চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আটকে পড়া দুই লাখ প্রবাসীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান শীঘ্রই

মোহাম্মদ আলী 

৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ | ১:৩০ অপরাহ্ণ

খুব সহসা শুরু হচ্ছে করোনাকালীন দেশে এসে আটকে পড়া দুই লাখ প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম। প্রথম পর্যায়ে কুমিল্লায় পাইলটিং কার্যক্রম চলবে। সেখান থেকে সুবিধা ও অসুবিধাগুলো পর্যালোচনা করে দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় প্রতিজন প্রবাসী প্রাথমিক পর্যায়ে পাবেন সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। এ লক্ষ্যে ৪২৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বিশ্বের ১৭৫টি দেশে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। করোনার মহামারীর কারণে তাদের অনেকেই কাজ হারিয়ে দেশে ফেরত এসেছেন।

২০২০ থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত দেশে ফেরত আসা এমন কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ফিরে গেলেও তাদের সংখ্যা খুব অল্প। বেশিরভাগ প্রবাসীই আর কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি, দেশে থেকে গেছেন। কাজ হারিয়ে ফেরত আসা এসব প্রবাসীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে ভবিষ্যৎ নিয়েও তারা রয়েছেন চরম উদ্বেগ আর শঙ্কায়। তাদের মধ্যে দুই লাখ প্রবাসীকে সরাসরি অনুমোদিত এই প্রকল্পের আওতায় নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীরা কাজ হারিয়েছেন। তাদের বড় একটি অংশ ফিরে এসেছেন দেশে। তাদের অনেকেই আর কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারছেন না। এসব প্রবাসীর পাশেই দাঁড়াচ্ছে সরকার। দেশে ফিরে আসা দুই লাখ প্রবাসীর প্রত্যেককে দেওয়া হবে ১৩ হাজার ৫শ টাকা।

এছাড়া তারা যেন দেশেই কিছু করতে পারেন, সে জন্য দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা। আর এসব কিছু করার জন্যই ৪২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পের অধীনেই দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তাসহ কর্মসংস্থান সৃজন করা হবে।’ গত জুলাইতে ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের জন্য অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় একনেক।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হবে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে ৪২৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। সূত্র জানায়, এই প্রকল্পে অধীনে করোনা ধাক্কা সামলাতে প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য আরপিএলের মাধ্যমে সনদ দেওয়ার পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তৈরি করা হবে পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের জন্য প্রত্যাগত অভিবাসীদের আর্থিক, কারিগরি ও অন্যান্য সুবিধাও দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের সংযোগ স্থাপন করে দেওয়া হবে। কর্মসংস্থান তৈরির জন্য বিভিন্ন উৎপাদনশীল কার্যক্রম ও ছোট ব্যবসায়ের উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে। ফলে প্রবাসীরা নিজেদের দক্ষতা ও পছন্দ অনুযায়ী চাকরি বা ব্যবসায়িক উদ্যোগে যুক্ত হতে পারবেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট