চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্ত্তাখালের ভাঙনে তছনছ নোয়াজিষপুর

রাউজান

জাহেদুল আলম, রাউজান

২২ জুলাই, ২০১৯ | ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ

সর্ত্তাখালের তীব্র স্রােতে বেড়িবাঁধের একাংশ ভেঙে প্লাবিত হয়ে তছনছ হয়ে গেছে রাউজানের পুরো নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন। অসংখ্য রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকার প্রত্যেকটি গ্রামে। এ ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০টি মাছের চাষের পুকুর ডুবে ভেসে গেছে মাছ। স্মরণকালের এ ভয়াবহ বন্যায় ইউনিয়নের ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন সরোয়ার্দী সিকদার।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রােতের কারণে এ ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সর্ত্তাখালের মিলন মাস্টারের ঘাটা নামক অংশের বেড়িবাঁধ বিশাল আকারে ভেঙে যায়। এই ভাঙা অংশে পানির তীব্র স্রােতে স্থানীয় ফসলি জমিগুলোও অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার্দী সিকদার জানান, মূলত গত বৃহস্পতিবার বিকেলেই সর্ত্তাখালে অতিরিক্ত পানির চাপে ভেঙে যায় মিলন মাস্টারের ঘাটা নামক এলাকার খালের বেড়িবাঁধ। এই ভাঙা অংশ দিয়েই পানি ঢুকে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়ে। এ ইউনিয়নের ফতেনগর, নদিমপুর, নোয়াজিষপুরসহ প্রত্যেক গ্রাম কয়েকফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং সর্ত্তাখালের তীব্র গতিতে পানি ঢোকার কারণে এলাকার অবকাঠামো, পুকুর ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ল-ভ- হয়ে গেছে এ ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বিস্তৃত গহিরা-ফটিকছড়ি অদুদিয়া সড়ক, মিনা আকবর সড়ক, মৌলানা হোসেনুজ্জামান সড়ক, আমীর মো. চৌধুরী সড়ক, জামশের আলী সড়কসহ প্রায় প্রত্যেক অভ্যন্তরীণ সড়ক। তেলপারই ব্রিজের এপ্রোচ সড়ক দেবে গেছে। সর্ত্তাখালের ওপর নতুনহাট সংলগ্ন ব্রিজের একাংশ ভেঙে গেছে। নদীপুর-ইছাপুর সড়ক, নদীমপুর সোনামিয়া চৌধুরী সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপক আকারে। পানিতে ডুবে গিয়েছিল অদুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেনগর প্রাইমারি স্কুল, নদীমপুর প্রাইমারি স্কুলসহ এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এলাকার ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় জনসাধারণ জানান, বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়া সড়কগুলোর অধিকাংশই গত কয়েকমাস এবং বছরখানেক আগে ব্রিক, বিটুমিনের সলিন করা হয়েছিল। সর্ত্তাখালের পানির স্রােতে ওইসব সড়কের অস্তিত্ব এখন বিলীন হয়ে যানবাহন চলাচল, এমনকি অনেক সড়কে পায়ে হেঁটে চলাচলও হুমকি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সমাজসেবক মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিগত বন্যাগুলোতে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হলেও এবার ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তাঘাটের ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে। ওই বাঁধ দ্রুত টেকসইভাবে পুনর্নির্মাণ করা না হলে সামনে বৃষ্টিতে আবারও ইউনিয়নে সর্ত্তাখালের পানি ঢুকে আরো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট