চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

টানা বর্ষণে সড়কে অসংখ্য খানা-খন্দ

ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

সীতাকু- সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু-

১৫ জুলাই, ২০১৯ | ২:২৬ পূর্বাহ্ণ

সীতাকু-ে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক ভেঙে বেহাল হয়ে পড়েছে। গত দুই সপ্তাহের টানা বর্ষণে সড়কে অসংখ্য খানা-খন্দ সৃষ্টি হওয়ায় চরম ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। ফলে যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এ নিয়ে ট্রাফিক কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন। এদিকে সড়ক সংস্কার শুরু হয়েছে বলে জানায় সওজ কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে সীতাকু-ের বড়দারোগারহাট থেকে চট্টগ্রামের প্রবেশপথ সিটি গেট পর্যন্ত এ উপজেলাধীন ৪৭ কি.মি. এলাকাতেই সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। অজস্্র খানা-খন্দে মহাসড়কে যান চলাচল রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মহাসড়কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়দারোগারহাট, ছোটদারোগারহাট, সীতাকু- পৌরসদর, ফকিরহাট, বাড়বকু-, কুমিরা প্রভৃতি স্থানে। পরিদর্শনকালে গাড়ি চালক ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে মহাসড়কে ছোট ছোট খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু এসব গর্ত সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় তা ক্রমশ বড় হতে হতে কোথাও কোথাও জলাশয়ে রূপ নিয়েছে। গতকাল (রবিবার) বিকালে পরিদর্শনকালে দেখা যায় বড়দারোগারহাট স্কেলের সামনের বিশাল গর্তে একটি লরি নামার পর সেটি রীতিমত আটকে যায়। চালক স্ট্যার্ট দিয়েও গাড়ি তুলতে পারছিলেন না। অনেকক্ষণ চেষ্টায় তিনি ঐ

এলাকা পার হবার পর রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। সীতাকু- পৌরসদর এলাকার শিবপুরের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন বলেন, আমি প্রতিদিন এই পথে গাড়িতে চলাচল করি। গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন দেখছি গর্তগুলো বড় হয়ে ওঠছে। কিন্তু কোন সংস্কার নেই। এ কারণে আরো বড় হয়ে ওঠছে গর্তগুলো। এখন গাড়িতে চলতে গিয়ে একটির পর একটি গর্তে পড়ে ঝাঁকুনিতে চরম বিরক্ত হয়ে ওঠছি। তিনি বলেন, দ্রুত এসব গর্ত সংস্কার না হলে যেকোন মুহূর্তে দুর্ঘটনায় প্রানহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
মহাসড়কের এক মাইক্রোবাস চালক মো. হানিফ বলেন, আমাদের জন্য এই মহাসড়ক এখন খুবই করুণ হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের সেই পুরোনো চিত্র দেখে আমি বিস্মিত এবং ভীত। মহাসড়কের সীতাকু- উপজেলা হলো বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রবেশমুখ। এখান দিয়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম বন্দর, বাণিজ্য কেন্দ্র খাতুনগঞ্জ, বিমান বন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে অগণিত যানবাহন আসা যাওয়া করে। তাই সড়কের এই অংশ সবসময় খানা-খন্দ মুক্ত রাখা জরুরি। কিন্তু কেন যে সওজ এই বিষয়ে উদাসীন তা জানি না।
সীতাকু- সদর ট্রাফিকের ইনচার্জ সার্জেন্ট মো. আল-আমিন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। সীতাকু- সদর বাস স্ট্যান্ডের উভয় দিকে অনেক বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। এসব গর্তে ছোট গাড়ি তো এক্সিডেন্ট হবেই, এমনকি বড় গাড়িও যেকোন সময় উল্টে যেতে পারে। আজ বেশ কয়েকদিন ধরে এ অবস্থা। কিন্তু এখনো কোন সংস্কার হচ্ছে না। গাড়ি চালকদের কি যে অবস্থা তা বর্ণনা করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, পৌরসদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম উভয়মুখী সড়কেই বড় বড় খানা-খন্দ হয়ে সড়ক চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। তাই বড় দুর্ঘটনার আগেই সড়ক সংস্কার খুবই জরুরি।
সড়কে প্রচুর গর্তের কথা জানান বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আবদুল আওয়াল। তিনি বলেন, আসলে এসব গর্তগুলো যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকে না। যা করার সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারাই করতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জুলফিকার আহমেদ বলেন, আসলে আমরা বৃষ্টির জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। আজ (রবিবার) থেকে কিছু কিছু স্থানে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। পুরো সড়ক সংস্কার করতে কয়েকদিন লাগতে পারে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সড়ক সংস্কার সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট