চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সংকটেও আইসিডিতে বেড়েছে রপ্তানি পণ্যের হ্যান্ডলিং

সারোয়ার আহমদ

৪ আগস্ট, ২০২১ | ১২:০৭ অপরাহ্ণ

শতভাগ রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করা দেশের ১৯টি অফডক তাদের সংকট কাটিয়ে পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরছে। গড়ে প্রতিদিন ২২শ টিইইউস রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার জাহাজীকরণের মাধ্যমে অফডক থেকে খালি হচ্ছে। অথচ কিছুদিন আগেও এ চিত্র ছিল পুরো উল্টো। প্রতিদিনই বেড়েই চলছিল রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার। কিন্তু সে হিসেবে জাহাজীকরণ সম্ভব হচ্ছিল না। রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার কমার পেছনে তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এবিষয়ে বেসরকারি অফডকসমূহের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর্টস এসোসিয়েশনের (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদার পূর্বকোণকে বলেন, রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার কমার পেছনে তিনটি কারণ উল্লেখযোগ্য। এগুলো হলো, কিছুদিন আগে শিপিং এজেন্টরা রপ্তানি পণ্যের নতুন কনটেইনার বুকিং দিচ্ছিল না। সেটি আবার চালু করেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ আগে যেখানে ১১টি জাহাজ বার্থিং দিতো সেটি বাড়িয়ে ১২টি করেছে এবং একই সাথে কলম্বোগামী জাহাজকে প্রায়োরিটি বার্থিং দিচ্ছে। এসব কারণে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার জাহাজীকরণ বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার কমার পেছনে আরো একটি ব্যাপার কাজ করেছে, সেটি হলো ঈদুল আজহা ও কঠোর লকডাউনে ১২দিন সব ধরনের কারখানা বন্ধ রাখায় নতুন করে রপ্তানি পণ্য আসেনি। এই সুযোগে অফডকে থাকা রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ করায় এর পরিমাণ কমেছে। এদিকে রপ্তানি পণ্যের কারখানা খুলে দেওয়ায় আগামীতে আবারো রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের চাপ বাড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন। তিনি বলেন, অফডক থেকে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার কমার প্রধান কারণ ছিল ঈদের ছুটি ও লক ডাউনে কারখানা বন্ধ থাকা। তবে এখন যেহেতু কারখানা আবার খুলে দেওয়া হয়েছে সেহেতু আগামী ১২/১৫ দিনের মধ্যে আবারো রপ্তানি পণ্য অফডকগুলোতে আসা শুরু করবে। তাই এখন যে পরিমাণে রপ্তানির জন্য জাহাজ পাওয়া যায় এবং কলম্বোগামী জাহাজ বার্থিং পায় সেটি আরো অন্তত মাস খানেক বহাল রাখতে হবে। অন্যথায় আবারো রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের চাপ অফডকে বাড়ার শঙ্কা থেকে যাবে।
সম্প্রতি সিংঙ্গাপুর ও কলম্বো পোর্টসহ ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টগুলোতে অতিরিক্ত কনটেইনারের কারণে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের নতুন কনটেইনার বুকিং সাময়িক বন্ধ করে দেয় কনটেইনার ভাড়া প্রদানকারী কিছু লাইন অপারেটর। অন্যরাও বাড়িয়ে দেয় অতিরিক্ত চার্জ। এর পাশাপাশি টান্সশিপমেন্ট পোর্টগুলোতে ইউরোপ আমেরিকাগামী মাদার ভেসেল কমিয়ে দেয় শিপিং কোম্পানির প্রিন্সিপাল অফিসগুলো। ফলে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টগুলোতে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্য জমে যায়। এছাড়া দেশের অফডকগুলোতেও রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার জমে যায়। ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট হিসেবে কলম্বো পোর্ট বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ রপ্তানি পণ্য পরিবহন করে এবং সিংঙ্গাপুর পোর্ট করে প্রায় ৩৫ শতাংশ। বাকি কনটেইনার পরিবহন করে পোর্ট কেলাং ও তাজিং পেলাপাস।
ওই জট নিরসনে উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কলম্বোগামী বিশেষ ৭টি জাহাজের ব্যবস্থা করা হয় এবং ওই রুটের জাহাজকে প্রায়োরিটি দেওয়া হয়। ফলে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি পণ্য অফডক থেকে জাহাজীকরণ সম্ভব হয়। এর ফলেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে থাকে অফডকগুলোর রপ্তানি পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট