চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে হজে

মোহাম্মদ আলী

৩ জুলাই, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

আর্থিক সচ্ছলতা, যাতায়াতের
সুবিধা এবং হজ এজেন্সিগুলোর
ব্যাপক তৎপরতায় উদ্বুর্দ্ধ
তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে হজে। গত ১৯ বছরে এ সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ৪০ শতাংশ তরুণ। আর্থিক সচ্ছলতা, যাতায়াতের সুবিধা এবং হজ এজেন্সিগুলোর ব্যাপক তৎপরতা এবং হজের প্রতি আলেম-ওলামাদের উদ্বুদ্ধ করার ফলে তরুণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিগুলোর সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হজ এজেন্সিগুলোর সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে সৌদি আরব যাবেন। এরমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে যাচ্ছেন প্রায় ১২ হাজার।
সূত্র আরো জানায়, বিগত শতাব্দীর ৮০ দশকেও সামুদ্রিক পথে জাহাজে করে হজ করতে যেতো চট্টগ্রামের হাজিরা। এতে জাহাজে সৌদি আরবে আসা-যাওয়ার সময় অতিবাহিত হতো প্রায় দুই মাস। সৌদি আরবে হজের আনুষ্ঠানিকতার জন্য সময় লাগতো আরো এক মাস। সবমিলে ওই সময়ে হজের জন্য প্রায় তিন মাস সময়ের প্রয়োজন হতো। পরবর্তীতে উড়োজাহাজে করে হজে যাওয়ার প্রচলন শুরু হলে তরুণরাও হজের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়ে। তবে ওই সময়ে এ সংখ্যা ছিল অতি নগণ্য। ২০০০ সালের পর থেকে বাড়তে থাকে তরুণের সংখ্যা। প্রতি বছরই তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। চট্টগ্রামে মেয়র হজ কাফেলায় গত ২৬ বছর ধরে কাজ করছেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদুল আলম সুজন। তিনি ওই হজ কাফেলার নির্বাহী পরিচালক। এ কাফেলা নিয়ে তাঁর রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।
এ প্রসঙ্গে তিনি দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘মূলত বিগত ১০ বছর ধরে হজে তরুণদের বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বছর বছর তা ক্রমাগত বাড়ছে। এবার মেয়র হজ কাফেলা থেকে ৩০০ জন হজ করতে যাবেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ তরুণ’। খোরশেদুল আলম সুজন বলেন, ‘মেয়র হজ কাফেলা থেকে এবার সর্বোচ্চ ৭০ বছর বয়সি ব্যক্তিও হজে যাবেন। তবে এ সংখ্যা মাত্র কয়েকজন। মধ্য বয়সি ৪০ বছরের ওপরে এবং ৫০ বছরের মধ্যে লোক রয়েছেন বেশি। আবার ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সি রয়েছেন ৩০ শতাংশেরও বেশি। মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি ও সচেতনতার ফলে তরুণের সংখ্যা তুলনামূলক বাড়ছে’।
মেয়র হজ কাফেলা থেকে এবার হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ২৪ বছরের তরুণ হাফেজ মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান। পেশায় গাড়ি আমদানিকারক। তিনি নগরীর পাহাড়তলি থানার সরাইপাড়া এলাকার বাসিন্দা। দৈনিক পূর্বকোণকে তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে ১৭ বছর বয়সে আমি ওমরা হজ করি। ইনশাল্লাহ এবার মা ও চাচীকে নিয়ে হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি’।
তরুণ বয়সে হজে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হজ করার জন্য আর্থিক সচ্ছলতা ছাড়াও শারীরিক সক্ষমতা থাকা দরকার। তাছাড়া আল্লাহকে যত তাড়াতাড়ি ভয় পাব তত আমাদের ভাল। তাই ওইসব বিবেচনা করে আমি এ বয়সে হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি’।
তরুণদের হজে আগ্রহের ব্যাপারে শাহ আমানত হজ কাফেলার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াছিন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এবার আমাদের হজ কাফেলা থেকে ১৪০০ জন হজে যাবেন। এরমধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ তরুণ। মূলত আর্থিক সচ্ছলতার ফলে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে’।
এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) চট্টগ্রাম জোনের সচিব ও এয়ার চ্যানেল ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মুজিবুল হক শুক্কুর দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে এবার হজে যাচ্ছেন প্রায় ১২ হাজার। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক তরুণ। এমনকি আমার নিজস্ব এজেন্সি এয়ার চ্যানেল ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে এবার ২৫৮ জন হজে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে তরুণ প্রায় ৫০ শতাংশ’।
হজে তরুণের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মুজিবুল হক শুক্কুর বলেন, ‘আর্থিক সচ্ছলতা, সহজভাবে যাতায়াতের সুবিধা, হজ এজেন্সিগুলোর ব্যাপক তৎপরতা এবং হজের প্রতি আলেম-ওলামাদের উদ্বুদ্ধকরণের ফলে তরুণের সংখ্যা বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট