চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বড় বড় গর্ত, বলীরহাট সড়ক দশ বছরেরও সংস্কার হয়নি

৬ নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ জুলাই, ২০১৯ | ২:১২ পূর্বাহ্ণ

ফানির্চার ব্যবসার প্রাণ কেন্দ্র বলিরহাট। এখানে তৈরি ফানির্চার বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে। দেশের অর্থনীতিতেও বিশেষ অবদান রাখছে এখানের ফানির্চার ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান পড়ে আছে অবহেলায়। যেখানে নগরীর সবগুলো সড়কের উন্নয়ন হয়েছে সেখানে বলিরহাটের এ সড়কে কোন কাজ হয়নি দীর্ঘ দশ বছরেও। এমনিতে এলাকটি নগরীর অন্যান্য এলাকার চেয়ে নিচু। তার উপর অনেক দিন সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কের মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আবার পাশেই কর্ণফুলী নদী হওয়ায় জোয়ারে পানির নিচে ডুবে যায় এ সড়কটি। বর্ষাকাল ছাড়া গ্রীষ্মকালেও জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে এটি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘ দশ বছরেরও বেশি সময় বলির হাট খালাসি পুকুরপাড় এলাকার প্রায় আধা কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তায় কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি। প্রতিদিনই এখানে পানি উঠে। আমাদের ব্যবসায় নানারকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তাছাড়া এলাকার প্রায় আশিভাগ বাসিন্দাই স্থানীয়। স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বাস এখানে। আবার সরকারি-বেসরকারি মিলে প্রায় আটটি প্রাথমিক, উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা আছে। এ বিদ্যালয় গুলোতে প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তারাও দৈনিক এমন নোংরা পানি ডিঙ্গিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। সড়কে পানি উঠার কারণে ফানির্চার দোকান ও এলাকার নিচু ঘরগুলোতে সবসময় পানি জমে থাকে। যার কারণে নানা রকম পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ। সবমিলিয়ে দুর্ভোগের অন্ত নেই এলাকার মানুষের।
মমতাজ ফানির্চারের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, সামান্য বৃষ্টি কিংবা জোয়ার আসলেই সড়কে পানি উঠে জমে থাকে। স্কুল, কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী ও চাকরিজীবীসহ এলাকার মানুষ এ নোংরা পানির মধ্যেই যাতায়াত করে। আবার আমরা যারা এখানে ব্যবসা করি তাদের আরো করুণ দশা। প্রতিদিনই আমাদের দোকানগুলোতে পানি উঠে। যার কারণে আমাদের দামি ফানির্চারগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শওকত আলী বলেন, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউউদ্দীন চৌধুরী দায়িত্বে থাকাকালে একবার এ সড়কটির কাজ করা হয়ে ছিল। সেটাও প্রায় দশবছর আগের কথা। এরমধ্যে আর কেউ আমাদের খালাসি পুকুরপাড় এলাকায় সড়ক সংস্কারের কাজ করেনি। এনিয়ে আমরা বেশ কয়েকবার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তিনি কোন রকম উদ্যোগই নেন নি। এখনো যদি সড়কটির সংস্কার কাজ করা না হয় তবে রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে। তাই এব্যাপারে আমরা মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি যেন শীঘ্রই এ এলাকার জনগণ ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বাকি আধা কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ করার ব্যবস্থা করেন। ফানির্চার ব্যবসায়ী মুজাফ্ফর বলেন, একেতো নিচু এলাকা তার উপরে নানারকম খানাখন্দে ভরা এ সড়কটি। ফার্নিচার নিতে আসলে ক্রেতারা রাস্তার এমন অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এতে আমাদের ব্যবসায় হুমকির মুখে পড়ছে।
এবিষয়ে ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম বলেন, নগরীর এ এলাকাটি অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনুন্নত। কিন্তু এটি চট্টগ্রামের ফানির্চার ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র । এখান থেকেই ফানির্চার শহরের বিভিন্ন স্থানে যায়। তাই জায়গাটি উন্নয়নের আওতায় আসা জরুরি। তবে একসাথে সব কাজ করা যায় না। এলাকাটির অন্য রাস্তাগুলোর কাজ শেষ হয়েছে মাত্র। বাকি রাস্তাটিও টেন্ডার হয়েছে। তবে বর্ষার কারণে এখন সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরুর কথা আছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট