চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করে তিন মাস অপেক্ষায় আছেন ৮৮ হাজার ৫১৪ জন

অপেক্ষমাণ দুই তৃতীয়াংশই পাবেন না চীনা টিকা!

ইমাম হোসাইন রাজু

২২ জুন, ২০২১ | ১:২৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামসহ সারাদেশেই চীনের সিনোফার্মের টিকাদান নতুন করে শুরু হলেও সাধারণ মানুষ এবার টিকা পাবেন কিনা, এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রথম ধাপে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলছে। এরপর নার্সসহ দশ ক্যাটাগরির মানুষদের টিকার আওতায় আনার পরই ধাপে ধাপে অন্যদের টিকা দেয়া শুরু হবে।

সংশয়ের বিষয় হল-চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ টিকা মজুদ রয়েছে, সে হিসেবে টিকাদানের অপেক্ষমাণ ও শর্তানুযায়ী এ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন এক তৃতীয়াংশ মানুষ। অর্থাৎ নিবন্ধন করে অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের দুইভাগ মানুষই বাদ পড়তে পারেন, এমন আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি ধৈর্য ধারণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে সকলকেই টিকার আওতায় আনতে সরকার কাজ করছে।

এদিকে, চট্টগ্রামে সিনোফার্মের টিকাদানের তৃতীয় দিনে আরও ২৫২ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এ নিয়ে তিনদিনে সর্বমোট ৭৪৬ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। শুধু ৭৪৬ জন শিক্ষার্থীই নয়, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমের বাকি সাত দিনে আরও তিন সহা¯্রাধিক মেডিকেল শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এ সংখ্যা পাঁচ হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামে চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ বা সিনোফার্মের ৯১ হাজার ২শ ডোজ টিকা সংরক্ষণ করা আছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়, এসব টিকা প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ সংরক্ষণে থাকা ৯১ হাজার ২শ ডোজ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন ৪৫ হাজার ৬শ মানুষ। যদিও প্রথম পর্যায়ে অগ্রাধিকার পাওয়া পাঁচ হাজার মেডিকেল শিক্ষার্থীকে বাদ দিলে ৪০ হাজারের অধিক মানুষ টিকা গ্রহণ করতে পারবে। তবে তাও দেয়া হবে নির্দেশনা অনুযায়ী দশ ক্যাটাগরির (মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ) মানুষদের।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে করোনার টিকা পেতে গত ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন ৫ লাখ ৪২ হাজার ২৭৪ জন। যাদের মধ্যে প্রথম ডোজের (অ্যাস্ট্রাজেনাকার) টিকা গ্রহণ করেন ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৬ জন। অর্থাৎ টিকা পাওয়ার জন্য এখনও অপেক্ষামাণ আছেন ৮৮ হাজার ৫১৪ জন। তবে নির্দেশনা অনুযায়ী দশ ক্যাটাগরি ও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কেন্দ্রে নিবন্ধনকৃতরা টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন নিবন্ধনকৃতদের দুই তৃতীয়াংশই।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘বর্তমানে যে পরিমাণ টিকা মজুদ রয়েছে তা নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োগ করা হবে। যদিও কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা আসে, তখন সাধারণ মানুষদের মাঝেও টিকা দেয়া শুরু হবে। শুধুমাত্র এখন একটি কেন্দ্রেই এ কার্যক্রম চলবে। মেডিকেল শিক্ষার্থী, নার্সদের দেয়ার পর অন্য ক্যাটাগরি শুরু হবে। আশা করা যায়, আগামী মাসেই হয়তো সাধারণের জন্যও উন্মুক্ত হতে পারে। তবে সেটাও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।’

যারা পাবেন চীনা টিকা :

১. যারা পূর্বে রেজিস্ট্রশন করেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন পাননি। ২. অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্যবৃন্দ। ৩. অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী। ৪. সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীগণ। ৫. সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি, সরকারি ম্যাটস এবং সরকারি আইএইচটি’র শিক্ষার্থীরা। ৬. সরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা। ৭. বিডা’র আওতাধীন ও অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক সরকারি প্রকল্প কর্মকা-ে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ৮. ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ৯. মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ওয়ার্ড/পৌরসভার কর্মী। ১০. বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিক।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট