চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিভাগ-রেল কর্তৃপক্ষের বৈঠক

রেল হাসপাতাল দ্রুত সচলে নানা উদ্যোগ

ইমাম হোসাইন রাজু 

১২ আগস্ট, ২০২১ | ১২:২৯ অপরাহ্ণ

অবশেষে রেলওয়ে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের সংকট সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রামের এক শিল্প প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে হাসপাতালে রোগী ভর্তির উপযুক্ত করে তুলতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপনসহ পানির সমস্যা সমাধানেও উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে চায় সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে হাসপাতালটিকে চিকিৎসা সেবার শতভাগ উপযুক্ত করতে অন্যস্থান থেকে চিকিৎসক-নার্সসহ জনবল নিরসনেরও চেষ্টা চলছে।

গতকাল বুধবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্যবিভাগসহ জনপ্রতিনিধি এবং বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনায় এসব সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আলোচনায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুলসহ ওই শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রেলওয়ে কোভিড হাসপাতালে রোগী ভর্তি না হওয়ার কারণ এবং নানা সমস্যা ও সংকট তুলে ধরে গত ১০ আগস্ট দৈনিক পূর্বকোণে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে। যদিও এর আগেই এসকল সমস্যা সমাধাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরবর্তীতে রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুরোধে ওই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি হাসপাতালটিকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপনসহ সমস্যা সমাধানে মত প্রকাশ করেন। যা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠকেও বসেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত সমস্যা সমাধানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। পানির যে বিষয়টি সেটি সমাধানসহ সার্র্বিক সহযোগিতা করবেন। করোনা রোগীদের ভর্তি করতে হাসপাতাল ছেড়ে দেয়াসহ আগে থেকেই উনারা (রেল কর্তৃপক্ষ)  ভালোভাবেই সহযোগিতা করছেন। ইতোমধ্যে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করে দেবেন। বুধবার সকলেই হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছি। আশা করছি সবগুলো কাজ শেষ হলে রোগীদের ভর্তি হতে আর সমস্যা থাকবে না।’

রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হক চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘হাসপাতালটিকে নতুন করে সংস্কার করতে যা প্রয়োজন তা করা হবে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন, পানির সংকট দূর এবং ওয়াশরুমসহ সকল কিছুই করা হবে। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান এসব করবেন। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে।’

‘শিল্প প্রতিষ্ঠান সংস্কারসহ রোগীদের সেবা উপযুক্ত করে দিলেও জনবল আর ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেয়া হবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। যদি ডাক্তার-নার্সরা থাকে, তাহলে পুরোদমে হাসপাতালটি আবার তার গতি ফিরে পাবে। ফলে করোনার এই সংকটময় মুহূর্তে চিকিৎসা সেবা পেতে সমস্যা হবে না রোগীদের বলেন তিনি।’

এর আগে গত বছরের ২ জুন করোনা উপসর্গের রোগীদের ভর্তির মাধ্যমে সিআরবির রেলওয়ে হাসপাতালটিকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু করা হয়। কাগজে-কলমে স্বাস্থ্য বিভাগ তা একশ শয্যার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে ৫৬ শয্যা দিয়েই চালু করা হয়। তবুও একদিনের জন্যও হাসপাতালটি অর্ধেক রোগীও পায়নি। করোনা মহামারীর শুরুর দিকে বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি না হতে পেরে যে কয়জন রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাও ধীরে ধীরে রোগীশূন্য হওয়া শুরু হয়। যদিও হাসপাতালটিকে সচল রাখতে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য করা হয় কোয়ারেন্টিনও। কিন্তু তাতেও ফল পাওয়া যায়নি। মূলত হাসপাতালে পানি, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা, যন্ত্রপাতি, জনবল, কোভিড চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকাসহ নানা কারণে এখানে রোগীদের ভর্তি হতে অনীহা রয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট