চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

লাখ টাকার গরুর চামড়া ১৫০ টাকা

চামড়ার দামে হতাশা সীতাকুণ্ডে

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুণ্ড

২৬ জুলাই, ২০২১ | ৬:১৩ অপরাহ্ণ

সীতাকুণ্ডে পানির দরে বিক্রি হয়েছে কোরবানির গরু-মহিষের চামড়া। লাখ টাকা মূল্যের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০০-১৫০ টাকায়। এতে ক্ষোভ ও হতাশায় চামড়া বিক্রি না করে অনেক মানুষ তা মাটিতে পুঁতে দিয়েছেন। আবার মাদ্রাসা বা এতিমখানায় দান করেছেন হাজারো মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরের মতো এবারো সীতাকুণ্ডে কোরবানির গরু-মহিষ-ছাগলের চামড়ার ন্যায্য মূল্য মেলেনি। কোরবানির দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় চামড়া ফেলে রাখলেও চামড়া ক্রয়ের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের তেমন কোন আগ্রহ দেখা যায়নি। অল্প সংখ্যক পাইকার চামড়া কিনতে এসে লাখ টাকার গরুর চামড়া কিনতে চান মাত্র ১০০-১৫০ টাকায়। এসব কারণে হতাশ কোরবানিদাতারা হাজার হাজার চামড়া বিক্রি না করে  দান করেছেন, আবার অনেকে তা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন।

উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চামড়া নিয়ে এসব হতাশার কথা জানা গেছে। বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ভায়েরখীল গ্রামের বাসিন্দা মারুফুল করিম জানান, তিনি ৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু কিনে কোরবানি দেন। শেষে এটির চামড়া বিক্রি করতে বাজারে নিয়ে গেলে চামড়া ব্যবসায়ী দাম দেন মাত্র ১০০ টাকা। উপায় না দেখে তাতেই বিক্রি করেন তিনি। একই অবস্থা ঐ গ্রামের বাসিন্দা জালাল আহমেদের। তিনি ১ লক্ষ টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ১৫০ টাকায়। এদিকে বাধ্য হয়ে অনেকে নামমাত্র মূল্যে চামড়া বিক্রি করলেও হাজার হাজার মানুষ এমন পানির দরে চামড়া বিক্রি না করে সেসব মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাঁশবাড়িয়া কাজিপাড়ার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার কামরুদ্দোজা বলেন, তিনি কোরবানির জন্য এক লক্ষ ৩৫ হাজার টাকায় মহিষ কিনেছিলেন। কিন্তু সেই মহিষের চামড়ার দাম উঠেছে ১০০ টাকা। তাই চামড়া বিক্রি না করে তিনি তা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন। চামড়া মাটিতে পুঁতেছেন মুরাদপুরের বাসিন্দা আবুল কাসেম। তিনি বলেন, ‘৯৫ হাজার টাকায় গরু কিনেছিলাম। পাইকাররা চামড়ার দাম দিতে চান ১০০ টাকা। আপনিই বলেন, এই দামে কি চামড়া বিক্রি করা উচিত? আমি মাটিতে পুঁতেছি।’ তার মতই এই গ্রামের আরো কমপক্ষে ২০/২৫ জন মানুষ চামড়া পুঁতে ফেলেছেন বলে জানান তিনি। এভাবে উপজেলাজুড়ে চামড়া পুঁতে ফেলেন কয়েক হাজার মানুষ।

সীতাকুণ্ড ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, সব চামড়া ব্যবসায়ী লোকসানের শিকার হননি। আবার সবাই যে চামড়া অল্প মূল্যে বিক্রি করেছেন, তাও না। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা অনভিজ্ঞতার কারণে লোকসানের শিকার হয়েছেন। এজন্য অন্য কেউ দায়ী নয়। এবার কোন দলীয় সিন্ডিকেট ছিলো না। চামড়ার দাম কম থাকায় বেশিরভাগ মানুষ চামড়া মাদ্রাসা বা এতিমখানায় দান করেছেন। আর অল্প কিছু মানুষ চামড়া মাটিতে পুঁতেছেন। তবে এখানে ব্যবসায়ীরা ৮ হাজার কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ করেছেন বলে জানান তিনি।

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট