চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনীয়া-বাইশারী যাতায়াতে দুর্ভোগের শেষ নেই

দেড় যুগ ধরে উন্নয়নবঞ্চিত যে সড়ক

শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি

৩১ জুলাই, ২০২১ | ৭:৩২ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনীয়া-বাইশারীর সাথে সংযুক্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক অবহেলা ও অযত্নে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে বাইশারী ইউনিয়নে যেতে হলে পাড়ি দিতে হবে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনীয়া ইউনিয়নের ৭ কিলোমিটার সড়ক পথ। যে সড়ক দিয়ে প্রতিদিন তিন ইউনিয়ন বাইশারী, ঈদগড়, গর্জনীয়ার হাজারো মানুষ চলাচল করেন। যুগ যুগ ধরে সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে যাতায়াত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি।

গর্জনীয়া ও বাইশারীর স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দেড় যুগ আগে সড়কটি ব্রিকসলিন করা হয়। আর সেই থেকে আজ পর্যন্ত কোন ধরনের মেরামত বা সংস্কার হয়নি। যে কারণে হাজারো মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

স্থানীয়রা আরও জানান, গত দুই বছর আগে হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম বাইশারী-গর্জনিয়া সড়ক মেরামতের দাবিতে শত শত লোকজন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তাছাড়া সড়কটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে বেশ কয়েকবার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি পড়েনি।

বর্তমানে সড়কটির বড়বিল ইস্কান্দারের বাড়ির পার্শ্ববর্তী এলাকা, থোয়াইংগা বাজারের পাশে, আদর্শ শিক্ষা নিকেতন সংলগ্ন স্থানে, থীমছড়ি বাজারের উত্তর ও দক্ষিণ পার্শে, শাহ মোহাম্মদের পাড়াসহ সড়কের অসংখ্য স্থান খানা-খন্দে পরিণত হয়েছে।

সিএনজি চালিত ট্যাক্সিচালক সমিতির সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে মুমূর্ষু রোগীকে অনেক সময় কাঁধে বহন করে নিতে হয়। এছাড়া যদিওবা টমটম, সিএনজি করে কেউ যাতায়াত করে থাকে, তাহলে সেও রুগ্ন হয়ে যায় বলে জানান যাত্রী জাকের হোসেন।

ষাট বছর বয়সী এক বৃদ্ধ জানান, দীর্ঘ দেড় যুগ যাবত কালভার্ট-ব্রিজ, পানি নিষ্কাশনে ড্রেইন ইত্যাদি কাজে কোন ধরনের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। তবে অনেকের দাবি, সড়কের পাশের খাল থেকে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে প্রতি বছর বালি উত্তোলনের কারণে নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া-বাইশারীর যাতায়াতের সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে গর্জনীয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জব্বার জানান, সড়কের বিষয় নিয়ে আমি চেয়ারম্যানসহ ইউএনওকে অবগত করেছি। তারা সড়কটি সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন বলে জানান।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানী জানান, বাইশারী থেকে উপজেলা সদরে পৌঁছাতে রামু উপজেলার ৭ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় গাড়ি চলাচলতো দূরের কথা! পায়ে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি গত এক বছর আগে টেন্ডার হয়েছে। সড়কের কিছু অংশ গত এক বছর আগে কার্পেটিং করা হয়েছে। বাকিটা হয়ে যাবে। সড়কের খানা-খন্দকগুলো পরিষদের পক্ষ থেকে মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।

তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, টেন্ডারের বিষয়টি গত এক বছর আগে থেকে শুনে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই স্থানীয় সাংসদ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট