চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও বন্ধকী রেশনকার্ড ফেরত পেতে ব্যবস্থার দাবি

দু’ মুঠো ভাতের জন্যে রিকশার প্যাডেলে বৃদ্ধ মুজিবর

শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি

২০ জুন, ২০২১ | ৯:৪৭ অপরাহ্ণ

পানছড়ির বয়োঃবৃদ্ধ রিকশাচালক মুজিবরের বয়স প্রায় পঁয়ষট্টি ছুঁই ছুঁই। সারাদিন রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে সরকারি হাসপাতালের প্যারাসিটামল সেবন করেই শরীরের ব্যথা দূর করে নিজেকে সচল রাখার চেষ্টা করেন সবসময়। তারপরও দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে প্যাডেল ঘুরাতে ঘুরাতে সে এখন ক্লান্ত।

দশ বারো বছর আগে প্রচণ্ড পেটের ব্যথার কারণে চট্টগ্রামে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রেশন কার্ডটি বন্ধক দিলেও আজো উদ্ধার করতে পারেননি। অভাবের সংসারে চুলা চাঙা রাখতে নিত্য সকালে প্যাডেল চাপতে চাপতে পানছড়ি বাজারের মুক্তিযোদ্ধা স্কয়ারে এসে রিকশার সিটে দু’পা তুলেই যাত্রীর অপেক্ষায় প্রহর গুনে। মুজিবর যে বয়সের ভারে ক্লান্ত, সেটা দেখলেই অনুমান করা যায়। তার সাথে কথা বললে জানান, তিনি জিয়ানগর গ্রামের তাইজ উদ্দিন ও মোমেনা খাতুনের সন্তান। প্লাস্টিক ও বেড়ায় নির্মিত নড়বড়ে ঘরে তাদের বসবাস। ঘরটি ঝড়ের ছোবলে যেকোন মুহূর্তে উড়ে যেতে পারে। ছেলে জহিরুল পেটের ব্যথায় কোন কাজ করতে পারে না। ছেলের ঔষধের খরচ পর্যন্ত প্যাডেল মেরেই জোগাড় করতে হয়। লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্য মাস্ক ব্যবহার করেই জীবিকার সন্ধানে বের হন সাত-সকালে। কিন্তু বর্তমানে সারাদিন প্যাডেল ঘুরিয়ে সর্বোচ্চ ষাট থেকে সত্তর টাকা রোজগার হয়। মাঝে মাঝে খালি হাতে ঘরে ফিরতে হয়।

হতাশাগ্রস্ত মুজিবর জানান, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর কীভাবে পেতে হয় তা তার জানা নাই। তাই কোন আবেদন-নিবেদন করা হয়নি। তবে বন্ধকী রেশনকার্ডটি কোনরকমে উদ্ধার করতে পারলে অন্তত দু’ মুঠো ভাত ঠিকভাবে খেতে পারতাম। প্রশাসন বা বিভিন্ন বাহিনী একটু নজর দিলে শেষ বয়সে অন্তত প্যাডেল ঘুরানো থেকে মুক্তি পেতাম।

স্থানীয় ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবুল হাশেম হাসু মেম্বার জানান, মুজিবর একবারেই অসহায়। রিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। প্রয়োজনে উপোস থাকবে কিন্তু কারো কাছে হাত পাতার অভ্যাস নেই। তার ঘরটিও নড়বড়ে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পাওয়ার দাবি রাখে সে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট