চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ডেইরি শিল্পের উন্নতি, মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনে সরকারের সিদ্ধান্ত

কোরবানির পর্যাপ্ত পশু এবারো গরু আমদানি বন্ধ

ঈদে পশুর সংকট হবে না, উদ্বৃত্ত থাকবে : প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর

ইফতেখারুল ইসলাম

১০ জুলাই, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

এবারো দেশে উৎপাদিত গবাদি পশু দিয়েই পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণ হবে। তাই বৈধ এবং চোরাই পথে গরু আনা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। মূলত দেশীয় ডেইরি শিল্পের উন্নতি এবং মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত। তাতে কোরবানির ঈদে পশুর সংকট হবে না বলে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলার সব উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের মাধ্যমে নিরাপদ মাংস উৎপাদনে পশু হৃষ্টপুষ্টকরণের তথ্য তারা হালনাগাদ করেছেন। তাতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম জেলায় মোট গবাদি পশু (গরু) রয়েছে চার লাখ ১৪ হাজার ৩৮৭টি। এছাড়া মহিষ রয়েছে ৪৮ হাজার ২৮৪টি। ছাগল এবং ভেড়া রয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৪৮টি। মোট পশুর সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ ১০ হাজার ২১৯টি। তিনি জানান, এখানে প্রতিটি উপজেলার ঘরে ঘরে গিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের সদস্যরা গবাদি পশু গণনা করেছে।
গত বছর চট্টগ্রামে কোরবানি হয়েছে মোট ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৪১৫টি পশু। এরমধ্যে ছাগল এবং ভেড়া ছিল দুই লাখ ৬৮০টি। মহিষ ৩৩০৯টি। গবাদি পশু (গরু) ছিল চার লাখ ৫১ হাজার ৪২৩টি। অর্থনীতির উপর নির্ভর করে প্রতিবছর পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ পশু বেশি জবাই হয়। সেই হিসেবে আসন্ন কোরবানিতে চট্টগ্রামে মোট পশুর সম্ভাব্য চাহিদা রয়েছে সাত লাখ ২০ হাজার ৯৫৭টি। এতে চিন্তার কোন কারণ নেই উল্লেখ করে বলেন, গতকালের সর্বশেষ হিসেবে অনুযায়ী এই সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করা হলেও এখন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু নিয়ে আসছে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য। অর্থাৎ চট্টগ্রামে প্রতিদিন কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বাড়ছে।
এবার কোরবানির পশুর বাজার সম্পূর্ণ দেশীয় উৎপাদনের উপর নির্ভর করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে পশু আমদানির ক্ষেত্রে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। কারণ বিদেশ থেকে গরু আনা হলে আমাদের কৃষকরা ন্যায্য দাম পান না। অপরদিকে বিদেশি গরুর মাধ্যমে নানা রোগ ব্যাধি দেশীয় গরুর মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে কোরবানির পড়ে কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।



তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরপরই শুরু হয়ে যায় ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রস্তুতি। বিশেষ করে কোরবানির পশুর সরবরাহ, দাম ইত্যাদি নিয়ে বিক্রেতা এবং কোরবানিদাতারা চিন্তায় থাকেন। কিন্তু এবার ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ ঠকবে না উল্লেখ করে বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে কোরবানিযোগ্য পশু গণনা গত এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) গণনা সম্পন্ন হয়েছে। চাহিদার তুলনায় চট্টগ্রামে পশু উৎপাদনের সংখ্যা কিছুটা কম। কারণ চট্টগ্রাম হচ্ছে শিল্প ও বাণিজ্যিক অধ্যুষিত এলাকা। তাই এখানে পশু লালন-পালন তুলনামূলক কম কিন্তু কোরবানির পশুর চাহিদা বেশি। গতবারও স্থানীয় উৎপাদন কিছুটা কম ছিল। কিন্তু দেশের অনেক জেলা আছে যেখানে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি গরু, ছাগল, ভেড়া এবং মহিষ লালন-পালন করা হয়। সেসব জেলা থেকে বাকি পশুগুলো এসেছিল। সুতরাং এবারের কোরবানিতে পশু সংকটের কোন আশংকা নেই। গতবছর পশু আমদানি না করা সত্ত্বেও সারাদেশে এক কোটি ১৩ লাখ পশু কোরবানি হয়েছিল। কিন্তু কোন পশু সংকট হয়নি। এবারো কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট