চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২৭ নভেম্বর, ২০২১ | ১:০৫ অপরাহ্ণ

নগরীর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে নগরবাসী। ভূকম্পন অনুভূত হলেই এই আতঙ্ক যেন বেড়ে যায়। গতকাল (শুক্রবার) ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার পর নগরীতে কয়েকটি ভবন হেলে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। হেলে পড়া এসব ভবনের বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা আতঙ্কে রয়েছেন। নগরীতে কি পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে, এর কোনো তালিকাই করেনি সরকারি কোনো সংস্থা।

তবে সাত-আট বছর আগে নগরীর মধ্যে ৮৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা প্রণয়ন করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। তবে এখনো পর্যন্ত সেসব ভবন নিয়ে মাথা ব্যথা নেই কারো। অন্যদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক গবেষণায় জানা যায়, নগরীতে সরকারি-বেসরকারি ভবন মিলে এক লাখ ৮২ হাজার ভবনের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার ভবন ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ভবন নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এ তালিকা প্রণয়ন করা হয়।

গতকাল (শুক্রবার) ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটের দিকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।  বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৮। ঢাকা থেকে ৩৪৭ কিলোমিটার দূরে এর উৎপত্তি। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামসহ নোয়াখালী, ফেনী, বান্দরবান, জামালপুর, খুলনা, বাগেরহাট, কুড়িগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহীতে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে সিডিএ’র প্রধান নগর পরিকল্পবিদ শাহীনুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কোনো তালিকা করা হয়নি। তবে সাত-আট বছর আগে সিডিএ ঝুঁকিপূণ ভবনের একটি তালিকা করেছিল। সে সময় নগরীতে ৮৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে সিটি কর্পোরেশনকে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন সেসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (ইউএসটিসি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রাম শহরে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। এরমধ্যে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের ভবন রয়েছে। ঝুঁকিপূণ ভবন নিয়ে সম্প্রতি সিডিএ বা সিটি কর্পোরেশন কেউ কোনো কাজ করছে না। দুর্ঘটনা এড়াতে অবশ্যই দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক গবেষণায় জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় ১ লাখ ৮২ হাজারের মধ্যে এক লাখ ৪২ হাজার ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবন বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি করা হয়নি। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এ তথ্য উঠে আসে। ঝুঁকিপূণ ভবনের মধ্যে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে স্কুল, হাসপাতাল ভবন এবং বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে চুয়েট এ গবেষণায় অংশ নেয়।

বাংলাদেশের ভূকম্পন সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ভূমিকম্প উৎপত্তির তিনটি স্থান রয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডার, ভারত-মিয়ানমার বর্ডার এবং বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার। এই তিনটি জায়গা থেকে ৭ দশমিক ৫ থেকে ৮ দশমিক ৫ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়। যা আমরা শুক্রবার (গতকাল) ভোরে নমুনা দেখলাম। যখন ৫ দশমিক ৮ এবং ৬ দশমিক ১ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হয়েছে, আমরা অনুভব করেছি। কিন্তু ৭ দশমিক ৫ বা ৮ দশমিক ৫ রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প হলে আমাদের কি অবস্থা হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট