হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা

ইমরান বিন ছবুর

২৮ জুলাই, ২০১৯ | ২:৩১ পূর্বাহ্ণ

‘ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো
ইচ্ছে করলে ৫’শ টাকার মধ্যে
পরীক্ষাগুলো করতে পারে’

‘সমস্যা হচ্ছে ৩০ থেকে
৪০ শতাংশ টাকা দিতে হয়
ডাক্তারদের কমিশন’

নগরীর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষার ফি নেয়া হচ্ছে ইচ্ছেমত। ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য প্রাথমিকভাবে এনএস-১ ও আইজিজি, আইজিএম পরীক্ষা করা হয়। এই দুটি পরীক্ষা করতে ল্যাবগুলোতে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে নেয়া হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। সঠিক তদারকির অভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ইচ্ছে মত ফি আদায় করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নির্ধারিত সেবার মূল্য তালিকা প্রকাশ্য (উন্মুক্ত) স্থানে টাঙানোর নির্দেশ রয়েছে। তবে গতকাল (শনিবার) নগরীর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পরীক্ষার মূল্য তালিকা টাঙাতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গু পরীক্ষার সুযোগ নেই। তবে দু’য়েক দিনের মধ্যে চমেক হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাবে বলে জানান চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ড. অশোক কুমার দত্ত। গতকাল নগরীর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, এনএস-১ ও আইজিজি, আইজিএম পরীক্ষার জন্য ১ হাজার ৬০০ শুরু করে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত চাওয়া হয়। এপিক হেলথ কেয়ারে নেয়া হচ্ছে ৩২০০ টাকা। যেখানে ডাক্তারের ৩০ শতাংশ কমিশন বাদ দিয়ে ফি আসে ২ হাজার ২০০ টাকা। একইভাবে পপুলার

ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেডে কমিশন বাদে ফি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকা। ল্যানসেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ফি হচ্ছে ২ হাজার ৫৫০ টাকা। সিএসসিআরে ১৫ শতাংশ কমিশন বাদ দিয়ে ২ হাজার ২৫০ টাকা এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৩০ শতাংশ কমিশন বাদ দিয়ে ১ হাজার ৬১০ টাকা । এসব পরীক্ষার ক্ষেত্রে খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, এনএস-১ এবং আইজিএম পরীক্ষার ক্ষেত্রে খুব অল্প খরচ পড়ে। তবুও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ইচ্ছে করলে ৫০০ টাকার মধ্যে পরীক্ষাগুলো করতে পারে। কিন্তু এখন যদি এই দুটি পরীক্ষার জন্য তারা রোগীদের কাছ থেকে ২/৩ হাজার টাকা আদায় করে তা মোটেও ঠিক হবে না। আর টেস্ট করার ক্ষেত্রে আরেকটা সমস্যা হচ্ছে ডাক্তারদের কমিশন। প্রতিটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ টাকা ডাক্তারদের দিয়ে দিতে হয়। এ কারণে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রোগীদের থেকে নির্ধারিত ফি এর চেয়ে বেশি টাকা আদায় করে।
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন বলেন, আমাদের ডায়ানস্টিক সেন্টারগুলো অল্প টাকায় টেকনেশিয়ান রাখে। যাদের কোন প্রায়োগিক জ্ঞান নেই। ডায়ানস্টিক সেন্টারগুলো চাইলে বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কাজে লাগাতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক জ্ঞান কাজে লাগাতে পারতো আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো ভালো টেকনেশিয়ান পেত। এতে ভুল রিপোর্ট দেয়ার আশংকা
কম থাকে।
উল্লেখ্য, গত বছর দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন প্যাথলজি পরীক্ষার ফি, সেবার মূল্য তালিকা প্রকাশ্য (উন্মুক্ত) স্থানে টাঙানোর নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপরও এসব নির্দেশ মানছে না ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট