চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মাস্টারপ্ল্যানের উল্টোপথে উন্নয়ন!

২৭ জানুয়ারি, ২০২২ | ১:১৩ অপরাহ্ণ

ইফতেখারুল ইসলাম ও ইমরান বিন ছবুর 

চট্টগ্রাম শহরে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে আগ্রহ নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের। বরং কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশের ঠিক উল্টো প্রকল্প গ্রহণ করে উন্নয়ন কর্মকাÐকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আবার কোন কোন সরকারি সংস্থা মাস্টারপ্ল্যানের তোয়াক্কা না করে নিজের মত করে প্রকল্প গ্রহণ করছে। মাস্টারপ্ল্যান সবচেয়ে বেশি অমান্য করছে সরকারি সংস্থাসমূহ। কোটি টাকা খরচ করে মাস্টারপ্ল্যান করে তা অনুসরণ না করার কারণে একদিকে অর্থের অপচয় হচ্ছে। অন্যদিকে, পরিকল্পিত নগরী গড়ার পরিবর্তে ‘উন্নয়নের জঙ্গলে’ পরিণত হওয়ার পথেই এগোচ্ছে প্রাচ্যের রানী চট্টগ্রাম। এমনটিই অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
একাধিক নগরবিদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, মাস্টারপ্ল্যানের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে। সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে সিআরবিতে যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে তার বেশিরভাগই মাস্টারপ্ল্যানের সাথে সাংঘর্ষিক। যেকারণে, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় শহর হলেও চট্টগ্রামে সেভাবে কোনো শহর গড়ে উঠেনি। এমনকি শহরের ভিতরের চাপ কমাতে শহরতলী এবং আশপাশের ১২ টি গ্রোথ সেন্টারকে ডেভেলপ করার কথা বলা হয়েছিল মাস্টারপ্ল্যানে। কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও হয়নি।
ঢাকার ওসমানী বা সোহরাওয়ার্দীর মত কোনো কিছু কি চট্টগ্রাম শহরে হতে পারতো না? একদিকে জায়গাগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে জায়গার মূল্যও বাড়ছে। কিন্তু কোথাও কোন ব্রিদিং স্পেস করা হচ্ছে না। আবার পাহাড় কেটে রাস্তা করছে সিডিএ। এর ফলে ভূমিদস্যুরা পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে আগ্রহী হচ্ছে। উন্মুক্ত বা বিনোদনের জায়গা না করে এসব পাহাড় ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।
১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানের অনেক সেক্টরেই সিডিএ এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থাসমূহ কাজ করেনি। নাগরিক সুবিধার ক্ষেত্রে মাস্টারপ্ল্যান অনুসরণ করা হয়নি। ১৯৬১ থেকে সিডিএ বলে আসছে বায়েজিদ এলাকায় পাহাড়ে একটি বিশাল পার্ক করার কথা, কিন্তু কোনো সংস্থা তা করতে পারেনি। সেখানে জায়গা সংরক্ষণ করে রাখা হলেও কিন্তু কোনো প্রকল্প নেয়নি কোন সংস্থা। আবার কাগজে কলমে ওই এলাকাটি সংরক্ষিত হলেও বাস্তবে সেখানে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। গড়ে উঠেছে হাজারো বসতবাড়ি।
জলাবদ্ধতা মাস্টারপ্ল্যানের একটি বিশাল কম্পোনেন্ট ছিল। কিন্তু সিডিএ জলাবদ্ধতা প্রকল্প না নেয়া পর্যন্ত কোনো সংস্থা একাজে হাত দেয়নি। সিডিএ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রকল্পের আওতায় সব খাল এবং নালা আসেনি। একারণে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পরও নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনের আশা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, নগরীর ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টি খাল প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে। বাকি ২১টি খাল খনন করা হচ্ছে না। ৫০০ কিলোমিটার ড্রেনের মধ্যে মেগা প্রকল্পে আছে ৩০২ কিলোমিটার। বাকি ১৯৮ কিলোমিটার প্রকল্পে নেই। মেগা প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে হলেও এসব খাল-নালাও খনন করতে হবে।
নগরবিদদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, সিডিএ ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানে গণপরিবহন যেমন, কমিউটার ট্রেন সার্ভিসের কথা গুরুত্বের সাথে বলা হয়েছে। ট্রান্সপোর্টেশন খাতে সিডিএ প্রকল্প গ্রহণ করলেও তা গণপরিবহন বান্ধব নয়। সিডিএ প্রকল্প গ্রহণ করেছে মূলত ব্যক্তিগত গাড়ির গতি বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে। ফ্লাইওভারগুলোর সব র‌্যাম্প ও লুপ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফ্লাইওভারের ফলে ওইসব এলাকায় মূলত প্রাইভেট তথা হালকা যানবাহনের গতি বেড়েছে।

 

১০ শতাংশও বাস্তবায়ন হয়নি মাস্টারপ্ল্যানের

স্থপতি আশিক ইমরান, নগর পরিকল্পনাবিদ

 

বিশিষ্ট নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান পূর্বকোণকে বলেন, ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানের ১০ শতাংশও বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে নতুন মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। ফ্লাইওভার হল। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। এটার মাঝখানে আপত্তি আসে। আবার র‌্যাম্পে জোর দেয়া হয়। তার মানে বুঝা যাচ্ছে, এই শহরকে নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা কখনো ছিল না। এখনো নেই। এডহক ভিত্তিতে কাজ চলছে। শহরের অন্তত ৫০ বছরের পরিকল্পনা থাকা উচিত। যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হয়। এখন মেট্রোরেলের কথা আলোচনায় আসছে। তাহলে মেট্রোরেলকে কীভাবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সমন্বয় করা যাবে। এসব অনেক প্রশ্ন এসে যাচ্ছে। পাশাপাশি স্থাপনাতো আছেই। এই শহরে রাস্তা বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই।
এমনকি এলাইনমেন্টের মধ্যেই সিডিএ’র চোখের সামনে ভবন উঠে যাচ্ছে। বাকলিয়া এক্সেস রোড তার বড় উদাহরণ। এখানে কেউ দায় নিতে চায় না। দায়বদ্ধতা কারো নেই। একে অন্যের উপর দোষারোপ করে দায় এড়ায়। এভাবে একটি পরিকল্পিত শহর গড়ে উঠতে পারে না। আমাদের এই শহর নিয়ে তেমন কোন পরিকল্পনা নেই। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা যেহেতু ভালোর দিকে। সাথে সাথে আমাদের এমবিশন বেড়ে যাচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প আসছে। যেমন আউটার রিং রোড যখন নির্মাণ করা হয়, তখন বে-টার্মিনাল ছিল না। মিরসরাই অর্থনৈতিক জোন এবং টানেলও ছিল না। আউটার রিং রোডের সাথে এখন তিনটি বিষয় যুক্ত হয়ে গেছে। এসবের কারণে কী পরিমাণ ট্রাফিক জেনারেট হবে। এখন আবার নতুন করে পুরো বিষয়টিকে ঢেলে সাজাতে হবে। তখন হয়তো দেখা যাবে, এই বিষয়টিকে ঢেলে সাজাতে যে সময় যাবে ততদিনে আরো বড় কোন প্রকল্প চলে আসবে। এটি হয়তো চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া থাকবে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যে সংশোধনী প্রস্তাব দেখলাম তাতে মনে হল প্রকল্পটি গ্রহণের সময় তারা গভীরভাবে সমীক্ষা করেনি। তাড়াহুড়ো করে ডিপিপি তৈরি করতে গিয়ে অনেক বিষয় উপেক্ষিত থেকে যায়। হয়তো যারা ডিপিপি তৈরি করেছে তারা এই বিষয়ে যথাযথ ধারণা রাখে না। পরে কাজ করতে গিয়ে নতুন নতুন বিষয় যোগ করতে হয়। সংশোধন করতে গিয়ে ডিজাইন পরিবর্তন হয়, সময়ক্ষেপণ হয়, এলাইনমেন্ট পরিবর্তন হয়। দিনশেষে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হয়।
যেহেতু ২০৪১ সালকে মাথায় রেখে মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে তার জন্য কিছুটা সময় দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প আপাতত গ্রহণ না করাই উচিত। এখনি যদি আবারো অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ করে ফেলি তাহলে মাস্টারপ্ল্যান পদে পদে বাধাগ্রস্ত হবে। কিছুদিন পর সংশোধন করতে হবে।

 

গবেষণা ছাড়া উন্নয়ন নগরীর স্থায়ী সমস্যার কারণ হবে
ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান, সহযোগী অধ্যাপক, চুয়েট

 

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান পূর্বকোণকে বলেন, মাস্টারপ্ল্যান কোন সমস্যা নয়। সমস্যা দেখছি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে। অনেক সময় সরকারি সংস্থাসমূহ মাস্টারপ্ল্যান ভায়োলেশন করে। যেমন সিআরবি এলাকাটি মাস্টারপ্ল্যানে সবুজ এবং সংরক্ষিত এলাকা হিসেবেই চিহ্নিত আছে। অথচ সেখানে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার প্রতিবাদ সবাই করছে। এখন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আরেকটি মার্কেট করার পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে। গবেষণা ছাড়া উন্নয়নের নামে এই ধরনের প্রকল্প শহরের মধ্যে স্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি করছে।
সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন সময়ে মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তা কখনো অডিট হয় না। নির্দিষ্ট সময় পর প্রতিটি মাস্টারপ্ল্যানের অডিট করা উচিত। ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যান অনেকটা বাস্তবায়ন হয়েছে। আবার অনেক কিছুই আসলে অধরা রয়ে গেছে। তার বড় কারণ হল সংস্থাসমূহের মধ্যে আন্তঃসমন্বয়ের বড় অভাব। প্রতিটি সংস্থা তার নিজস্ব চিন্তা ভাবনা থেকে সাময়িক সমাধানের দিকে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে। তারা দুরবর্তী সমস্যা সমাধানে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিতে চায় না।
১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানের মেয়াদ শেষ হয়েছে। একারণে নতুন মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। চট্টগ্রামে টানেল হয়েছে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উন্নয়নের নতুন সূত্রপাত হবে। এসব বিষয়ও বিবেচনায় রাখতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে টানেল করার সময়ে লালখান বাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত একটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে, অথচ এই দুই প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয় নেই। সিডিএ আওতাধীন এলাকার মধ্যেই প্রকল্প দুইটির কাজ হয়েছে। এর আগে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে সমস্যা সৃষ্টি হতে দেখলাম। জোড়াতালি দিয়ে সেই সমস্যার সমাধান করা হল। সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাম্পের ফাটল ধরার ঘটনা দেখলাম। মিরসরাইয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। এটিও মাস্টারপ্ল্যানে বিবেচনায় আনতে হবে। আরেকটি বিষয় হল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের চিন্তা-ভাবনা সরকারে আছে। এটির সমীক্ষাও চলছে। তার মানে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম শহরকেন্দ্রিক মাস্টারপ্ল্যান করলে হবে না। পুরো অঞ্চলকে নিয়েই সুষ্ঠু পরিকল্পনা করতে হবে। কক্সবাজার, মিরসরাইসহ বিশাল এলাকাজুড়ে শিল্প-কারখানা হচ্ছে। মেট্রোরেলের কথা বলা হচ্ছে। মেট্রোরেল আমাদের কতটুকু প্রয়োজন। একটি সমীক্ষা করে দেখা উচিত, আমাদের শহরের কত শতাংশ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহারের সুযোগ পায়। কোন সংস্থা এককভাবে তার চিন্তা থেকে যেন মাস্টারপ্ল্যান না করে।
নতুন মাস্টারপ্ল্যান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেকোন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার সময় সিডিএ থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু অনেক সরকারি সংস্থা মনে করে তাদের প্রকল্প গ্রহণের সময় সিডিএ’র অনুমোদন লাগবে না। এটি একটি ভুল ধারণা। মাস্টারপ্ল্যান সরকারি-বেসরকারি সবাই মানতে বাধ্য। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত গেজেট একটি আইন। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।

 

নতুন মাস্টারপ্ল্যানে আগের পলিসিগুলো রিভিউ করছি
মো. আবু ঈসা আনছারী, মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের, পরিচালক সিডিএ

 

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও মাস্টারপ্ল্যানের প্রকল্প পরিচালক মো. আবু ঈসা আনছারী বলেন, আমরা নতুনভাবে মাস্টারপ্ল্যান করছি এবং আগের পলিসিগুলো রিভিউ করছি। নতুন মাস্টারপ্ল্যানের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২০ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত। মাস্টারপ্ল্যানের কোন কোন কাজ আমরা করতে পেরেছি সেসব বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা হবে এবং কোন কোন কাজ করতে পারিনি সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। কী কারণে তা সম্পন্ন করতে পারিনি তাও আলোচনা হবে। মাস্টারপ্ল্যানে জোনিং একটা বিষয় রয়েছে। অর্থাৎ কোথায় আবাসিক এলাকা হবে এবং কোথায় বাণিজ্যিক এলাকা হবে সেসব বিষয় আলাদা করা হয়েছে। আমরা যেসব প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছি, তা জোনিং বিবেচনা করেই দিচ্ছি। মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য সিডিএ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট