চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আগস্টের মধ্যে ১৫৭৬ স্থাপনা উচ্ছেদ চায় সেনাবাহিনী

২২ জুলাই, ২০১৯ | ১:৪১ পূর্বাহ্ণ

নগরের ১৩টি খালের ওপর গড়ে ওঠা ১ হাজার ৫৭৬টি অবৈধ স্থাপনা আগস্টের মধ্যে উচ্ছেদ করে প্রায় ১২৩ একর জায়গা দখলমুক্ত করতে চায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে রাজাখালী খাল-২ ও নোয়াখালের বেদখল জমি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার চাকতাই খালে অভিযান শুরু হবে। এর আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগাপ্রকল্পের আওতায় ডিটেইল ডিজাইন সম্পন্ন ১৩টি খালে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

হয়। সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আগস্টের মধ্যে ১৩টি খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্য রয়েছে। দখলমুক্ত হলে শুষ্ক মৌসুমে এসব খাল থেকে মাটি উত্তোলন, রিটেইনিং ওয়াল ও রাস্তা নির্মাণসহ সব কাজ সম্পন্ন করা হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাঈনুদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের কাজ হবে। প্রথম ধাপে ১৩টি খালে কাজ চলছে। আগস্টের মধ্যে খালগুলো দখলমুক্ত করা হবে। কোন খালে কতটি স্থাপনা?
প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) ইতোমধ্যে ১৩টি

খালের নকশা প্রণয়ন করেছে। এর মধ্যে গয়নার ছড়া খালে সর্বোচ্চ ৪৫৩টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত হয়েছে।
মহেশ খাল
৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটির বিএস খতিয়ান অনুযায়ী ২১ দশমিক ৪৮৮ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ২৯টি।
মহেশখালী খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ২৬ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ১২ দশমিক ৪০৯ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ২৭টি।
খন্দকিয়া খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ২৫ দশমিক ১৯ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৯৭টি।
গয়নার ছড়া খাল
খালের দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার। বিএস অনুযায়ী খালের ৯ দশমিক ৮৯৯ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৪৫৩টি।
ডোমখালী খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৭ দশমিক ৮৩৫ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ১১৫টি।
বির্জা খাল
ডিটেইলস ডিজাইন অনুযায়ী খালের দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ২ দশমিক ৬৫ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ১০৭টি।
বামনশাহী খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৮ দশমিক শূন্য ৪৫ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৪৭টি।
ত্রিপুরা খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৬ দশমিক ৫৯৬ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৮৩টি।
নোয়া খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৬ দশমিক ৫৯৬ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ১৭৫টি। ইতোমধ্যে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে বেদখল জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
চাকতাই খাল
খালটির দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮৮১ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৮ দশমিক ১৩৭ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৩০০টি।
মরিয়ম বিবি খাল
খালটির দৈর্ঘ্য শূন্য দশমিক ৯৭ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৬ দশমিক ৬৮০ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৪৭টি।
রাজাখালী খাল-২
খালটির দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৭৬৮ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের ৭ দশমিক ৩৩৫ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ২০টি। ইতোমধ্যে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে বেদখল জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
টেকপাড়া খাল
খালটির দৈর্ঘ্য শূন্য দশমিক ৫৯ কিলোমিটার। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী খালের শূন্য দশমিক ৪৩১ একর জায়গা বেদখল। খালটির ওপর অবৈধ স্থাপনা ৭৬টি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএ’র সমঝোতা চুক্তির পর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর খালের উভয়পাশে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে।
ডিপিপি অনুযায়ী গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬টি খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ২০২০ সালের মধ্যে নগরে ৩৬টি খাল খনন, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট