চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার অবসান

কাল থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু : প্রস্তুুত জেলেরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কক্সবাজার

২৩ জুলাই, ২০১৯ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

গত ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগরে শুরু হয়েছিল ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘ ৬৫ দিন পর অবশেষে আজ (মঙ্গলবার) নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে। বুধবার (২৪ জুলাই) ভোর থেকে সমুদ্রে মাছ ধরায় আর কোন নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। দীর্ঘদিন পর সমুদ্র মাছ ধরতে যাবার সংবাদে হাসির চিহ্ন রেখে অনেক জেলেরা বলেছেন, এটাই বঙ্গোপসাগরে জেলেদের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় রেকর্ড। এর আগে নিষেধাজ্ঞা দিলেও লম্বা বিরতি দেয়া হয়নি। কষ্টময় অপেক্ষা শেষে খুশিতে আত্মহারা জেলার অনেক জেলেপাড়া।
২৩ জুলাই রাত ১২ টার আগ পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। ৬৫ দিনের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা গত ২০ মে সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছিল। সাগরে মাছের সংখ্যাবৃদ্ধির স্বার্থে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম খালেকুজ্জামান জানান, সরকার কর্তৃক ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল অতঃপর ২৩ জুলাই দিবাগত রাতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ। জেলেদের কষ্ট হলেও সরকারি আইন মান্য করায় জেলেদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তিনি বলেন, জেলেরা মাছ আহরণে স্ব স্ব প্রস্তুতি নিয়ে ২৪ জুলাই থেকে সাগরে যেতে পারবে। সাগরে যেতে ইতোমধ্যে জেলেরা প্রস্তুুতিও নিয়েছে। এদিকে, সমুদ্র-অঞ্চলের জেলেরা দীর্ঘ দুইমাস একমাত্র জীবিকার উৎস সাগরে মাছ ধরা চালিয়ে যেতে না পারায় এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নৌকা মালিক সমিতির অনেকেই মানববন্ধন ও মিছিল করেছিলেন। সেই গ্লানিমাখা দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বুধবার সমুদ্র খোলা পেয়েছে জেলেরা। সারি সারি ফিশিং বোট উত্তাল সাগরের পাহাড়সম ঢেউ উপেক্ষা করে জেলেরা ছুটবে জীবিকার তাগিদে বুকভরা আশা আর মনভরা সংগ্রাম নিয়ে।
দীর্ঘদিন বিরতির পর সাগরে মাছ আহরণে গেলে মাছ বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ফিশারিঘাটের জেলে আবুল কালাম মাঝি বলেন, সাগরে আমাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ভারতের জেলেরা আমাদের সাগরে বড় বড় ট্রলার নিয়ে এসে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যদিও আমাদের জন্য নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞার পরে যাব সাগরে। গিয়ে দেখি আল্লাহ আমাদের রিজিকে কি দেন। সাগরে যাওয়ার জন্য গত সোমবার থেকে তারা প্রস্তুুতি নিচ্ছে বলে জানান।
প্রসঙ্গত, ইলিশের মৌসুমে সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে শুধু ট্রলারের ওপর এই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু এবার সকল প্রকার নৌযান অর্থাৎ ছোট ফিশিং বোট, ইঞ্জিন চালিত নৌকা এর আওতায় পড়েছে। আর সামুদ্রিক মাছ ধরে জীবনযাপন করা জেলেরা সরকারের এ নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে অখুশি ছিল কারণ দেশের স্বার্থে ৬৫ দিন তারা মাছ ধরতে না পারলেও ঠিকই বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় জেলেরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট