চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

দেড় মাস গ্যাস সংকটের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১:০৭ অপরাহ্ণ

মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করা ভাসমান দুটি টার্মিনালের (এফএসআরইউ) একটিতে এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় আগামী দেড় মাস দেশে গ্যাস সংকটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে ত্রুটি মেরামত করতে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। জ্বালানি বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সাল থেকে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। আমদানিকৃত এলএনজি মহেশখালীর ভাসমান দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে গ্যাসে পরিণত করে পাইপ লাইনে দেওয়া হয়। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১৮ নভেম্বর বিকেল ৫টায় সামিটের টার্মিনালের মুরিং লাইন ছিঁড়ে যায়। ফলে এলএনজিবাহী কার্গো টার্মিালটিতে ভিড়তে পারছে না। ভ্যাসেল প্লাগ বয়া এবং সেকশন পাইলের মধ্যের একটি মুরিং লাইন ছিঁড়ে গেছে। ছিঁড়ে যাওয়ার পর কাছাকাছি সময়ে আল সাদ নামের একটি কার্গো আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটিকে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। মুরিং হলো একটি স্থায়ী কাঠামো, যেখানে কোনো জাহাজ বাঁধা অবস্থায় সুরক্ষিত থাকে। জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুর হামিদ জানান, ‘একটি এলএনজি টার্মিনালে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এজন্য গ্যাস বিতরণ কোম্পানি ও গ্রাহকদের প্রস্তুুতি নিতে বলা হয়েছে। তবে শীতে গ্যাসের চাহিদা কমে যাওয়ায় সমস্যা তত প্রকট নাও হতে পারে। পেট্রো বাংলার সূত্র জানিয়েছে, সামিটের রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে যে এলএনজি মজুদ ছিল তা দিয়ে ১০ দিন গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে এ কয়েকদিন সরবরাহে ঘাটতি হয়নি। আজ বুধবার থেকে এই সংকটের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। তবে শীতে বিদ্যুতে গ্যাসের চাহিদা কম থাকে। তাই শিল্প বা আবাসিকে সংকট খুব ভয়াবহ হবে না বলে আশা করছে পেট্রো বাংলা। জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মুরিং লাইনটি মেরামত হবে। ইতোমধ্যে সামিট গ্রুপ তাদের ঠিকাদারের কাছে ত্রুটি মেরামতের জন্য মতামত চেয়েছে। এই মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কাজ করা হবে।
দুটি টার্মিনালের সরবরাহ সক্ষমতা দিনে ১০০ কোটি ঘনফুট। গত ১৭ নভেম্বর সরবরাহ করা হয়েছিল ৬৩ দশমিক ৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস। ১৮ নভেম্বর ত্রুটি দেখা দিলেও সরবরাহ কমেনি। তবে ২২ নভেম্বর থেকে এলএনজির সরবরাহ কমতে শুরু করে। এদিন এলএনজি থেকে পাওয়া যায় ৫৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস। ২৮ নভেম্বর তা কমে দাঁড়ায় ৫৪ কোটি ঘনফুট গ্যাস। গতকাল মঙ্গলবার দুই টার্মিনাল থেকে গ্রিডে দেওয়া হয় ৫৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস।
সামিটের টার্মিনালটির সরবরাহ বন্ধ হলে এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৪০ থেকে ৪৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। ফলে সংকট বেড়ে যাবে। কারণ এমনিতেই দেশে চাহিদার চেয়ে গ্যাসের সরবরাহ কম। দৈনিক গ্যাসের মোট চাহিদা ৪৩০ কোটি ঘনফুট। এলএনজিসহ পেট্রো বাংলা বর্তমানে দিচ্ছে কম-বেশি ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস।
এদিকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে গতকাল একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট