চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

লালদিয়ার চরে ২শ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্দরের

১৫ একর জমি উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ জুলাই, ২০১৯ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

পতেঙ্গা বিমানবন্দর সড়কের লালদিয়া চর এলাকায় গতকাল সোমবার অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে অভিযান শুরু করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার বন্দর ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ’র নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী হোসেন, বন্দরের ডেপুটি এস্টেট ম্যানেজার জিল্লুর রহমান, মেম্বার প্রকৌশলী আকতার হোসেন।
বন্দর ম্যাজিস্ট্রেট জানান, অভিযানে দুই শতাধিক পাকা-কাঁচা ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৫টির মতো পাকা স্থাপনা ছিল। বাকি ঘরগুলো হচ্ছে টিনের কাঁচা ঘর। প্রায় ১৫ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে উচ্ছেদ অভিযানের নোটিশ পেয়ে অনেকেই নিজ উদ্যোগে ঘরের মালামাল সরিয়ে নিয়েছে।
বন্দর সূত্র জানায়, উদ্ধার হওয়া জায়গা আমদানি-রপ্তানির সুবিধার জন্য হ্যান্ডলিং টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লালদিয়ার চর এলাকার বাসিন্দারা। লালদিয়ার চর উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলমগীর হাসান দাবি করেন, ‘৫০ বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করে আসছি। বিমান বন্দর সম্প্রসারণের সময় আমাদের উচ্ছেদ করা হয়। পরবর্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের লালদিয়ার চর এলাকায় বসবাসের জন্য জায়গা দেন। আজ আমরা অবৈধ হয়ে গেলাম।
উচ্ছেদের বিষয়ে তিনি বলেন, নোটিশ পাওয়ার পর অনেকেই মালামাল সরিয়ে নিয়েছে। অন্যত্র চলে গেছে। উচ্ছেদ অভিযানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলে সম্প্রদায়ের ৩০ পরিবার। এসব অসহায় পরিবারগুলোর ভাগ্য এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিশ্রুত লালদিয়ার চরে বসবাসকারীদের পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন সভাপতি আলমগীর হাসান।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দারা সহায়তা করেছে। ৬০ পুলিশ, ৩০ আনসার ও ৬০ জন শ্রমিকের অংশ নেন।
পতেঙ্গা এলাকার আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গবিরের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লালদিয়ার চর এলাকায় পুনর্বাসনের সুযোগ দিয়েছেন। খাজনা দেওয়ার রশিদ রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, বন্দর থেকে লিজ নিয়ে কর্ণফুলীর তীরে কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ করা হয়েছে। আরও কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে। ধনীপতিদের স্থাপনা বলে সেগুলো উচ্ছেদ করা হয় না। গরিবদের উচ্ছেদ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৯ এপ্রিল কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য বন্দর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। উচ্ছেদ করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
এদিকে, আদালতের নির্দেশনা মেনে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট, বারিকবিল্ডিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২৩০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল জেলা প্রশাসন। প্রথম ধাপে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর পর বন্ধ হয়ে যায় অভিযান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট