চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

জমি নেই, আধুনিক কসাইখানা প্রকল্প চলে যাচ্ছে অন্যত্র

২৭ জানুয়ারি, ২০২২ | ১:১৯ অপরাহ্ণ

নওশের আলী খান

চট্টগ্রামে আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ প্রকল্পটি অন্যত্র চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে এই সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে কসাইখানা নির্মাণের স্থান নির্ধারণ না হলে প্রকল্পটি চট্টগ্রামে হবে না বলে জানা গেছে। তবে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, কসাইখানা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেকে পাস হওয়া প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ‘লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এলডিডিপি)’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে শতভাগ পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে কসাইখানাটি স্থাপনের কথা। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পাঁচ বছর মেয়াদি এলডিডিপি প্রকল্পের চট্টগ্রামের কসাইখানার জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৮৩ কোটি টাকা। এ জন্য নগরীর পুরাতন চান্দগাঁও থানা এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ৮৮ শতক জায়গা প্রদান করে। জায়গা পাওয়ার একবছরেও প্রকল্পের কাজে হাত দিতে পারেনি প্রাণিসম্পদ দপ্তর। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের চান্দগাঁও এলাকার প্রস্তাবিত জমি নিয়ে এলাকার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপত্তি দেয়ায় সেটি সেখানে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। হালিশহর অথবা পাহাড়তলী এলাকায় জমি পাওয়া গেলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে। তবে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে জমির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে। অন্যথায় প্রকল্পটি ঢাকায় চলে যেতে পারে। প্রকল্পটি চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পক্ষ বেশ তৎপর বলেও জানা গেছে।
কসাইখানা নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, ব্যাপারটি এ পর্যায়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জানতে পারেননি। প্রকল্পের জন্য চান্দগাঁও ছাড়া অন্যত্র জমির ব্যবস্থা করা হবে। কোন অবস্থাতেই এটি চট্টগ্রাম থেকে অন্যত্র নিতে দেব না।
সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত এই কসাইখানা হবে এশিয়ার অন্যতম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত। প্রকল্পের আওতায় পাঁচতলাবিশিষ্ট একটি ভবন ছাড়াও থাকবে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আইসোলেশন, স্মার্ট স্টকিং স্পেস সুবিধা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও ব্লাড (রক্ত ব্যবস্থাপনা) ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট শৃঙ্খলা। যেখানে ১ ঘণ্টায় একসঙ্গে ১০০ পশু জবাই করা সম্ভব হবে। অপেক্ষায় রাখা যাবে ৩০০ পশু। ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে অর্থাৎ হালালভাবে পশু জবাই, প্রয়োজনে জবাইকৃত পশুর মাংস ফ্রিজিং করার সুব্যবস্থা, পশুর রক্তকে পোলট্রি ফিডে রূপান্তর করা এবং অন্যান্য বর্জ্য শতভাগ রিসাইক্লিং ও ইটিপি করা হবে। আশপাশের পরিবেশের উপর কোনো ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না। পশুর নাড়িভুঁড়ি, শিংসহ যেগুলো ফেলে দেওয়া হয়, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সেগুলোও বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরবাসী মানসম্পন্ন ও হালাল মাংস পাবে, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং ক্ষুরারোগসহ গবাদিপশুর নানা সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলেও কসাইখানাটি সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেটি নিজে বা ইজারা দিয়ে পরিচালনা করবে চসিক।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট