চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

নতুনদের মাঝে হতাশা: তৃতীয়ধাপে ইউপি নির্বাচন

ইফতেখারুল ইসলাম

১৬ অক্টোবর, ২০২১ | ১২:২৪ অপরাহ্ণ

দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮০ শতাংশের অধিক বর্তমান চেয়ারম্যান কিংবা গতবার মনোনয়ন পেয়েও হেরেছেন এমন প্রার্থীরাই আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যানরা তাই কিছুটা নির্বিকার। তবুও অন্যদের চেষ্টা-তদবিরের শেষ নেই। ইউনিয়নের রেজুলেশনের তালিকায় নিজের নাম এক নম্বরে রাখার চেষ্টা থেকে শুরু করে জেলা, কেন্দ্রীয় নেতা এমনকি প্রবাসী নেতাদের মাধ্যমেও সুপারিশ করানোর চেষ্টা চলছে। আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকায় পড়ে আছেন।

এবার তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে চট্টগ্রামের তিন উপজেলা হাটহাজারী, রাউজান এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে। নিজের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঘুম হারাম। ছুটছে নেতাদের পেছনে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাথে সমন্বয় করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ যে তালিকা তৈরি করছে তাতে ১ নম্বরে নিজের নাম রাখার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের তদবির করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তালিকায় নাম উপর কিংবা নিচে চলে যাওয়ার কারণে কিছু কিছু ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ নেতাদের মাঝে দ্বন্দ্বও তৈরি হচ্ছে। অধিকাংশ মনোনয়ন প্রত্যাশী মনে করছেন তালিকার এক নম্বরে নাম থাকলে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

দ্বিতীয় ধাপের আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যানরা। হাতেগোনা কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যতিক্রম হয়েছে। ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড এবং মিরসরাই উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৩টি ইউনিয়নেই আওয়ামীলীগ মনোনয়ন দিয়েছে তাদেরকেই যারা গতবারও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। মাত্র ৬টি ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। অর্থাৎ মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে ৮২ শতাংশই বর্তমান চেয়ারম্যান অথবা গতবার মনোনয়ন পেয়ে জিততে পারেননি এমন প্রার্থী রয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা দেখে সাধারণ নেতাকর্মীদের ধারণা জন্মেছে তালিকায় কার নাম কত নম্বরে আছে তা খুব বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে না। দলীয় এই নীতির কারণে অনেক জনপ্রিয় মনোনয়ন প্রত্যাশী যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি দায়িত্ব পালনকালে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড কিংবা জনসম্পৃক্ততা না থাকার কারণে জনপ্রিয়তা হারানো কিছু বর্তমান চেয়ারম্যানও মনোনয়ন পেয়ে যাচ্ছেন। এনিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে কিছুটা অসন্তোষও কাজ করছে।

ফটিকছড়ি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১৩টি ইউনিয়নে গতবার যারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন, এবারো আওয়ামীলীগ থেকে তারাই মনোনয়ন পেয়েছেন। একমাত্র ধর্মপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম মনোনয়ন পাননি। হারুয়ালছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টু গতবার মনোনয়ন পেয়ে হেরেছিলেন। এবারো তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি দিদারুল আলম গতবার মনোনয়ন পেয়ে হেরেছিলেন। এবারোও তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। পাইন্দং ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি শাহ আলম সিকদার মনোনয়ন পেয়ে হেরেছিলেন। এবারো তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। বাকি ১০ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানরা মনোনয়ন পেয়েছেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদে ৯জনই আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই উপজেলায় এবারের আওয়ামীলীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে একটিমাত্র ইউনিয়নে পরিবর্তন এসেছে। বাকি ৮ জন বর্তমান চেয়ারম্যানই মনোনয়ন পেয়েছেন।

অপরদিকে, মিরসরাই উপজেলায় ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১২টিতেই বর্তমান চেয়ারম্যান মনোনয়ন পেয়েছেন। বাকি চার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নতুন মুখ। মনোনয়নপ্রাপ্তরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট