চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঢিলেঢালা লকডাউনে বেপরোয়া মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

৩ আগস্ট, ২০২১ | ১:০০ অপরাহ্ণ

বাস ভর্তি যাত্রী নিয়ে সড়কে চলছে গণপরিবহন। হোটেলগুলোতে পার্সেলের পাশাপাশি ক্রেতা বসিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে খাবার। উন্মুক্ত বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ঘোরাঘুরি করছেন নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ। দোকান খুলে বিকিকিনি শুরু হয়েছে মার্কেটে। পুরোদমে চলছে পোশাক শিল্প কারখানা। সবমিলিয়ে বেড়েছে মানুষের চলাচল।  ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে মানুষের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও এসবের ধার ধারছেন না কেউ। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির মধ্যেও সামাজিক দূরত্ব না মেনে মাস্ক ছাড়াই ঘরের বাইরে আসছেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষ। দিন দিন করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটলেও থামছে না বেপরোয়া চলাচল।

দেশে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপট কমাতে কয়েক দফায় কঠোর বিধিনিষেধের পর গত ২৩ জুলাই থেকে ফের ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এসময় সবকিছু বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও দিন যত গড়াচ্ছে আস্তে আস্তে দোকানপাট খুলছে। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি চলছে গণপরিবহনও। ১ আগস্ট পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার পর লকডাউন এখন অনেকটাই ঢিলেঢালা। গতকাল নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ না মেনেই জীবিকার প্রয়োজনে দৈনন্দিন কাজে বের হচ্ছেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অধিকাংশ মানুষ। পুলিশের সঙ্গে লোকচুরি খেলে মার্কেট, অভিজাত শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, হোটেল খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। হোটেলগুলোতেও ক্রেতা বসিয়ে খাবার পরিবেশন করা হেেয়ছে।

পোশাক কর্মীদের কর্মস্থলে ফিরতে ৩১ জুলাই সন্ধ্যা থেকে ১ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে গতকালও সারাদিন নগরীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। দূরপাল্লার যাত্রীও পরিবহন করা হয় কোনো কোনো গণপরিবহনে। শহরের মধ্যে চলা গণপরিবহনে মাস্ক না পরেই চলাচল করেছেন যাত্রীরা।

সকালে কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার, দুই নম্বর গেট কাঁচাবাজার, চকবাজার কাঁচাবাজার, রেয়াজুদ্দিন কাঁচাবাজারসহ অধিকাংশ বাজারে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কেনা-বেচা হয়েছে। বিকেলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল এলাকা, অভয়মিত্র ঘাট, কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকা, সিটি আউটার রিং রোড, কাট্টলী রাণি রাসমনি ঘাট এলাকাসহ উন্মুক্ত স্থানে ভিড় করেন বিনোদনপ্রেমী মানুষ।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে ঘরে রাখতে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। ডিসি স্যারের নির্দেশে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় প্রতিদিন ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। অকারণে বাইরে ঘোরাঘুরি, মাস্ক ছাড়া চলাফেরা এবং দোকান পাটে অনিয়ম দেখলে তারা জরিমানা করছেন।

তিনি বলেন, গতকাল সোমবারও অভিযান চালিয়ে বিধিনিষেধ না মানায় ১৫৪ মামলায় ৭৩ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আগে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। জরিমানা করে, শাস্তি দিয়ে মানুষকে বিধি নিষেধ মানানো কঠিন। তাই অভিযানে মাস্ক বিতরণ, মানুষকে সচেতন করতে মাইকিংসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) আরফাতুল ইসলাম পূর্বকোণকে জানান, মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম। আমরা সেদিকেই বেশি জোর দিচ্ছি। আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। লকডাউনে গণপরিবহন বের করায় এবং বিধিনিষেধ না মানায় সোমবার ২০৭ টি মামলা দায়ের করেছে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সময় ২২২টি গাড়িও আটক করা হয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট