চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চট্টগ্রামে কোরবানির পশু: সিংহভাগ চাহিদা মিটবে স্থানীয়ভাবে

ইফতেখারুল ইসলাম 

১৪ জুন, ২০২১ | ১২:৫২ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে কোরবানির চাহিদার অধিকাংশ পশু স্থানীয়ভাবে মজুদ আছে। এবার চট্টগ্রামে কোরবানিতে পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৯ হাজার। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ও খামারে কোরবানিযোগ্য পশু উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩৪টি। প্রায় অর্ধলক্ষ পশুর ঘাটতি রয়েছে। তবে সামান্য ঘাটতি থাকলেও গত ছয় বছরে চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। খামারে গরু-মহিষ মোটাতাজাকরণ নতুন প্রজন্মের আগ্রহ এবং নতুন উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের ফলে উৎপাদন প্রতিবছর বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ায় কয়েক বছর ধরে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পশু দিয়েই চট্টগ্রামের কোরবানি পশুর চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করা হচ্ছে। একাধিক খামারির সাথে আলাপকালে তারা জানান, এবার গরুর দাম বেশি। মহিষের দাম আরো বেশি। বেশি দাম পেয়েও তারা পোষাতে পারছেন না। কারণ গবাদি পশু লালন-পালন অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে গেছে।

গো-খাদ্যের দাম ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ করে সরকার দেশের খামারিদের সুযোগ করে দিয়েছে। তবে গো-খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে খামারিরা কিছুটা লাভবান হতে পারতো। বোয়ালখালীর শরীফ পাড়া ফাতেহা এগ্রোর পার্টনার ওমর কাইয়ুম পারভেজ পূর্বকোণকে বলেন, তারা এবার প্রায় ৩০টি কোরবানির পশু মোটাতাজা করেছেন। কোরবানির হাটকে লক্ষ্য রেখে কয়েকমাস আগে থেকে গরু কিনে মোটাতাজাকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের খামারে ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা দামের গরুও আছে। তবে এবার গরুর দাম তুলনামূলক বেশি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছরই স্থানীয়ভাবে পশু পালনের সংখ্যা বাড়ছে। ছয় বছরে দ্বিগুণেরও বেশি পশু উৎপাদন হয়েছে। ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে ৩ লাখ ২০ হাজার গবাদি পশু উৎপাদন হয়। ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ১১৯, ২০১৭ সালে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ১৬৩, ২০১৮ সালে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৪টি এবং ২০১৯ সালে ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি গবাদি পশু উৎপাদিত হয়েছে। ২০২০ সালে  ৬ লাখ ৮৯ হাজার এবং চলতি বছর ২০২১ সালে উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার পশু। ছয় বছরে চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১৩৫ শতাংশ।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রেয়াজুল হক পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রামে এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮ লাখ ৯ হাজার। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ও খামারে কোরবানিযোগ্য পশু উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩৪টি। প্রায় অর্ধলক্ষ পশুর ঘাটতি রয়েছে। তবে করোনার কারণে সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা ভাল না। যে কারণে চাহিদার পরিমাণ আরো কমতেও পারে। তাছাড়া যেটুকু ঘাটতি থাকবে তা অন্য জেলা থেকে বেপারিরা নিয়ে আসবে। তাই এবার এখানে কোরবানির পশুর কোন সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট