চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রস্তুত বিটিসিএল

সারোয়ার আহমদ

১৪ অক্টোবর, ২০২১ | ১২:৪৪ অপরাহ্ণ

নগরীর ২৮ হাজার গ্রাহককে উচ্চগতির ‘জিপন’ (গিগাবিট প্যাসিভ অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক) ইন্টারনেট সংযোগ দিতে অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত কাজ শেষ করেছে সরকারি টেলিযোগযোগ ও ইন্টারনেট সেবা প্রদানকরী প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল। ইতোমধ্যে ১৯ হাজার গ্রাহককে সেবা দিতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে ২ হাজার ৩৭৬ টি ডেলিভারি পয়েন্ট। এরই মধ্যে বিটিসিএল এর এই জিপন ইন্টারনেট সেবা নিয়েছেন নগরীর ৬৬০ জন গ্রাহক। নগরীর ৮টি এক্সচেঞ্জ থেকে দেওয়া হবে ২৮ হাজার গ্রাহকের জিপন সংযোগ। এর মধ্যে নন্দনকানন থেকে ১০ হাজার, আগ্রাবাদ থেকে ৬ হাজার, বায়েজিদ থেকে ৩ হাজার, মুরাদপুর থেকে ৩ হাজার, সাগরিকা থেকে ৩ হাজার, পাহাড়তলী থেকে ১ হাজার, সলিমপুর থেকে ১ হাজার এবং কালুরঘাট এক্সচেঞ্জ থেকে ১ হাজার ‘জিপন’ সংযোগ দেয়া হবে। সব মিলিয়ে ২৮ হাজার গ্রাহক পাবে এই সংযোগ। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে হাইস্পিড শেয়ারড ব্যান্ডউইথ সেবার এই ইন্টারনেট নেওয়া যাবে টেলিফোন সংযোগসহ কিংবা টেলিফোন সংযোগ ছাড়াই।
‘জিপন’ ইন্টারনেট সংযোগ ভূগর্ভস্থ (আন্ডারগ্রাউন্ড) অপটিক্যাল ফাইবার তারের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে বলে এই লাইন কাটা পড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংকাও অনেক কম বলে জানান বিটিসিএল চট্টগ্রাম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সৌমিত চাকমা। তিনি পূর্বকোণকে জানান, সরকারি অন্যান্য সেবা সংস্থা যেমন ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন বা কর্ণফুলী গ্যাস তাদের প্রকল্পের কাজ করার সময় খোঁড়াখুড়ি করতে গিয়ে লাইন কেটে ফেলা ছাড়া সাধারণত ভূগর্ভস্থ এই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া বিটিসিএল’র ডেলিভারি পয়েন্ট থেকে গ্রাহকের বাসায় যে ওভার হেড (ঝুলন্ত তার) তারের সংযোগ দেওয়া হয় সেটি কেউ ইচ্ছাকৃত ক্ষতি না করলে জিপন সংযোগ নিরবচ্ছিন্নই থাকবে। অন্যান্য ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংস্থার যেখানে রাস্তার খুটির তার কাটা পড়লেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সেখানে জিপনে এই অসুবিধা থাকছে না। এটি অন্যান্য ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে বিটিসিএল’র জিপিনের বড় একটি পার্থক্য। তাই এই সংযোগ অধিকতর নিরাপদ।
জিপন সংযোগের মাসিক চার্জ : সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে এই সংযোগ দেয়া হচ্ছে স্বল্প মূল্যে। শুরুতে ২ এমবিপিএস থেকে ২০ এমবিপিএস এর প্যাকেজ রাখা হলেও সেটি বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করে ৫ এমবিপিএস থেকে ৩০ এমবিপিএস এর প্যাকেজে রুপান্তর করা হয়েছে। টেলিফোন সংযোগসহ জিপন ৫ এমবিপিএস কানেকশনের মাসিক চার্জ ৫০০টাকা, ১০ এমবিপিএস ৭৫ ০টাকা, ১৫ এমবিপিএস ১ হাজার টাকা, ২০ এমবিপিএস ১২ শ টাকা, ২৫ এমবিপিএস ১৪ শ এবং ৩০ এমবিপিএস ১৬ শ টাকা মাসিক চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সকল প্যাকেজে আনলিমিটেড ডাটা ট্রান্সফার এবং ইউটিউব, ফেসবুকে ৩০ এমবিপিএস ক্যাশ স্পীড দেওয়া হয়েছে।
যেভাবে পাওয়া যাবে জিপন সংযোগ : বিটিসিএল এর জিপন সংযোগ নিতে চাইলে একজন গ্রাহককে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। বিটিসিএল এর ওয়েবসাইট লিংক (http://mybtcl.btcl.gov.bd) এ গিয়ে গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও ইমেইল তথ্য দিয়ে একটি নিবন্ধন করে নিতে হবে। নিবন্ধন সম্পন্ন করে ব্যবহারকারী তার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর জিপন সংযোগের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ওই ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়েই গ্রাহক তার মাসিক বিল দেখতে পারবেন এবং পরিশোধও করতে পারবেন। এছাড়া বিটিসিএল এর অন্যান্য সব সার্ভিস নেওয়া ও কোনো অভিযোগ থাকলে তা-ও জানাতে পারবেন।
উল্লেখ্য আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন সুবিধা গড়ে তোলার পাশাপাশি টেলিফোন ব্যবহারের হার বাড়ানোর লক্ষ্যে বিটিসিএল তাদের এক্সচেঞ্জগুলোর যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন করছে। কপার ট্রান্সমিশন লাইনের পরিবর্তে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে দেশব্যাপী টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ফলে ভয়েস কলের পাশাপাশি ইন্টারনেট ও ভিডিও আদান-প্রদানের সুযোগ বাড়ছে। এর মাধ্যমে জনসাধারণ কম দামে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পাচ্ছে। এরই মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ফোনের সংযোগ, ই-গভর্নেন্স, ই-কমার্স, ই-এডুকেশন, ই-হেলথ, ই-কৃষি ও অন্যান্য সুযোগ যুক্ত করেছে বিটিসিএল। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে আধুনিকায়ণ করে পুরনো জৌলুস ফিরে পেতে কাজ করছে সরকারি এই টেলিযোগাযোগ সংস্থা বিটিসিএল।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট