চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

৪ সহোদরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন

নাজিম মুহাম্মদ 

৩ জানুয়ারি, ২০২২ | ২:১৫ অপরাহ্ণ

পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে যুবলীগ নেতা শওকতুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো। একই পরিবারের চারভাইসহ হত্যার ঘটনায় অংশ নিয়েছিলো ১৫ জন।  হত্যায় অংশ নেয়া সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।  রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শওকতকে হত্যা করা হয়েছে এমনটি উঠে এসেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে।

গত বছরের ১১ মার্চ সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ডের কুমিরায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে কোপানো হয় শওকতকে। ঘটনার ৪৫ দিনের মাথায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে নিহত শওকতের বাবা ছবির আহম্মদ বাদী হয়ে গত বছরের ১৩ মার্চ  ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে সীতাকুণ্ড  থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত বছরের ৯ মে পর্যন্ত তদন্ত করেন সীতাকুণ্ড থানার এসআই হারুনুর রশিদ। পরবর্তীতে মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। সম্প্রতি আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র ( জেলা)  এসআই মো. কামাল আব্বাস।

সংস্থাটির তদন্তে শওকত হত্যাকাণ্ডে ১৫ জনের সম্পৃক্ত থাকার চিত্র উঠে  এসেছে।   চার্জশিটভুক্ত আসামি যারা ঃ যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, কুমিরার দেলিপাড়ার মৃত সোলায়মানের ছেলে হারুনুর রশিদ (৫০), জামশেদ (২৯), মোজাফফর হোসেন (৪২), মো. ইকবাল (৪১), আবুল হাসেমের ছেলে মো. মামুন (২৫), মো. ইউছুপের ছেলে তারেক (২৭), মোহাম্মদ শাহ আলমের ছেলে মো. ইউসুফ ওরফে শামীম (৩৩), শাহ আলম প্রকাশ মদন আলির ছেলে মাহবুব আলম (৩৫), মৃত মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. পারভেজ (২৯), মৃত মতিউর রহমানের ছেলে ফসিউল আলম (৫৫), শামছুল আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম সুমন (২০), মৃত খায়রুল বশরের  ছেলে  আবদুল আলিম লিংকন (২৬), মৃত আশরাফ আলির ছেলে  মকছুদ আলি প্রকাশ তোয়ান আলি (৪৫), আবদুল মালেকের ছেলে সাইফুল  ইসলাম ওরফে কার্টুন (২৪), ও মৃত জালার আহম্মদের ছেলে মো. আজগর আালি ওরফে কবির আহম্মদ (৩৬)।

যেভাবে সংগঠিত হয় হত্যাকাণ্ড ঃ শওকতুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ৭ নম্বর কুমিরা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। হামলাকারীরও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। রাজনীতির বিভিন্ন কর্মকা-ে দ্বিমতের কারণে হামলাকারীদের সাথে শওকতুলের বিরোধ ছিল। বিরোধের জের ধরে সুবিধা মতো সময়ে তাকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। তারা রমজান মাসের তারাবির নামাজের সময়ে শওকতুলকে হত্যা করার উপযুক্ত সময় হিসাবে বেছে নেয়। ঘটনার আগের দিন হারুনুর রশিদ মেম্বারের নেতৃত্বে বৈঠক করে হত্যার ছক আঁকা হয়। গত বছরের ১১ মার্চ সন্ধ্যা আনুমানিক সোয়া ছয়টায় কুমিরা গুল আহম্মেদ জুট মিলের বিপরীতে নামার বাজার দেলিপাড়া দুই নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন শওকতুল। 

এ সময় হারুন মেম্বারের নেতৃত্বে ১৫ জন ব্যক্তি দা, ছুরি, কিরিচ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়। এদের মধ্যে মামুনের নেতৃত্বে পাঁচজন দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে। অন্যরা বাইরে থেকে দলীয় কার্যালয় ঘিরে রাখে।  মামলার দুই নম্বর আসামি মামুন ধামা দা দিয়ে শওকতের মাথায় প্রথমে কোপ দেয়। পরে তাকে সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। রক্তাক্ত শওকত দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে মেঝেতে পড়ে যায়। এসময় মসজিদে তারাবির নামাজ চলছিলো। শওকতের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসতে চাইলে হামলাকারীরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে সিএনজি চালিত ট্যাক্সি নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মুমূর্ষু শওকতকে লোকজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  নিয়ে যায়। প্রায় ৪৫ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৬ এপ্রিল (২০২১) শওকত মারা যান।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট