রাজধানীর উত্তরা ও কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানা এলাকা থেকে গার্মেন্টস পণ্য চুরির সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাসহ ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা (ডিএমপি) পুলিশ। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা ৪ হাজার ৭০৫ পিস গার্মেন্টসে তৈরি পোশাকসহ ২টি কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. সাহেদ ওরফে সিলেটি সাঈদ, রাজ্জাক, ইউসুফ, মাইনুল, আলামিন, দুলাল হোসেন ও খায়রুল।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব কথা বলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১১ মে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জয়ন্তি নীট ওয়্যার লি. মেসার্স বেলায়েত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে কাভার্ডভ্যান যোগে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে বিদেশে রপ্তানীর জন্য ২৮ হাজার ৮২০ পোশাক শিপমেন্ট করে। বিদেশে ক্রেতার কাছে পণ্যের চালানটি পৌঁছানোর পর দেখা যায় প্রতিটি কার্টুনে ২০/৪০ পিস করে সর্বমোট ১১ হাজার পিস পণ্য কম রয়েছে। বিদেশি বায়ার ওই মালের ক্ষতিপূরণ বাবদ জয়ন্তি নীট ওয়্যারকে ২৮ হাজার ৯০৮ ডলার জরিমানা করে। এতে প্রতিষ্ঠানটির আর্ন্তজাতিক সুনামও ক্ষুন্ন হয়। এ ঘটনায় ১২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা রুজু হয়।

তিনি আরও বলেন, মামলার পর গোয়েন্দা তেজগাঁও জোনাল টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই মামলার অভিযুক্তদের শনাক্ত করে। পরবর্তীতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহিউদ্দিন, মোবারক, ইব্রাহিম ও কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভার এমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠালে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার ও জড়িত পলাতক অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর নেটওয়ার্ক ক্লোথিং লিমিটেড নামের গার্মেন্টসের ১৭ হাজার ১৫২ পিস তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশে চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা হয়। ওই ঘটনায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গার্মেন্টস পণ্য চুরি সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতা সিলেটি সাঈদসহ সাত জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের একটি টিম। পরে ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরীর উত্তরা এলাকা থেকে চোরাই গার্মেন্টস মালামাল ও ১টি কাভার্ডভ্যানসহ রাজ্জাক, ইউসুফ ও মাইনুল, খায়রুলকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার নিমসার এলাকা থেকে চোরাই গার্মেন্টস মালামাল ও ১টি কাভার্ডভ্যানসহ আল-আমিন ও দুলালকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে উক্ত চক্রের মূল হোতা মো. সাহেদ ওরফে সিলেটি সাঈদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাহেদের বিরুদ্ধে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ২৪টি মামলা রয়েছে। সাহেদ চট্টগ্রামে ৬টি মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছিলো।

গ্রেপ্তারকৃত সাহেদ প্রায় ৫ সহস্রাধিক ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থেকে বিভিন্ন সময় কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য চুরি করেছে মর্মে জানান পুলিশের এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা। গ্রেপ্তারদের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় রুজুকৃত মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

পূর্বকোণ/পিআর/এসি