চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভরা মৌসুমে কেন জাটকা!

মোহাম্মদ আলী

২৮ জুলাই, ২০২১ | ১:১১ অপরাহ্ণ

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর গত ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে সাগরে ইলিশ আহরণ শুরু হলেও হতাশ জেলে ও ব্যবসায়ীরা। জেলেদের জালে জাটকা সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। এ কারণে ইলিশের কাক্সিক্ষত মূল্য পাচ্ছেন না তারা। মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানায়, অক্টোবর মাস ইলিশ প্রজননের ভরা মওসুম। এসময় ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখে সরকার। তাছাড়া সারা বছরই ইলিশ কম-বেশি ডিম ছাড়ে। তবে ইলিশ বড় হওয়ার মওসুমের কারণে সরকার পহেলা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির স্বার্থে প্রতিবছর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সকল ধরনের নৌ-যানে সব প্রকারের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকে। এরপরই শুরু হয় সাগরে মৎস্য আহরণ। কিন্তু এ বছর নির্দিষ্ট মেয়াদশেষে সাগরে মৎস্য আহরণ করতে গেলে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে জাটকা ইলিশ। এতে হতাশ ব্যবসায়ী ও জেলে। জানতে চাইলে ফিরিঙ্গীবাজার নতুন ফিশারিঘাটের আড়তদার হাফেজ মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘বর্তমানে ইলিশের ভরা মওসুম চলছে। কিন্তু জেলেদের জালে মিলছে না বড় ইলিশ। ছোট সাইজের ইলিশ, বিশেষ করে ৩শ’ থেকে ৩৫০ গ্রামের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত জেলেদের জালে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ জাটকা ধরা পড়ে। কিন্তু এবার ছোট সাইজের ইলিশ মিলছে বেশি’। এ প্রসঙ্গে সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘অন্যান্য বছর এ সময়ে ইলিশের সাইজ তুলনামূলক বড় ছিল। এবার আহরণের শুরুতে ছোট ইলিশ মিলছে। তবে এ মুহূর্তে এটি সমস্যা বলা যাবে না। আরো কয়েকদিন দেখতে হবে। এরপর প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। ইলিশ নিয়ে এখনো ব্যাপক গবেষণা চলছে। বর্তমান প্রজননকাল যথার্থ কিনা সেটা গবেষণায় আরো দেখতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা কাজ করছে’। তবে জাটকা নিয়ে ভিন্ন কথা বলেছেন – সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতি লিমিডেটের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার। দৈনিক পূর্বকোণকে তিনি বলেন, ‘মৎস্য আহরণ শুরু হলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা গভীর সাগরে যেতে পারছে না। ভাটিয়ারী, কুমিরাসহ বিভিন্ন এলাকার জেলেরা উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি আহরণের কারণে ছোট সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে গভীর সাগরে মাছ আহরণ করতে যাবে জেলেরা। এরপর সাগরে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়বে’।
জেলা মৎস্য অফিসার ফারহানা লাভলী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ইলিশ প্রজননের ভরা মওসুম হচ্ছে অক্টোবর মাস। এ কারণে ওই সময়ে ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকে। তাছাড়া সারাবছরই কমবেশি ইলিশ ডিম ছাড়ে। সরকার পহেলা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির স্বার্থে প্রতিবছর ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সকল ধরনের নৌ-যানে সব প্রকারের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুতরাং বর্তমানে জেলেদের জালে কিছু জাটকা ধরা পড়লেও কয়েকদিন পর এ সমস্যা আর থাকবে না। আশা করি, জেলেদের জালে বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়বে’।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট