চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের হাতেই সিমেন্ট খাতের নেতৃত্ব

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ | ১:০৫ অপরাহ্ণ

সুজিত সাহা

 

সিমেন্ট খাতে বাংলাদেশের করপোরেট যাত্রা চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের হাত ধরে। দেশভাগেরও আগে, ব্রিটিশ ভারতের বাংলাদেশে সিমেন্ট উৎপাদনের শুরু হয়েছিল ১৯৪১ সালে। সিলেটে প্রথম ‘ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেড’ নামে এটি কার্যক্রম শুরু করে। যদিও পূর্বে এর নাম ছিল আসাম বেঙ্গল সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। এই কারখানাটিই অবিভক্ত বাংলার সিমেন্টের চাহিদা পূরণ করতো। পরবর্তীতে দেশভাগের পর, দেশ স্বাধীন হওয়ারও পর সরকারি উদ্যোগে সিমেন্ট শিল্পের অগ্রযাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ কেমিক্যাল করপোরেশন (বিসিআইসি)। তবে সিমেন্ট শিল্পের আনুষ্ঠানিক বৃহৎ উদ্যোগ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই এগিয়েছে। চট্টগ্রামের কনফিডেন্স সিমেন্টসহ একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বপ্নটা আজ মহীরূহে পরিণত হয়েছে। সমৃদ্ধ করেছে নির্মাণখাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল সিমেন্টের বাজার। এই খাতেই চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের অসামান্য অবদান সিমেন্ট খাতে চট্টগ্রামের নেতৃত্ব ধরে রেখেছে।
গল্পটা এমন-মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ‘চিটাগং সিমেন্ট ক্লিঙ্কার এন্ড গ্রাইন্ডিং ফ্যাক্টরি লিমিটেড’ এ-অঞ্চলের দ্বিতীয় কারখানাটি চালু হয় চট্টগ্রামে। সরকারিভাবে বিসিআইসি কারখানাটি চালু করলেও পরবর্তীতে বেসরকারি খাতের চট্টগ্রামের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান এটি কিনে নেয়। যদিও খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি জার্মানভিত্তিক সিমেন্ট গ্রুপ হাইডেলবার্গের কাছে বিক্রি করে দেয়। এই প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রাম থেকে উৎপাদিত বর্তমান ব্র্যান্ড রুবি সিমেন্ট। পরবর্তী সময়ে ঢাকাস্থ কারখানা থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বখ্যাত স্ক্যান সিমেন্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করে সিমেন্ট প্রস্তুতকারক হিসাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট।
নব্বইয়ের দশকের পর বিশ্বব্যাপী করপোরেট পূঁজি বিস্তারের হাওয়া লেগেছিল বাংলাদেশেও। বিপুল চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে সীমিত উৎপাদনের কয়েকটি কারখানা দেশের সার্বিক চাহিদা মেটাতে পারছিল না। তখন ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া ও ভারত থেকে সিমেন্ট আমদানির মাধ্যমে দেশের চাহিদা মেটানো হতো। দেশের দ্রুত বর্ধণশীল অবকাঠামো খাতের চাহিদাকে সামনে এই খাতে নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসে চট্টগ্রামের কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ। সিমেন্টের মূল কাঁচামাল চুনাপাথরে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়ায় এই খাত বিনিয়োগ বিলম্বিত হয়েছিল। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে চট্টগ্রামের কিছু উৎসাহী উদ্যোক্তা বিনিয়োগের ঝুঁকি নেয় এবং এতে সফলও হয়। যা দেশের সিমেন্ট খাতে মূল ভিত বা ফাউন্ডেশন গড়ে দিয়েছে বলে মনে করেন বর্তমান উদ্যোক্তারাও। চট্টগ্রামের তরুণ প্রকৌশলী রেজাউল করিম, রূপম কিশোর বড়ুয়া, ইমরান করিমের হাত ধরে ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় কনফিডেন্স সিমেন্ট ফ্যাক্টরি। সারাদেশের শীর্ষ ১০টি সিমেন্ট উৎপাদনকারীদের তালিকায় কনফিডেন্স না থাকলেও এখনো চট্টগ্রামের শীর্ষ উৎপাদনকারী সিমেন্ট কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্ট।
কনফিডেন্সের পর আরও অনেক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে সিমেন্ট খাতে এগিয়ে আসে। এরমধ্যে রয়েছে হাবিব গ্রুপের ডায়মন্ড সিমেন্ট, কেএসআরএম গ্রুপের রয়েল সিমেন্ট, এনজিএস গ্রুপের এনজিএস সিমেন্ট, আরামিট গ্রুপের আরামিট সিমেন্ট, এসআলম গ্রুপের এস আলম সিমেন্ট, মোস্তফা হাকিম গ্রুপের তাজমহল ব্র্যান্ড সিমেন্ট। তবে চট্টগ্রামের আরও বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা চট্টগ্রামের বাইরে সিমেন্ট খাতে বিনিয়োগ করেছে। এরমধ্যে সেভেন রিংস সিমেন্ট সম্প্রতি চট্টগ্রামে তাদের কারখানা স্থাপন করেছে। কারখানা স্থাপন করেছে চট্টগ্রামভিত্তিক আরও একটি প্রতিষ্ঠান সিকম গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি প্রিমিয়ার ব্র্যান্ডের সিমেন্ট কারখানা চট্টগ্রামেও স্থাপন করে উৎপাদনে গেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামভিত্তিক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ গ্রুপ চট্টগ্রামের বাইরে কারখানা স্থাপন করে দেশের সিমেন্ট খাতে অবদান রাখছে। ক্রাউন সিমেন্ট ব্র্যান্ডটি দেশের পাশাপাশি বিশ্ববাজারেও সিমেন্ট রপ্তানি করে। চট্টগ্রামের আরেক শিল্প জায়ান্ট আবুল খায়ের গ্রুপ ২০০২ সালের দিকে সিমেন্ট শিল্পে বিনিয়োগ শুরু করে। বিনিয়োগে এসেই অল্প সময়ের মধ্যেই আবুল খায়ের গ্রুপের শাহ্ সিমেন্ট দেশের শীর্ষ সিমেন্ট উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। প্রায় দুই দশক ধরে শাহ্ সিমেন্ট দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিমেন্ট শিল্পে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে মুন্সিগঞ্জের স্থাপিত কারখানার মাধ্যমে। ২০০২ সালে সিমেন্ট শিল্পে যুক্ত হওয়া আবুল খায়ের গ্রুপ ২০১৮ সালে ডেনমার্কের এফএলস্মিথ প্রযুক্তিতে বিশ্বের একক বৃহত্তম ভার্টিক্যাল রোলার মিল (ভিআরএম) স্থাপন করে। এই প্রযুক্তির শাহ সিমেন্ট গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি পায়। বছরে অর্ধকোটি টন সিমেন্ট উৎপাদিত হয় এই কারখানায়। মূলত চট্টগ্রামের সিমেন্ট খাতের নেতৃত্বের অবস্থান ধরে রাখতে ভূমিকা রাখে শাহ্ সিমেন্ট।
আমদানি নির্ভর কাঁচামালের উপর ভিত্তি করে ভারী শিল্প স্থাপনে চট্টগ্রাম আদিকাল থেকেই শ্রেষ্ঠ জায়গা। মূলত বন্দর সুবিধার মাধ্যমে আমদানিকৃত কাঁচামাল সহজে খালাস, দ্রুত সময়ে রপ্তানিমুখী জাহাজে পণ্য উত্তোলন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নৌ-পথে কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য পরিবহন সহজতর হওয়ায় চট্টগ্রাম বিনিয়োগে একটি আদর্শ স্থান ছিল। এসব সুবিধার বিবেচনায় নব্বই পরবর্তী সময়ে একের পর এ সিমেন্ট খাতে বিনিয়োগ আসে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের হাত ধরে।
প্রথম উদ্যোগে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের অবদান থাকলেও পরবর্তীতে দেশব্যাপী বিস্তৃত বিপণন ব্যবস্থার সংকট ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে সিমেন্ট শিল্প। যে সুবিধার কারণে সিমেন্ট শিল্পের শুরুটা চট্টগ্রামে হয়েছিল সেই ভৌগলিক সুবিধাই একসময় সিমেন্ট বিপণনে প্রতিবন্ধকতা হিসাবে হাজির হয় চট্টগ্রামের সিমেন্ট খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য। কয়েক দশক আগেও বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের সিংগভাগই ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক। ফলে উৎপাদিত সিমেন্ট চট্টগ্রামের চাহিদা মিটিয়ে সীমিত পরিমাণ সড়ক পথে ঢাকা ও আশেপাশের অঞ্চল বিপণন হতো। তাছাড়া ঢাকাস্থ কোম্পানিগুলোর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সিমেন্ট বিপণনের সুযোগ ছিল। গত দুই দশকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়াও সারাদেশের নগর ও গ্রামাঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফলে শুধুমাত্র চট্টগ্রামের বাজারের উপর নির্ভর করে সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাছাড়া দেশের অপরাপর অঞ্চলের কোম্পানিগুলো দেশব্যাপী বিপণনের সুযোগ পাওয়ায় চট্টগ্রামের চেয়েও কম দরে সিমেন্ট বিক্রি করায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে চট্টগ্রামের উদ্যোক্তারা। নৌ-পথে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানি হলেও সিমেন্ট পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সড়ক পথের উপর নির্ভরশীল এখানকার উদ্যোক্তারা চট্টগ্রামের বাইরে বিনিয়োগের পথে হাঁটছে সাম্প্রতিক সময়ে।
চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের শিল্প পরিবার আবুল খায়ের গ্রুপ, জিপিএইচ গ্রুপ, সিকম গ্রুপ, সেভেন রিংস গ্রুপ চট্টগ্রামের বাইরে গিয়ে কারখানা স্থাপন করে দেশের সিমেন্ট খাতে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। এছাড়া চট্টগ্রামে কারখানা থাকা সত্ত্বেও হাইডেলবার্গ সিমেন্ট চট্টগ্রামের বাইরে গিয়ে স্ক্যান সিমেন্টের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠিত করেছে দেশে। কৌশলগত কারণে নিজ অঞ্চলের বাইরে গিয়ে কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে সিমেন্ট খাতে ব্যবসা করলেও সাম্প্রতিক সময়ে আবারও নীড়ে ফিরছে চট্টগ্রামের উদ্যোক্তারা। সাম্প্রতিক সময়ে সেভেন রিংস ও প্রিমিয়ার সিমেন্ট চট্টগ্রামের তাদের দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। মূলত গত এক দশকে চট্টগ্রাম অঞ্চল বিশেষ ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য অঞ্চলকে ঘিরে সরকারি-বেসরকারি বড় বিনিয়োগ চট্টগ্রামেও কারখানা স্থাপনে উৎসাহী করেছে এসব উদ্যোক্তাদের। চট্টগ্রামের কোম্পানিগুলো দেশব্যাপী সরবরাহ চেইন সামলাতে বেগ পায়, অন্যদিকে ঢাকাস্থ কোম্পানিগুলোও চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে সিমেন্ট সরবরাহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে কক্সবাজার, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রামসহ পার্বত্যাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিজেদের মার্কেট শেয়ার ধরে রাখতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে সিমেন্ট শিল্পের নতুন জোয়ার তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বিসিএমএ তথ্যমতে, দেশের সিমেন্টখাতের নেতৃত্ব চট্টগ্রাম থেকে শুরু হলেও চট্টগ্রাম সারাদেশে সিমেন্ট শিল্পের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। চট্টগ্রামের সিমেন্ট কারখানার মধ্যে এগিয়ে আছে রুবি সিমেন্ট যার উৎপাদন এবং ধারণ ক্ষমতা এক দশমিক ৫০ মিলিয়ন টন। এছাড়া ডায়মন্ড সিমেন্ট ১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন টন, কনফিডেন্স সিমেন্ট এক দশমিক ৫২ মিলিয়ন টন, রয়েল সিমেন্ট ১ দশমিক ০৭ মিলিয়ন টন, আরামিট সিমেন্ট দশমিক ৫১ মিলিয়ন টন। এছাড়া মোস্তফা হাকিম সিমেন্ট, এস আলম সিমেন্ট সীমিত পরিসরে তার উৎপাদন কার্যক্রম চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নযজ্ঞে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখানকার স্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের কারখানার সম্প্রসারণ, নতুন প্ল্যান্ট স্থাপনসহ নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
বাজার শেয়ারে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলো বর্তমানে নেতৃত্বে না থাকলেও দেশের শীর্ষ সিমেন্ট কোম্পানির তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক আবুল খায়ের গ্রুপের দখলে। শাহ্ সিমেন্ট ব্র্যান্ড দেশের সিমেন্ট বাজারের ১২ দশমিক ৯৬ শতাংশ দখল করে আছে। চতুর্থ অবস্থানে থাকা জিপিএইচ গ্রুপের ক্রাউন সিমেন্টের মার্কেট শেয়ার ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ, পঞ্চম অবস্থানে থাকা সেভেন রিংস সিমেন্টের শেয়ার ৭ দশমিক ২১ শতাংশ, ষষ্ঠ অবস্থানে সিকম গ্রুপের প্রিমিয়ার সিমেন্টের শেয়ার ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ, সপ্তম অবস্থানে থাকা হাইডেলবার্গ সিমেন্ট গ্রুপের স্ক্যান-রুবি সিমেন্টের শেয়ার ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ চট্টগ্রামভিত্তিক মালিকানায় থাকা চট্টগ্রামের বাইরে প্রতিষ্ঠিত সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর মোট মার্কেট শেয়ার ৩৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। সম্প্রতি চট্টগ্রামে চালু হতে যাওয়া প্রিমিয়ার ও সেভেন রিংস সিমেন্টের কারখানার উৎপাদন শুরু করছে। চট্টগ্রামের অন্যান্য কারখানাগুলো উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নতুন নতুন প্ল্যান্ট স্থাপনে কাজ শুরু করেছে। এই হিসাবে চট্টগ্রামে স্থাপিত ৮টি কারখানাগুলোর উৎপাদন ও বিপণন সক্ষমতাসহ যুক্ত করলে এখানকার উদ্যোক্তাদের সিমেন্ট খাতে সার্বিক অবদান সারাদেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ।
আগামীর বাংলাদেশে উন্নয়নের বড় ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারকে ঘিরে। সরকারের মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে অবকাঠমোগত উন্নয়নের হাব (জোন) হচ্ছে এই এলাকা। যার কারণে সিমেন্টখাতের বড় বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রামমুখী হচ্ছেন সম্প্রতি। দেশের চলমান মেগা প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্প, চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড, কালুরঘাট থেকে চাক্তাই সড়ক এবং বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, দোহাজারী সেতু এবং মাতামুহুরী সেতু, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী প্রকল্প এবং কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আগামী এক দশকে বিপুল পরিমাণ নির্মাণ কাঁচামালের চাহিদা সৃষ্টির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে চট্টগ্রামের নতুন নতুন উদ্যোক্তারাও এই খাতে বিনিয়োগে দৃষ্টি দিচ্ছে। আর এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইস্পাত ও কমোডিটি (ভোগ্যপণ্য) মতো সিমেন্ট খাতেও চট্টগ্রাম দেশের সব অঞ্চলের মধ্যে ঈর্ষণীয় স্থানে চলে যাবে।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট