চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সমাবেশ

কালুরঘাটে নতুন সেতু চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ জুলাই, ২০১৯ | ২:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী রিভার অথরিটি গঠন
ও বাস্তবায়নের দাবি
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের সুফল পেতে নতুন একটি ব্র্রিজ নির্মাণ জরুরি

কালুরঘাটে নতুন একটি সেতু নির্মাণ এবং কর্ণফুলী রিভার অথরিটি গঠন ও বাস্তবায়নের দাবিতে নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করার দাবি অনেক বছর আগে থেকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। নতুন কালুরঘাট সেতু কখন আলোর মুখ দেখবে? চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের সুফল পেতে হলে কালুরঘাটে নতুন একটি ব্র্রিজ নির্মাণ জরুরি। কালুরঘাটে নতুন একটি সেতু হলে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম আলোকিত হবে। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সমাবেশে তারা একথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক। প্রধান বক্তা ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক ও প্রকাশক জসিম উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী। ভানুরঞ্জন চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সেক্রেটারি চৌধুরী ফরিদ, কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম-আহবায়ক মুস্তফা নঈম, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইন্দুনন্দন দত্ত, চান্দগাঁও মহল্লা ফেডারেশনের সভাপতি সরোয়ার আলম চৌধুরী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক ও প্রকাশক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন- কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত কালুরঘাট সেতুটি বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারের লাখ লাখ মানুষের আসা-যাওয়া হয় এই সেতুর উপর দিয়ে। বিপজ্জনক সেতু দিয়ে রেলের পাশাপাশি পরিবহন যাতায়াত করছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। দীর্ঘদিন থেকে নতুন একটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে আসছে সরকার। সেতু নির্মানের জন্য বৈদেশিক অর্থায়নও নিশ্চিত হয়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দিন খান বাদল বিষয়টি সংসদেও উত্থাপন করেছেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। কিন্তু কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর সড়ক কাম রেলসেতু নির্মাণ এখন চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। কারণ কর্ণফুলী নদী না থাকলে অন্যান্য সহায়ক নদীগুলো শুকিয়ে যাবে, নাব্যতা হারিয়ে যাবে। কর্ণফুলী নদীর শাসন, প্রবাহমান এলাকা রক্ষা, সংরক্ষণ, প্রতিবছর খননকাজ পরিচালনা এবং দূষণমুক্ত করাসহ কর্ণফুলীকে রক্ষায় কর্ণফুলী রিভার অথরিটি করা এখন সময়ের দাবি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করার দাবি অনেক বছর আগে থেকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাই তিনি প্রশ্ন রাখেন- নতুন কালুরঘাট সেতু কখন আলোর মুখ দেখবে? চট্টগ্রামের যেকোনো উন্নয়ন কর্মকা-ের খবর তুলে ধরার ক্ষেত্রে দৈনিক পূর্বকোণ অতীতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক বলেন- কালুরঘাট সেতুটি ১৯৩০ সালে নির্মিত। ৯০ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ একটি সেতু। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের সুফল পেতে হলে কালুরঘাটে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণ জরুরি। কালুরঘাটে নতুন একটি সেতু হলে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম আলোকিত হবে। পলিথিন কর্ণফুলীকে ভরাট করে দিচ্ছে উল্লেখ করে বলেন- কর্ণফুলীর নিচে চার ফুট পলিথিনের স্তর তৈরি হয়েছে। পলিথিন শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট বিক্রেতাদের ধরে সমস্যার সমাধান হবে না, পলিথিন কারখানাগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দিন খান বাদলের সংসদে দেওয়া বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, অতীতে কোনো মন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্য নিজের এলাকার উন্নয়নের জন্য এভাবে উচ্চকন্ঠে কথা বলেননি। বর্তমান আমলেই কালুরঘাট সেতু না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়ে মাঈনুদ্দিন খান বাদল সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন- চট্টগ্রাম হচ্ছে গেটওয়ে অব ইকোনমি। চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে পুরো দেশের উন্নয়ন। কর্ণফুলী নদী আছে বলেই চট্টগ্রাম বন্দর বেঁচে আছে। কর্ণফুলীতে দিন দিন পলি জমছে। এতোদিন মামলা জটিলতার জন্য ড্রেজিং করা হয়নি। এখন ড্রেজিং শুরু হলেও পলিথিনের জন্য খননকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই সেতুটা খুবই প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন- বিগত চার বছর আগে এই সেতু নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছিলাম। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে কালুরঘাট সেতুর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশদভাবে বলেছি। এই একটি সেতু দক্ষিণ চট্টগ্রামের চেহারা পাল্টে দেবে। বোয়ালখালীসহ কক্সবাজার পর্যন্ত যোগাযোগে নতুন মাত্রা যোগ করবে। এই সেতু না হলে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের সুফল পাওয়া যাবে না।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট