চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে শীতলপুর অটোস্টিল মিলস

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ | ৮:৪৩ অপরাহ্ণ

মিটু বিভাস

 

গত তিন দশক ধরে দেশে ইস্পাত শিল্পে নতুন বিপ্লব শুরু হয়েছে। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ইস্পাত শিল্পে দেশীয় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলছে শীতলপুর স্টিল মিলস। শুরুতে দেশীয় পদ্ধতিতে রড উৎপাদন শুরু। এরপর পর্যায়ক্রমে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গেছে এসএএসএম। প্রায় এক যুগ আগে থেকে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পণ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করে আসছে তারা। শীতলপুর রি-রোলিং মিলস থেকে ধারাবাহিক রূপান্তরিত হয়ে এখন শীতলপুল অটো স্টিল মিলস (এসএএসএম) নামে পরিচিত এ প্রতিষ্ঠান।

ক্রেতাদের সর্বোচ্চ মানের পণ্যে পৌঁছে দিতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের পাঁচ পরিচালক। তবে করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর থেকে কাঁচামালের অভাব ও দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্য উৎপাদনে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সঠিক মূল্যে মানুষের কাছে সর্বোচ্চ গুণাগুন সম্পন্ন পণ্যে পৌঁছে দিতে তারা বদ্ধপরিকর।

আশির দশকের শেষ দিকে থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বেড়ে চলেছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে এ উন্নয়ন। বাড়ছে কলকারখানা, অফিস ও আবাসন নির্মাণ। যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ও বেড়েছে।  ফলে বেড়েছে নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা। আর টেকসই বিভিন্ন অবকাঠামো, ব্রিজ, কালভার্ট বা বহুতল ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে রড ও স্টিল।

এসব অবকাঠামোর অধিকাংশ তৈরিতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি রড ও স্টিল ব্যবহৃত হচ্ছে। নব্বই দশকের শুরু থেকে এ খাতে বিপ্লব শুরু হয়। বর্তমানে দেশে চারশ’র বেশি কারখানায় তৈরি হচ্ছে রড। এর মধ্যে ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে রড তৈরি করে থাকে। এদের মধ্যে অন্যতম শীতলপুর অটো স্টিল মিলস। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। শুরুতে দেশীয় রড উৎপাদন করলেও যুগের চাহিদার সাথে মিল রেখে ধীরে ধীরে স্টিল ও অটো স্টিল মিলে রূপান্তরিত হয়েছে। পণ্যের মান ও উৎপাদনে বর্তমানে দেশীয় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে সমান তালে এগিয়ে চলছে এ প্রতিষ্ঠান।

কোনো ভবন, ব্রিজ, কালভার্ট বা অন্যকোন অবকাঠামোগত স্থাপনা নির্মাণের মূল কাঠামোই হচ্ছে রড। মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে নির্মিত হচ্ছে একটি ভবন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নির্মিত ব্রিজ কালভার্টগুলোতে ব্যবহার করতে হয় টেকসই ও মানসম্পন্ন মালামাল। এছাড়া ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঝুঁকির পরিমাণ থাকে বেশি। তাই এসব অবকাঠামো নির্মাণে ভাল রডের চাহিদা সবসময় বেশি।

প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পরিচালক মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘অবকাঠামো নির্মাণে ক্রেতাদের মান নিশ্চিত হয়ে তবে রড কেনা জরুরি। ভবনের ভিত্তিটা যদি মজবুত না হয়, তাহলে সে ভবন টেকসই হবে কীভাবে। বাজারে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভাল মানের রড সরবরাহ করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এক্ষেত্রে কোন আপোষ নেই। প্রচারে প্রসার নয়, ভাল ও গুণগতমানসম্পন্ন পণ্য মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমার সচেষ্ট। মানুষ এসএএসএম স্টিল পছন্দ করেছে বলেই আজকে আমাদের এ সফলতা।’

শীতলপুর অটো স্টিল মিলস লিমিটেডের পরিচালকদের আজকের এ পর্যায়ে উঠে আসার গল্পটা অনেক উত্থান পতনের। নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে জীবন যুদ্ধে সফল তারা। শীতলপুর অটো স্টিল মিলস গড়ে উঠার গল্পটা তাদের সে জীবন যুদ্ধের একটি অংশ।

আশির দশকের শুরুতে এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা যৌথভাবে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের ব্যবসায় নামেন। প্রথম প্রচেষ্টায় সফলতা আসেনি। তেমন একটা লোকসান গুনতে না হলেও পাওনাদারদের ঋণ মেটাতেই হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। তবে ব্যবসায়িক সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে ভালভাবেই সেই সংকট থেকে বেরিয়ে আসেন তারা। প্রথম ব্যবসায় সফল না হলেও পাওনাদারদের সময়মত পাওনা মেটানো এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে সুসম্পর্ক রাখায় এ অঞ্চলে সুনাম বাড়ে তাদের। জাহাজ এনে কাটার চিন্তা বাদ দিয়ে লোহা ক্রয়-বিক্রয়ে ফরওয়ার্ডিং ব্যবসা শুরু করেন তারা। এক্ষেত্রেও তাদের নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে আসতে হয়।

প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিচালকরা ১৯৮৫ সালে সিকো ট্রেডার্স নামে নগরীর একেখান মোড় সংলগ্ন এলাকায় বিশাল এক ডিপো দিয়ে পুরাতন লোহা ক্রয়-বিক্রয়ের একটি ইয়ার্ড গড়ে তোলেন। সে সময় এ ইয়ার্ডটির চট্টগ্রামে বেশ সুনাম ছিল। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে মালামাল লোড আনলোড হত। সিকো ট্রেডার্স পরিচালনার এক পর্যায়ে পরিচালকদের মধ্যে অংশীদারিত্ব নিয়ে মতবিরোধ হয়। এর জের ধরে একই ইয়ার্ডে মদিনা এন্টারপ্রাইজ ও দারুসসালাম এন্টারপ্রাইজ নামে আরো দু’টি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে।

’৯৪ সালে উদ্যোক্তারা আবারো এক হয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেন। চালু করেন শীতলপুর রি-রোলিং মিলস। ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে রড তৈরি করে বাজারজাত করতেন তারা। এরপর নানা পথ পরিক্রমা শেষে আবারও যোগ দেন শিপ ইয়ার্ড ব্যবসায়। শুরুতে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও ধীরে ধীরে নিজেদের এ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত করেন। শিপ ইয়ার্ড ব্যবসার শুরুতে জাহাজ থেকে কাটা লোহার তেমন একটা বাজার দর পেতেন না। সে সময় লোহার দাম ছিল অনেক কম। জাহাজের এত লোহা কীভাবে বাজারজাত করবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান তারা।

এ সময়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ভাবনায় আসে রি রোলিং মিল কাঁচামাল বিলেট উৎপাদনের। নিজেদের শিপ ইয়ার্ড থেকে পাওয়া লোহা দিয়ে ২০০৫ সালে শুরু হয় বিলেট উৎপাদন। শীতলপুর রি রোলিং মিল হয় শীতলপুর স্টিল। এতে লোহার বাজার দর নিয়েও দুর্ভাবনা কমে যায়। শুরুতে উৎপাদিত রডের ভাল বাজার ছিল। তবে ওই সময় দেশের বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলো আধুনিক ও উন্নতমানের রড উৎপাদনের প্রতিযোগিতায় নামে। পিছিয়ে থাকেনি এসএএসএমও।

২০০৯ সালে পুরাতন রি-রোলিং মিলকে পরিণত করা হয় আধুনিক স্টিল উৎপাদন কারখানায়। শীতলপুর স্টিল মিলস হয় আজকের শীতলপুর অটো স্টিলস মিলস। শুরু হয় ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক উপায়ে রড নির্মাণ ও বাজারজাত। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী বাজারে নিরবিচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ করে আসছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

দেশের ইস্পাত শিল্পের উন্নয়নে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিশেষ ভূমিকা রাখছে তার মধ্যে অন্যতম শীতলপুর অটো স্টিল মিলস। দেশে এ শিল্পের অগ্রগতিতে প্রতিষ্ঠানটির অবদান ব্যাপক। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে এএএসএম। ব্যবসায়িকভাবে সফল প্রতিষ্ঠানটি সীতাকু- উপজেলার শীতলপুর এলাকায় অবস্থিত।

বর্তমানে বিভিন্ন পরিমাপের (৮, ১০, ১২, ১৬, ২০ ২২ ও ২৫ মিলিমিটার) এমএস ৬০জি ও টিএমটি ৫০০ ডব্লিউ রড বিপণন করে আসছে এসসিআরএম। প্রতিষ্ঠানটি এ রড তৈরির কাঁচামাল এমএস বিলেটও নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন করে থাকে।

মোল্ডিং স্ক্রাপকে পরিশোধন ও অন্য রাসায়নিক যোগ করে বিলেট তৈরি করা হয়। নিজেদের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত বিলেট থেকে রড তৈরি হওয়ায় পণ্যের গুণগত মান বজায় থাকে শতভাগ। আর তাই গ্রাহককে বিশ্বমানের পণ্য সরবরাহ করতে সক্ষম এই প্রতিষ্ঠান। উৎপাদন হতে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে সততা, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সমন্বয় ঘটানো হয় এখানে। গ্রাহক, কর্মী ও সমাজের বৃহৎ স্বার্থ চিন্তা করে তারা সেবা দিয়ে আসছে। সঙ্গত কারণে গ্রাহকরা তাদের সেবায় সন্তুষ্ট। এসএএসএম টিএমটি ৫০০ ডব্লিউ রডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ইল্ড স্ট্রেংথ। এর মাধ্যমে রডের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা বোঝা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যে রডে ইল্ড স্ট্রেংথ যত বেশি, সেই রড তত ভালো। আইএসও ও বিএসটিআই এর মানদ- অনুযায়ী কোম্পানির উৎপাদিত রডে ৫৫০ এমপিএ ইল্ড স্ট্রেংথ থাকে। যার আলটিমেইট স্ট্রেংথ ৬৪৭। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত রড এ মানদ-ে উতরে গেছে শতভাগ। একই সঙ্গে এই রড যথেষ্ট সোজা। এ ধরনের রড মজবুত রাখে কংক্রিট। এছাড়া এতে কার্বন কনটেন্ট কম।

ফলে ঝালাইয়ে একেবারেই সমস্যা তৈরি করে না এ রড। সব মিলিয়ে নির্মাণকাজের জন্য ভীষণ উপকারী এসএএসএম টিএমটি ৫০০ ডব্লিউ রড, তাই অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সেরা রডের তকমা পেয়েছে। এসএএসএ-এর উৎপাদিত রডের ভূমিকম্প সহনীয়, সাশ্রয়ী ও সহজে জং বা মরিচা ধরে না। শতভাগ পরিশোধিত। ধারাবাহিকভাবে বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে এসএএসএম ভোক্তাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

রড তৈরির অন্যতম কাঁচামাল বিলেট নিজেরাই উৎপাদন করায় গুণগত মান ও সেরা মানের রড গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে পারে এ প্রতিষ্ঠান। পণ্যের মানের বেলায় কোনো আপস করে না প্রতিষ্ঠানটি। সততা তাদের মূল পুঁজি। উৎপাদনের সব পর্যায়ে সততার পরিচয় দিয়ে আসছে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী যথাসময়ে পণ্য সরবরাহের চেষ্টা করে থাকে।

এসএএসএমর রড উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় বিশ্বখ্যাত এডভান্স প্রযুক্তি থার্মো মেকানিক্যাল ট্রিটমেন্ট। প্রথমে পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল গ্যাস ভিত্তিক স্পঞ্জ আয়রন প্ল্যান্টে পরিশোধিত করা হয়। এরপর ল্যাডল ফার্নেস টেকনোলজি ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক আর্ক ফার্নেসে এটি আরও পরিমার্জিত করা হয়। এতে সালফার ও ফসফরাসের মত পদার্থকে দূরীভূত করে বিশুদ্ধ ইস্পাতের বিলেট বের হয়ে আসে।  পরবর্তীতে এ বিলেট আধুনিক মানসম্পন্ন পিএলসি কন্ট্রোল রোলিং মিলে উত্তপ্ত করে দক্ষ টেকনিশিয়ানদের তত্ত্বাবধানে যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ ৫০০ ডব্লিউ টিএমটি রড উৎপাদন করা হয়।

শীতলপুর অটো স্টিল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মো. জসিম উদ্দিন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন মো. নাজিম উদ্দিন। পরিচালনা পর্ষদে আরও আছেন মোহাম্মদ জানে আলম, মোহাম্মদ হোসেন ও মো. মাহবুব আলম।

পণ্যের মান উন্নয়নে ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ও কর্মীরা ভীষণ সচেতন। এজন্য এখানে রয়েছে ইউনিভার্সাল টেস্টিং মেশিন ও মেটালারজিক্যাল মাইক্রোস্কোপ। একদল দক্ষ প্রকৌশলী সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রায় সব কর্মী। উপযুক্ত লে-আউট, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ও দক্ষ অপারেটর রয়েছে এখানে। সবার পেশাদারিত্ব চোখে পড়ার মতো। নির্মাণশিল্পে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী গুরুত্বপূর্ণ। এই মান বজায় রাখছে এসসিআরএম। গ্রাহকের বাড়ি দৃঢ় ও নিরাপদ রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্টরা। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পরিবেশ রক্ষায়ও ভূমিকা রাখছে ওই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা দেশবাসীর কাক্সিক্ষত চাহিদা মোতাবেক আধুনিক ও মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশের অন্যতম সেরা ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এসএএসএম।

লেখক: প্রতিবেদক, দৈনিক পূর্বকোণ

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট