চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আড়াই মাস পর রুমা আক্তারের লাশ কবর থেকে উত্তোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী

২ জুলাই, ২০১৯ | ২:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালী উপজেলার গ-ামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা গ্রামের মাদ্রাসা পড়–য়া ছাত্রী রুমা আক্তারের (১৬) লাশ গতকাল (সোমবার) সকাল ১০ টার দিকে ২ মাস ২২ দিন পর পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নিহতের পিতা নুরুল আমিনের দায়ের করা মামলায় গত ১৩ জুন সিআইডির উপ-পরিদর্শক আনিছুর রহমান তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতে কবর থেকে এ লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করেন।
গতকাল লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আল বশিরুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক মো. আনিছুর রহমান, ইউপি সদস্য আলী হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, বাঁশখালী থানার এস.আই রুবেল আফরাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ, মামলার বাদিসহ স্থানীয় জনগণ।
ঘটনাস্থল থেকে লাশ উত্তোলনের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়দা তদন্ত ও ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে গতকাল সন্ধ্যায় পূর্ব বড়ঘোনায় পারিবারিক কবরে পুনরায় লাশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মামলার বাদির নালিশি দরখাস্ত সূত্রে জানা যায়, গ-ামারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব বড়ঘোনা গ্রামের নুরুল আমিনের কন্যা রুমা আক্তারের সাথে একই এলাকার (১নং আসামি) তৌহিদুল ইসলাম বিবাহ করার প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে মেলামেশা করে। এতে রুমা আকতার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। মৃত্যুর ৩ দিন পূর্বে ৮ এপ্রিল রাত ১০ টা থেকে ৯ এপ্রিল ভোর সকাল পর্যন্ত রুমা আক্তারকে বিভিন্ন কৌশলে ঘর থেকে বের করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পাশ্বর্বর্তী বাড়ির পুকুর পাড়ে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। লাশটি জিনে মেরেছে প্রচার করে আসামিপক্ষের লোকজন দাফনের জন্য উৎসাহিত করে। কয়েকদিন পর মূল ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আদালতে নালিশি দরখাস্ত করা হয়।
মামলার বাদি নুরুল আমিন বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩০২/৩৪ দ-বিধিতে নালিশি দরখাস্তে তৌহিদুল ইসলাম (৩০), আক্তার হোসেন (৪৫), নজরুল ইসলাম (৩২), ফৌজুল কবির (৩৮), রুজিনা আক্তার (২৮), ইয়াছমিন আক্তার (৩৩), খতিজা বেগম (৪২) এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো আসামি দেখিয়ে ৬ জন সাক্ষীর নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে বাঁশখালীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুল ইসলামের আদালত মামলাটি সিআইডি কে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা সি.আইডি’র উপ-পরিদর্শক আনিছুর রহমান বলেন, মামলা তদন্তকালীন সময়ে বাদি ও বিবাদি, এলাকার লোকজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত কামাল উদ্দিন বলেন, গ-ামারার পূর্ব বড়ঘোনা থেকে রুমা আক্তারের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাঁশখালী থানা পুলিশ এ সময় সার্বিক সহযোগিতা করেছে। আদালতের নির্দেশে এই লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষায় মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটিত হবে বলে আশা করছি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট