চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আদালতে হেলপারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

মা-বাবা তোলে গালি দেয়ায় ক্ষোভে চালক রকিবুলকে খুন

নাজিম মুহাম্মদ

২ জুলাই, ২০১৯ | ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ

মা-বাবা তোলে গালি দেয়ায় রাগ ও ক্ষোভে কাভার্ডভ্যান চালক রকিবুল হাসানকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় রশি প্যাঁচিয়ে হত্যা করে হেলপার মাকসুদুল (১৮)। ঘটনার ছয়দিনের মাথায় মাকসুদুলকে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। গত ২৫ জুন সকালে নগরীর চান্দগাঁও থানার শরাফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্প এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ভেতর থেকে চালক রকিবুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নগর পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার বিজয় বসাক জানান, রকিবুল চালক হলেও কখনো নিজে গাড়ি চালাতো না। চালকের আসনের পেছনে সিটে কখনো ঘুমাতো আবার কখনো বিশ্রামে থাকতো। হেলপার মাকসুদুল প্রায় সময় গাড়ি চালাতো। মা-বাবা তোলে গালি দেয়ায় রাগ ও ক্ষোভের বসে চালক রকিবুলকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেছে। হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে গতকাল সোমবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মাকসুদুলকে রবিবার মধ্যরাতে মাইনী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের মাকসুদুল জানায়, তার বাড়ি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ছোট মেরুং এলাকায়। বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম। কয়েকবছর ধরে কাভার্ডভ্যানে হেলপারের চাকুরি করছে। ইতিমধ্যে গাড়ি চালানো শিখেছে। রকিবুল কাভার্ডভ্যানটির চালক হলেও প্রায় সময় চালকের সিটের পেছনের সিটে ঘুমাতো অথবা বিশ্রামে থাকতো। ২৪ জুন রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটার সময় কালুরঘাট পেপসি পয়েন্টের উদ্দেশ্যে কাজীর দেউড়ি থেকে রওনা দেয় মাকসুদুল। ঐ সময় চালকের পেছনে সিটে রকিবুল যথারীতি ঘুমাচ্ছিলো। রাতে পথ ভুল করে গাড়িটি গরীবুল্লাহ শাহ মাজারের দিকে ঢুকিয়ে দিলে রকিবুল ঘুম থেকে উঠে গালিগালাজ করে। গাড়ি ঘুরিয়ে জিইসি’র মোড়ে আসলে গাড়ি থেকে নেমে প্রস্রাব করে রকিবুল আবার গাড়িতে উঠে ঘুমিয়ে পড়ে। ফ্লাইওভারে উঠে গাড়ি নিয়ে সে কালুরঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বহদ্দারহাট এলাকায় ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় রাস্তায় গাড়ি ঝাঁকুনি খেলে রকিবুলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এতে প্রচ- রেগে গিয়ে মাসকুদুলকে মারধোর করে এবং মা-বাবা তোলে গালিগালাজ করে পানি খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ে রকিবুল।
হত্যা প্রসঙ্গে মাকুসুদুল জানায়, মা-বাবা তোলে গালিগালাজ করার পর থেকে তার রাগ ধরে। স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের সামনে গাড়ি থামিয়ে রকিবুলকে হত্যার বিষয়টি চিন্তা করে। এক পর্যায়ে গাড়িতে থাকা কাপড় শুকানোর রশি দিয়ে ঘুমন্ত রকিবুলের গলায় পেঁচিয়ে টান মারে। সাথে সাথে রকিবুল সিট থেকে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর রকিবুলের সাড়া-শব্দ বন্ধ হয়ে গেলে গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায় মাকুসুদুল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট