চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

বিএনপি প্রার্থী ডিউক বিজয়ী

বাকলিয়ায় শান্তিপূর্ণ ভোট

ইমরান বিন ছবুর

২৬ জুলাই, ২০১৯ | ২:১৬ পূর্বাহ্ণ

অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে নগরীর ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে উপ-নির্বাচন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটকেন্দ্রের বাইরে কাউকে জটলা বা জড়ো হতে দেয়নি পুলিশ। ভোটাররা ভোট প্রয়োগ করে নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরেছেন।
এতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউক বিজয়ী হয়েছেন। মিষ্টি কুমড়া প্রতীকে ৩ হাজার ৫৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। ডিউক প্রয়াত কাউন্সিলর এ কে এম জাফরুল ইসলামের ছেলে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মো. মাসুদ করিম টিটু (রেডিও) পান ২ হাজার ১৭৯ ভোট।
রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইভিএমে ভোট প্রদানে অংশ নেওয়ায় ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ভোট পড়েছে ১৮. ৬৯ শতাংশ।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত ফলাফল তালিকায় দেখা যায়, মো. শহিদুল আলম (ঘুড়ি) পেয়েছেন ১ হাজার ৫৫৩ ভোট, মো. শফি (লাটিম) ১ হাজার ২৫১ ভোট, শেখ নায়েম উদ্দীন (ঠেলাগাড়ি) ৫৭৯ ভোট এবং শাহেদুল ইসলাম (টিফিন ক্যারিয়ার) ১৫৪ ভোট।
সরেজমিন দেখা যায়, ১৭টি ভোটকেন্দ্রের ১২৪টি কক্ষে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকেই বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটাররা দীর্ঘ লাইন ধরে ভোট দিতে দেখা যায়। ১২ টার পর থেকে ভোটারের উপস্থিতি কমে আসে। তবে দুপুরের পর বৃষ্টি বাগড়া দেয় ভোটকেন্দ্রে। বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর ভোটার উপস্থিতি আরও কমে আসে।
সকাল সোয়া ১২ টার সময় ১৭ নং সানরাইজ কেজি এন্ড হাই স্কুল ভোটকেন্দ্রের মহিলা বুথে ১৪ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৩১৫ জন। প্রিজাইডিং অফিসার সুবীর দাশ বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে ভোটার ছাড়া ভোটকেন্দ্রে বহিরাগতরা কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ পায়নি। তবে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম। দুপুরের পর ভোটার উপস্থিতি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সকাল ১১টায় ৪ নং টিচার ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আলমগীর চৌধুরী জানান, সুন্দরভাগে ভোটগ্রহণ চলছে। আটটি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৩২১ জন। সময় ৯টা থেকে ভোট উপস্থিতিও ভালো রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। কোন চাপ ছিল না। প্রার্থী সমর্থকেরাও কোন ধরনের চাপ বা প্রভাব কাটানোর সুযোগ পায়নি। ভোটাররা নিজ পছন্দনীয় প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। দুপুর ১২টার দিকে ৬৮ বছরের এক মহিলাকে কেন্দ্রে নিয়ে আসে ফাহিম নামের এক শিক্ষার্থী। ফাহিম জানান, দাদু প্রথমে ভোট দিতে চায়নি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের নিশ্চয়তা পাওয়ার পর ভোটকেন্দ্রে আসতে রাজি হন। দাদি নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে খুব খুশি।
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউক বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কোন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে কোন প্রার্থী প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নেজাম উদ্দিন জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে কোন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার সুযোগ ছিল না। কোথাও গোলযোগ হয়নি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবিও টহলে ছিল।
দেখা যায়, প্রতিটি কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল। ভোটকেন্দ্রের বাইরে কাউকে জড়ো হতে দেয়নি পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব-বিজিবির একাধিক টিম ভোটকেন্দ্রে টহলে ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে প্রশাসনের বিশেষ নজরদারি দেখা যায়।
১৭টি ভোটকেন্দ্রের ১২৪টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১২৪জন সহকারী প্রিজাইডিং এবং ২৪৮জন পোলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল পশ্চিম বাকলিয়ার ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে এম জাফরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট