চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সংসদে উঠার অপেক্ষায় বন্দর আইন ২০২০

পাস হলেই বন্দরের তহবিল থেকে চসিক পাবে ১% রাজস্ব

ইফতেখারুল ইসলাম

১৩ অক্টোবর, ২০২১ | ১২:৫৫ অপরাহ্ণ

সংসদে উঠার অপেক্ষায় প্রস্তাবিত পোর্ট আইন ২০২০। এই আইন পাস হলেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) বন্দরের তহবিল হতে আয়ের ১ শতাংশ পাবে। বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, বন্দর আইন ২০২০ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছিল। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং এবং মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে অনুমোদন হয়ে সংসদে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রস্তাবিত পোর্ট আইন ২০২০ এর একটি ধারায় তহবিলের ব্যবহার সম্পর্কে বলা আছে, বন্দরের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় তহবিল হতে নির্বাহ করা যাবে। চেয়ারম্যান, সদস্য ও কর্মচারিদের বেতন-ভাতা ও আনুষাঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় তহবিল হতে নির্বাহ করা যাবে। তহবিল হতে আয়ের এক শতাংশ রাজস্ব স্থানীয় সিটি কর্পোরেশনকে প্রদান করা যাবে।

জানতে চাইলে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, বন্দর আইন ২০২০ অনুমোদন হলেই সিটি কর্পোরেশন বন্দরের তহবিল থেকে ১ শতাংশ রাজস্ব পাবে। তবে বন্দর নগরীর অবকাঠামো মূলত ব্যবহার করে বন্দরকেন্দ্রিক পণ্যবাহী ভারী যানবাহনগুলো। এসব ভারী যানবাহনের কারণে নগরীর সড়কসমূহের প্রতিনিয়ত উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা দরকার হয়। এই খাতে প্রতি বছর সিটি কর্পোরেশনের বড় অংকের অর্থ ব্যয় হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সচল রাখার জন্য সিটি কর্পোরেশনকে আর্থিকভাবে সক্ষম করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে বন্দরের উপর অকট্রয় (নগর শুল্ক) বসানোর বিষয়ে তিনি বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবেন বলে জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তহবিলের এক শতাংশ রাজস্বের সাথে হোল্ডিং ট্যাক্সের কোন সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ আইন পাসের পর বন্দরের তহবিল থেকে ১ শতাংশ রাজস্ব পাবে চসিক। একইসাথে হোল্ডিং ট্যাক্সও পাবে।

বন্দর সূত্র জানায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বন্দরের মোট আয় হয় ৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খরচ হয় ১৮৮৯ কোটি টাকা। ভ্যাট এবং ট্যাক্স পরিশোধ করে ৪৭৫ কোটি টাকা। বছরশেষে তহবিলে থাকে ৭২১ কোটি টাকা। প্রতিবছর বন্দরের আয় বাড়ছে। আইন পাস হলে এই তহবিল থেকেই ১ শতাংশ পাবে চসিক। আইন অনুমোদনের পর বন্দরের তহবিল যত বড় হবে চসিকের আয়ও তত বাড়বে। বর্তমান জাতীয় সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা আইনে সিটি কর্পোরেশনেক ১ শতাংশ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তা বন্দরের বাৎসরিক মোট আয় থেকে নয়। আয়-ব্যয় করে বছরশেষে যে তহবিল অবশিষ্ট থাকবে তার এক শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষ থেকে বন্দর আইন ২০২০ পাঠানো হয় বছর দুয়েক আগে। তবে তাদের প্রস্তাবিত আইনে সিটি কর্পোরেশনকে ১ শতাংশ রাজস্ব দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। চসিকের সাবেক প্রশাসক আলহাজ খোরশেদ আলম সুজন ৬ মাসের জন্য দায়িত্ব নেয়ার পর মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন। যাতে বন্দরের আয় থেকে সিটি কর্পোরেশনকে ১ শতাংশ রাজস্ব দেয়া হয়। তার স্লোগান ছিল গৃহকর না বাড়িয়ে সিটি কর্পোরেশনকে আর্থিকভাবে সক্ষম করে তোলা। যার লক্ষ্য নিয়ে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা যারা চট্টগ্রাম শহরের অবকাঠামো ব্যবহার করে ব্যবসা করছে তাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের উদ্যোগ নেন। তারই ফলস্বরূপ চসিক বন্দর থেকে ১ শতাংশ রাজস্ব পেতে যাচ্ছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট