চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে ৫০% ডিসকাউন্টে হজ হেলথ প্যাকেজ সেবা’

৩০ জুন, ২০১৯ | ১:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে পবিত্র হজ যাত্রীদের হজ পূর্ব প্রাথমিক চিকিৎসা ও করণীয় উপলক্ষে খুলশীস্থ ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল এর কনফারেন্স রুমে গতকাল সকাল ১১ টায় ‘হজ ঃ সুস্থতা-ডায়াবেটিস ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনার উদ্বোধন করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, পবিত্র হজ মুসলমানদের পঞ্চম স্তম্ভের একটি। একজন সুস্থ মানুষের জন্য হজ বাধ্যতামূলক। বছরে ২ লাখের বেশী মানুষ হজ পালন করে। এদের মধ্যে ২০-৩০% যাত্রীর ডায়াবেটিস থাকে। ডায়াবেটিক রোগী এবং তাঁর সহযাত্রীর জন্য এটা একটা সত্যিকার অর্থে চ্যালেঞ্জ। তবে হজে যাবার আগে একটা ভালো পরিকল্পনা এবং যাত্রার পূর্ববর্তী কিছু শিক্ষা, কিছু উপদেশ যদি আমরা আমাদের মেডিকেল টিম ও মোয়াল্লামের সাথে করতে পারি তাহলে হজ আমরা সুস্থ দেহে করে আসতে পারবো ইনশাল্লাহ।
সেমিনারে স্পীকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. শেখ শিরিন আফরোজ এবং হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি।
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. শেখ শিরিন আফরোজ বলেন, সুস্থ শরীর এবং সুস্থ মন হজ পালনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা সাহায্য করবে শারীরিকভাবে এবং মানসিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যেখানে যাচ্ছে সেই জায়গাটা মানচিত্রগতভাবে আবহাওয়া, খাদ্য, অভ্যাস এবং ভাষাগত দিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিছু রোগ হাজীদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে, যেমনঃ ফুসফুসের ইনফেকশন, প্রস্রাবের ইনফেকশন, ডিসেন্ট্রি, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে যাওয়া, পানিশূন্যতা, সমস্ত শরীরে ব্যথা এবং ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া ও কমে যাওয়া। ডায়াবেটিক রোগীদের অবশ্যই গ্লুকোমিটার (ডায়াবেটিক মাপার যন্ত্র) সাথে রাখতে হবে এবং সহজ উপায়ে ইনসুলিন দেয়ার জন্য পেনফিল ইনসুলিন সাথে রাখতে হবে। যাদের দুপুরে ডোজ দিতে হবে তারা ছোট ফ্লাষ্কে ইনসুলিন বহন করবেন যাতে ঠান্ডা থাকে এবং গ্লুকোমিটার দ্বারা পরীক্ষা করে ইনসুলিন/ট্যাবলেট এর ডোজ বাড়াতে/কমাতে হবে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অবশ্যই সাথে রাখতে হবে।
হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি বলেন, ডায়াবেটিক রোগী দিনে ৫-৬ বার খাবার খাবেন। হাঁটা বেশী হলে সাথে খেজুর রাখবেন। কখনো যদি খাদ্য তালিকা থেকে ১টি রুটি/ভাত কম খাওয়া হয় ঐদিন ৩টা খেজুর খাওয়া যাবে। এমনিতে ডায়াবেটিক রোগী দিনে ৩-৪টা খেজুর খেতে পারে। সাথে অবশ্যই পানি রাখতে হবে। ডায়াবেটিক রোগী এবং তাদের সাথে যিনি মোয়াল্লেম আছেন অথবা সাথের লোক যিনি আছেন সবাইকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া ম্যানেজমেন্ট জানতে হবে। যখন ব্লাড সুগার ৩.৫ সসড়ষ/খ (৬৩ সম/ফষ) নেমে আসে তখন তাকে আমরা হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলি। যদি কারো হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় তখন কিছু লক্ষণ দেখা দিবে। যেমন, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, বেশি বেশি ক্ষুধা লাগা, কিছু বুঝতে না পারা, মাথা ঘোরা, ঝিমুনি লাগা, মনোযোগ দিতে না পারা, বিরক্ত বোধ হওয়া, বমি বমি বোধ হওয়া, মাথা ব্যথা, দুর্বল লাগা ইত্যাদি। যদি মুখে খেতে পারে তাহলে মুখে চিনি, গ্লুকোজ, বিষ্কুট, মধু, জমজম পানি ইত্যাদি দিতে হবে। আর যদি কেউ মুখে কিছু খেতে না পারে তাহলে তাকে অতি দ্রুত কাছের কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীকে অবশ্যই ডায়েট চার্ট মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। অবশ্যই ব্যাগে চকলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার রাখবেন পাশাপাশি বই দেখে বিকল্প খাবার সম্পর্কে ধারণা রাখবেন যাতে ভৌগোলিক কারণে দেশীয় খাবার সহজলভ্য না হলে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারেন।-বিজ্ঞপ্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট