চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অফডক থেকে সব ধরনের পণ্য খালাসের অনুমতি এনবিআরের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জুলাই, ২০২১ | ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

চলমান কঠোর লকডাউন ও ঈদের ছুটির ফাঁদে পড়ে সৃষ্ট কনটেইনারের চাপ সামলাতে চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা সব ধরনের পণ্যের কনটেইনার বেসরকারি অফডকে সাময়িক সংরক্ষণ, আনস্টাফিং ও খালাসের অনুমতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের প্রেক্ষিতে গতকাল এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস নীতি) মোহাম্মদ মেহরাজ-উল-আলম সম্রাট স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই আদেশ আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বলবৎ রাখার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউস কনটেইনার ধারণক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরে গতকাল রবিবার সকাল পর্যন্ত কনটেইনার ছিল ৪৩ হাজার

৫৭৪ টিইইউস। অন্যদিকে বেসরকারি ১৯টি অফডকের মধ্যে অপারেশনে থাকা ১৭টি অফডকের ৭৮ হাজার ৭শ টিইইউস কনটেইনার ধারণক্ষমতার বিপরীতে রবিবার পর্যন্ত কনটেইনার ছিল ৫৩ হাজার ৮৬৪ টিইইউস। অর্থাৎ এনবিআরের নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে অফডকে খালি থাকা ২৪ হাজার ৮৩৬ টিইইউস কনটেইনারের জায়গায় চট্টগ্রাম বন্দরে জমে থাকা কনটেইনারগুলো স্থানান্তর করতে পারবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ পূর্বে অফডক থেকে শুধুমাত্র ৩৮ ধরণের পণ্য খালাস করা গেলেও এখন সব ধরণের পণ্যের কনটেইনার খালাস করা যাবে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও পূর্বের ন্যায় গতি আসবে।
তবে অফডকেও যাতে অচলাবস্থা সৃষ্টি না হয় সেজন্য বেসরকারি অফডকগুলোতে জমে থাকা রপ্তানি কনটেইনারগুলো দ্রুত জাহাজীকরণের মাধ্যমে অফডকগুলোকে রপ্তানি কনটেইনার ফ্রি করার কথা জানিয়েছেন অফডক পরিচালনাকারী সংগঠন বিকডা।
এ বিষয়ে বিকডা সচিব রুহুল আমিন শিকদার পূর্বকোণকে বলেন, বর্তমানে ১৯টি অফডকে জমে থাকা প্রায় ১৩ হাজার টিইইউস রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের কারণে অফডকগুলোতে যে কন্টেইনার জট রয়েছে তা অতি দ্রুত জাহাজীকরণ করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ অফডকের রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণ করা হলে চট্টগ্রাম বন্দর হতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার অফডকের ইয়ার্ডে স্থানান্তর করতে পারবে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরের কন্টেইনার জট নিরসনে একটি ইতিবাচক সুফল পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, চটগ্রাম বন্দর ও অফডকসমূহের কন্টেইনার ধারণক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে অফডকে আনা কনটেইনার যদি সময়মতো খালাস না নেওয়া হয় তাহলে অফডকগুলোতেও বন্দরের ন্যায় কনটেইনার জট বাধবে। মূলত ২০ থেকে ২২ জুলাই ঈদের ছুটি ও ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের কারণেই চট্টগ্রাম বন্দরে বেড়েছে কনটেইনারের চাপ। লকডাউনে কারখানা বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্তে কোন কারখানার মালিকই তাদের আমদানিকৃত কাঁচামাল বন্দর থেকে খালাস নিচ্ছেন না। অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে পণ্যের খালাস অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। এই দুই কারণে বন্দরে কনটেইনার পণ্যের স্তূপ জমে যায়।
প্রসঙ্গত, ঈদের পরদিন ২২ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্যের কনটেইনার খালাস হয় ১২৮ টিইইউস। পরদিন ২৩ জুলাই ৫৮২ টিইইউস ও ২৪ জুলাই এক হাজারের বেশি কনটেইনার খালাস হয়। যা স্বাভাবিক সময়ে থাকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টিইইউস। ডেলিভারি কমে যাওয়ায় গতকাল রবিবার সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে ছিল ৪৩ হাজার ৫৭৪ টিইইউস কনটেইনার।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট