চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চাঞ্চল্যকর কোকেন মামলার বিচার শুরু

আদালত প্রতিবেদক

৩০ এপ্রিল, ২০১৯ | ৩:১৩ পূর্বাহ্ণ

তরল সানফ্লাওয়ার তেলের নামে কোকেন আনার ঘটনায় খানজাহান আলী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিচালক যথাক্রমে নুর মোহাম্মদ (৪৯) ও তাঁর ভাই মোস্তাক আহমেদসহ (৪৫) ১০ জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় চার্জগঠন করা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. আকবর হোসেন মৃধা-এর আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের অভিযোগ পড়ে শোনান মহানগর পিপি। নুর মোহাম্মদ ও মোস্তাক আহমেদসহ ৫ জন পলাতকের বিরুদ্ধে তাঁদের অনুপস্থিতিতেই অভিযোগ গঠন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
অভিযুক্তরা হলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ দুই নাগরিক ফজলুর রহমান ও মো. বকুল মিয়া (৩১), খানজাহান আলী গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা সোহেল (৩৯) (হাজতে), কসকো শিপিং বিডি লাইনের কর্পোরেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ব্যবস্থাপক এ. কে আজাদ (৪৮), গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান ম-ল গ্রুপের কমার্শিয়াল এক্সিকিউটিভ আতিকুর রহমান (২৯) (হাজতে), সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তা মেহেদী আলম (৩১), সিএন্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম (৩২) ও ডেভেলপার মোস্তফা কামাল (৪২)। মেহেদী এর আগে জামিনে ছিলেন, গতকাল অভিযোগ গঠনের ধার্য তারিখে হাজির না হওয়ায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়। গতকাল কারাগার থেকে সোহেল ও আতিককে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা অভিযুক্ত আজাদ, সাইফুল ও মোস্তফা কামাল আদালতে হাজির ছিলেন। তাদেরকে অভিযোগ পড়ে শোনালে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করায় আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৯ মে তারিখ ধার্য করেন।
২০১৫ সালের জুনে সানফ্লাওয়ার তেল আমদানির ঘোষণা দিয়ে অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে কোকেন নিয়ে আসে বিদেশ থেকে। ১০৭টি ড্রামে পরীক্ষা চালিয়ে দুটিতে কোকেন পাওয়া যায়। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের হওয়া মামলাটি অধিকতর তদন্তে রয়েছে। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২০ নভেম্বর প্রথম দফায় চার্জশিট দেয় গোয়েন্দা বিভাগ। এরপর ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয়। কিন্তু কোকেন আনার কয়েক হোতা চার্জশিট থেকে বাদ পড়ায় রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট আদালতে নারাজি দাখিল করেন। তাই আদালতের নির্দেশে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের মামলাটি অধিকতর তদন্তে রয়েছে। মাদক মামলায়ও ২০১৫ সালের ২০ নভেম্বর ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষ নারাজি দাখিল করলে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল আরো দুইজনকে সংযুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের হওয়া মামলায় গতকাল ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মহানগর পিপি এডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, জামিনপ্রাপ্ত ও হাজতে থাকা আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন আসামিরা। উভয়পক্ষের শুনানিশেষে আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের নির্দেশ দেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের (সংশোধনী-২০০৪) ১৯(১) এর ১(খ) ও ৩৩(১),২৫ ধারার অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে। আদালত ১৯ মে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট